৪ বোন চুরি করেই পালাত অন্য জেলায়

আগের সংবাদ

সফরে প্রাপ্তির পাল্লাই ভারী

পরের সংবাদ

গুরুদাসপুরে ভাগাভাগির দ্ব›েদ্ব নিয়োগ বাণিজ্য ফাঁস

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি : গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের পুরুলিয়া আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪ পদে কর্মচারী নিয়োগে ৪২ লাখ টাকার বাণিজ্য হয়েছে। টাকা ভাগাভাগির দ্ব›েদ্ব বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য। ম্যানেজিং কমিটির ৬ সদস্যের একযোগে পদত্যাগের কারণ অনুসন্ধানে গিয়ে ৪২ লাখ টাকা ভাগাভাগির তথ্য বের হয়ে আছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ৩য় ও চতুর্থ শ্রেণির ৪টি পদে নিয়োগ বাণিজ্যের ৪২ লাখ টাকা রাজনৈতিক নেতা, প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান ভাগ করে নেন। স্কুলের উন্নয়ন ফান্ডে টাকা জমা না দেয়া ও ভাগে কম-বেশি হওয়ার কারণে এই তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়।
সরজমিন গিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলে জানা যায় ঘটনার মূল রহস্য। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি রোস্তম আলী বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ তো এখন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিষদ দিতে পারে না। রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই দিতে হয়। তিনি আরো বলেন, টাকা নেয়া হয়নি, তবে প্রার্থী ভাগাভাগি করে নেয়া হয়েছে। আমি পরিচ্ছন্নকর্মীটা নিয়োগ দিয়েছি। কম্পিউটার ল্যাব সহকারী হলো নাজিরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবুর আত্মীয়। নৈশপ্রহরী নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাখাওয়াত মোল্লার সুপারিশে দেয়া হয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীর টাকা প্রধান শিক্ষক আগেই নিয়ে রেখেছিলেন বলে বলে জানান তিনি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি নুরে আলম বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কীভাবে নিয়োগ হয় বিষয়টি সবারই জানা। তবে প্রতিটি নিয়োগেই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ফান্ডে কিছু ডোনেট করে থাকে কিন্তু আমাদের প্রতিষ্ঠানে সেটা করা হয়নি বলে আমরা পদত্যাগ করেছি। নাজিরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু মুঠোফোনে বলেন, আমি পুরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কেউ না। আমার নিয়োগ দেয়ার প্রশ্নই আসে না।
পুরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জার্জিস হোসেন টাকা নিয়ে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সভাপতি, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও নিয়োগ বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাকে জানিয়েছেন, আমি বিধি মোতাবেক নিয়োগ দিয়েছি। এর বাইরে আমি কিছু জানি না। ম্যানেজিং কমিটির ৬ জন সদস্য পদত্যাগ করেছেন বলে তিনি স্বীকার করেছেন। তবে সভাপতি যে কথা বলেছেন তা সত্য নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক অভিযোগ তুলে জানান, এই নিয়োগের আগেই ঠিক করে রাখা প্রার্থীদের কাছ থেকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শওকত রানা লাবু ১২ লাখ, নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাখাওয়াত মোল্লা ১০ লাখ, নজরুল ইসলাম (মিনি নজরুল) দুই লাখ টাকা নিয়েছে। বাকি টাকা সভাপতি আত্মসাৎ করেছেন বলে তারা জানান।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুনের নিয়োগ বোর্ড কর্তৃক নিয়োগ পেয়ে ২৬ জুন অত্র বিদ্যালয়ে ল্যাব সহকারী পদে মো. আব্দুল্লাহ, নিরাপত্তাকর্মী মো. সাগর, নৈশপ্রহরী আজিজুল হক ও পরিচ্ছন্নকর্মী পদে জুয়েল রানা যোগ পেয়েছেন। গত ২৯ আগস্ট শিক্ষক প্রতিনিধি, ছাত্র অভিভাবকসহ মোট ৬ জন গভার্নিং বডি থেকে একযোগে পদত্যাগ করেন। নিয়োগপ্রাপ্ত চার জন কর্মচারী টাকা দিয়ে নিয়োগ নেয়ার বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়