৪ বোন চুরি করেই পালাত অন্য জেলায়

আগের সংবাদ

সফরে প্রাপ্তির পাল্লাই ভারী

পরের সংবাদ

মালদ্বীপকে হারিয়ে সাবিনাদের শুভ সূচনা সেমিফাইনালে বাংলাদেশের যুবারা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নেপালের কাঠমন্ডুতে গতকাল নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শুভ সূচনা করেছে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। ‘এ’ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েরা ৩-০ গোলে মালদ্বীপের মেয়েদের হারিয়েছে। জোড়া গোল করেছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। অন্য গোলটি করেন মাসুরা পারভীন। তিনটি গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে। এর আগে ‘এ’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়েছে ভারত।
মালদ্বীপকে হারিয়ে সবার আগে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। গতকাল শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় ৫-০ গোলে জয় তুলে নিয়েছে পল স্মলির শিষ্যরা। ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন মিরাজুল ইসলাম। একটি করে গোল করেছেন নাজমুল হুদা ফয়সাল ও মুর্শেদ আলী। এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে ৫-১ গোলে হারায় বাংলাদেশের কিশোররা। এ নিয়ে টানা দুই জয়ে গ্রুপ ‘এ’ এর চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ উঠল তারা। সেমিতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হবে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ দল। সেখানে লড়ছে ভারত, ভুটান ও নেপাল।
গতকাল সন্ধ্যায় নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের মেয়েদের কাছে পাত্তাই পায়নি মালদ্বীপের মেয়েরা। শুরু থেকে আক্রমণ, গোলের সুযোগ। তবে কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩২ মিনিট পর্যন্ত। এ সময় বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়ে গোল করেন সাবিনা খাতুন। দুই মিনিট পর আবার গোল। এবার গোলদাতা মাসুরা পারভীন। অধিনায়ক সাবিনা খাতুন নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ৪০ মিনিটে।
প্রথমার্ধে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর মনে হয়েছিল ছেলেদের মতো মেয়েরাও বড় ব্যবধানের জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা দ্বিতীয়ার্ধে কোনো গোলই বের করতে পারেনি।
সানজিদার পরিবর্তে শামসুন্নাহার জুনয়িরকে এবং স্বপ্নার জায়গায় তহুরা খাতুনকে মাঠে নামিয়ে আক্রমণ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছিলেন কোচ। তাতে আক্রমণ বেড়েছে, গোলের সুযোগ এসেছে। কিন্তু গোল আসেনি।
সাবিনা খাতুন হ্যাটট্রিক করার আপ্রাণ চেষ্টা করেও পারেননি। একবার বল জালে পাঠিয়ে হ্যাটট্রিকের উল্লাস প্রকাশ করেছিলেন সাবিনা। কিন্তু সহকারী রেফারি অফসাইডের পতাকা তুললে গোলবঞ্চিত হন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে এর আগের সাক্ষাতে মালদ্বীপের জালে অর্ধডজন গোল দিয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত ওই সাফের সেমিফাইনালের পর এই প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল দুই দেশ। জয়ের ব্যবধান বাড়েনি, উল্টো কমেছে। গতকাল ৬১তম মিনিটে পোস্টের বাইরে শট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ নষ্ট করেন সাবিনা। পরের সময়টুকুতে মরিয়া আক্রমণ করে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। তাতে অবশ্য সাবিনাদের জয়ের আনন্দে ভাটা পড়েনি একটুও। সব মিলিয়ে মালদ্বীপের বিপক্ষে একচ্ছত্র আধিপত্য ধরে রাখল বাংলাদেশ। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ও এসএ গেমস মিলিয়ে তাদের বিপক্ষে খেলা চার ম্যাচের সবগুলোতেই জয়ী ‘লাল-সুবজ’ জার্সিধারীরা। আগের তিন ম্যাচে ২০১৪ সালে ইসলামাবাদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জয়টি ছিল ৩-১ গোলের। ২০১৬ এসএ গেমসের জয় ২-০ ব্যবধানের। ২০১৭ সালের সাফে ৬-০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। মালদ্বীপের বিপক্ষে জয়ের ফলে ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ ও ভারত পয়েন্ট টেবিলে যৌথভাবে শীর্ষে।
কলম্বোয় অনুষ্ঠানরত সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টে গতকাল মালদ্বীপের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছেন মিরাজুল। বাংলাদেশের ৫-০ গোলের বিশাল জয়ে শেষ ৩টি গোল এই স্ট্রাইকারের। প্রথম গোলেও সে অবদান রেখেছে।
শ্রীলঙ্কাকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্ট শুরু করা বাংলাদেশ টানা দ্বিতীয় জয়ে ‘ক’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে। ১২ সেপ্টেম্বর সেমিফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ গ্রুপ ‘বি’ এর সম্ভাব্য রানার্সআপ নেপাল। এই গ্রুপ থেকে প্রথম ম্যাচে ভারত ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল ভুটানকে।
গতকাল পঞ্চম মিনিটেই গোল পেয়ে যায় বাংলাদেশ। মালদ্বীপের এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে পড়ে মিরাজুল। গোলমুখে তার ঠেলে দেয়া বল সহজেই জালে পাঠায় নাজমুল হুদা (ফয়সাল)। ৩৮ মিনিটে বক্সে ঢুকে কাছের পোস্ট দিয়ে গড়ানো শটে বল পাঠায় জালে মোর্শেদ আলী।
৭৫ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে মালদ্বীপের গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে আড়াআড়ি শটে নিজের প্রথম ও দলের তৃতীয় গোলটা করেছে মিরাজুল। দুই মিনিট পরই কোনাকুনি শটে ৪-০ করেছে এই স্ট্রাইকার। ৯০তম মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে গড়ানো শটে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে মিরাজুল।
মাঠে গোল করায় যতটা সাবলীল মিরাজুল, কথায় ততটা নয়। সেটা বোঝা গেল ম্যাচ শেষে তার প্রতিক্রিয়ায়। দোভাষীর সাহায্য নিয়ে মিরাজুল বলেছে, ‘হ্যাটট্রিক করে ভালো লাগছে। গোল পাইছি। সবাই যদি বলে ভালো করেছি, তাহলে ভালো করেছি। সবাই সাহায্য করেছে আমাকে। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।’
ম্য্যাচটা ভুলে যেতে চাইবে মালদ্বীপের গোলকিপার আবদুল্লাহ রাজেফ। কোনো প্রতিরোধই সে গড়তে পারেনি। বারের নিচে ছিল নড়বড়ে। অন্যদিকে ৪-০ হওয়ার পর বাংলাদেশ গোলকিপার আসিফকে বদলে দ্বিতীয় গোলকিপারকে সুযোগ দিয়েছে। বাংলাদেশ হেসেখেলেই ৬০ শতাংশ বলের দখল রেখেছে এই ম্যাচে। সর্বশেষ ফিফা প্রীতি ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরেছিলেন জামাল ভূঁইয়ারা। কিন্তু দুই দেশের যুব দলের লড়াইয়ের ছবিটা ভিন্ন। গতকাল আবারো সেটাই দেখাল মিরাজুলরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়