৪ বোন চুরি করেই পালাত অন্য জেলায়

আগের সংবাদ

সফরে প্রাপ্তির পাল্লাই ভারী

পরের সংবাদ

বড়দিয়া-মহাজন ফেরিঘাট চালু হয়নি এক বছরেও

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : কালিয়ার এককালের বাণিজ্যিক বন্দর খ্যাত নবগঙ্গা নদীর বড়দিয়া-মহাজন খেয়াঘাটটি ফেরিঘাটে রূপান্তরে স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলেও নৌকায় পারপারের ব্যবস্থা থেকে মুক্ত হতে পারেননি তারা। ফেরিঘাটটি স্থাপনের পর গত এক বছর আগে দুটি ফেরি সেখানে আনা হলেও চালু হয়নি। দুই পাড়ের পন্টুন ও সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ ফেরিঘাটটি চালু হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। কর্তৃপক্ষ বলছে, জনবল সংকটের কারণে ফেরি দুটি চালু করা যাচ্ছে না।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঘাটের পশ্চিম তীরে মহাজন বাজারসহ নড়াইল জেলা সদর ও লোহাগড়া উপজেলা এবং পূর্ব তীরে বড়দিয়া বাজারসহ নড়াগাতী থানা ও কালিয়া উপজেলা সদর। সাবেক এই বাণিজ্যিক বন্দরে রয়েছে একটি নৌ পুলিশ ফাঁড়ি। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় টিনের বাজার হিসেবে খ্যাতি রয়েছে মহাজন বাজারের। অন্তত ২০ কিলোমিটারের মধ্যে বড়দিয়া ও মহাজন বাজার দুটির বেশ খ্যাতি রয়েছে। বাজারে রয়েছে কয়েকটি ব্যাংক ও এনজিওর কার্যালয়। বড়দিয়ায় রয়েছে উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় খাদ্যগুদাম। এর আশপাশ ঘিরে রয়েছে মুন্সী মানিক মিয়া ডিগ্রি কলেজ, বড়দিয়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়, ফজিলাতুন নেছা মুজিব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহাজন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও টোনা ইসলামিয়া মাদ্রাসাসহ ছোটবড় অন্তত ১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত কয়েক বছরে নবগঙ্গার ভাঙনে বাজার দুটির একটি বড় অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
জনগুরুত্ব বিবেচনা করে ও স্থানীয়দের দাবি পূরণ করতে বড়দিয়া বাজারের দক্ষিণ পাশে ও মহাজন খেয়াঘাটের উত্তর পাশে নির্মিত হয়েছে একটি ফেরিঘাট। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে সচল এই ফেরি দুটি ঘাটেই বাঁধা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তা চালু হচ্ছে না বলে তারা অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় মাউলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রোজী হক বলেছেন, নবগঙ্গা ও মধুমতী নদী তীরবর্তী বাজার দুটি প্রাচীনকাল থেকেই প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। বড়দিয়া বাণিজ্যিক বন্দর হওয়ার কারণে আশপাশের জেলাগুলো থেকে এখানে বড় বড় ব্যবসায়ী মালামাল কিনতে আসতেন। ব্যবসা ও জনগুরুত্ব হিসেবে অনেক আগেই এখানে সেতু হওয়া কথা থাকলেও তা হয়নি। যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে ব্যবসা কেন্দ্রগুলো যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমন, জরুরি প্রয়োজনে মুমুর্ষূ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা খুলনা নিতে হলে ৩০/৩৫ কিলোমিটার ঘুরে চাপাইল সেতু ও বারইপাড়া ফেরিঘাট পার হয়ে যেতে হয়। প্রশাসনের গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রেও পড়তে হচ্ছে সমস্যায়। তিনি দ্রুত ফেরি দুটি চালুর দাবি করেছেন।
মহাজন বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ খান বলেছেন, প্রসিদ্ধ এ টিনের বাজারে বহু দূর থেকে মানুষ টিন কিনতে আসেন। কিন্তু পরিবহন সমস্যার কারণে ক্রেতা-বিক্রেতাকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই ফেরিঘাটটি চালু হচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
বড়দিয়া বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জগদীশ চন্দ্র সরকার বলেন, ফেরি চালু না হওয়ায় পণ্য পরিবহনের জন্য কাভার্ডভ্যান, ট্রাক, পিকআপ, ট্রলি, ভ্যান, নছিমন চলতে পারছে না। খেয়া নৌকায় পণ্য পারাপারের জন্য কুলি দিয়ে পণ্য ওঠা নামানোয় ভোগান্তিসহ খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া নদী ভাঙনের কারণে খেয়াঘাটের দুই পাড়ই অসমতল হওয়ায় পণ্য নিয়ে ওঠানামাও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ফেরি চালুর দাবি করেছেন তিনি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ নড়াইলের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ এম আতিকুল্লাহ বলেছেন, ফেরি দুটি এক বছর আগে এই ঘাটে আনা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু লোকবল সংকটের কারণে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। সমস্যার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়