মা-বাবার অভিযোগ : মেয়ে ও জামাই বাড়ি দখল করতে মরিয়া

আগের সংবাদ

প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল : প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর

পরের সংবাদ

এক শিক্ষার্থীর ছাত্রত্বের দাবি ৩ প্রতিষ্ঠানের!

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ম. শফিকুল ইসলাম, নেত্রকোনা থেকে : জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় প্রাথমিকের এক শিক্ষার্থী একই সময়ে নিজ গ্রামের স্কুলে পঞ্চমে অধ্যয়নরত, পাশের গ্রামের স্কুল থেকে পঞ্চমে অটোপাশ এবং মাধ্যমিকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি। উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দাবি করছেন মাসুম আহম্মেদ বর্তমানে তার বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। অন্যদিকে একই এলাকার অন্য একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছেন ২০২১ সালে মাসুম আহমেদ নামে এই শিক্ষার্থী তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে অটোপাস করে বেরিয়ে গেছে। আবার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হিসেবে এলাকার একটি শতবর্ষী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নাম রয়েছে মাসুমের। এ অবস্থায় এই শিক্ষার্থীর ‘ছাত্রত্ব’ দাবিতে নানা যুক্তি দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট এই তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
ঘটনাটি জেলার কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নে। আলোচিত এই শিক্ষার্থী মাসুম আহমেদ আশুজিয়া ইউনিয়নের সিংহেরগাঁও গ্রামের মৃত গণি মিয়া ও কুলসুমা আক্তার দম্পতির সন্তান। স্থানীয় আশুজিয়া জয়নাথ করোনেশন ইনস্টিটিউশনের (মাধ্যমিক বিদ্যালয়) পরিচালনা কমিটির নারী অভিভাবক সদস্য পদে কুলসুমা আক্তার প্রার্থী হওয়ার পর তার ছেলে মাসুম আহমেদের ছাত্রত্ব নিয়ে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে শুরু হয় টানাপোড়েন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় আশুজিয়া জয়নাথ করোনেশন ইনস্টিটিউশনের পরিচালনা কমিটির ৪টি পুরুষ ও ১টি নারী অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে নারী অভিভাবক সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন শিক্ষার্থী মাসুম আহমেদের মা কুলসুমা আক্তার। তবে তার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী দোয়াত কলম প্রতীকের আনোয়ারা আক্তার গত ৩১ আগস্ট কুলসুমা আক্তারের অভিভাবক সদস্য ভুয়া দাবি করে তার প্রার্থিতা বাতিলের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেন।
এ ব্যাপারে সিংহেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেন জানান, মাসুম আহমেদ ২০১৭ সালে আমার বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে ২০১৮ সালে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে। এরপর হঠাৎ স্কুল ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। পরবর্তীতে ২০২১ সালে পুনরায় সে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। বর্তমানে মাসুম আহমেদ আমার বিদ্যালয়ের ৫ শ্রেণির নিয়মিত একজন শিক্ষার্থী। তার রোল নং ৪২। তার নামে উপবৃত্তিও চালু রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আশুজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাজমা আক্তার বলেন, শিক্ষার্থী মাসুম আমার চাচাতো ভাই। করোনাকালে তার মায়ের অনুরোধে ২০২১ সালে আমি তাকে আমাদের বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করি এবং একই বছর এখান থেকে সে অটোপাস করে আশুজিয়া জয়নাথ করোনেশন ইনস্টিটিউশনে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। এ নিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশুজিয়া জয়নাথ করোনেশন ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মো. এজাহারুল ইসলাম জানান, আশুজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার (অটোপাস) সনদপত্র নিয়ে শিক্ষার্থী মাসুম আহমেদ ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি আমার বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় এবং সে আমার বিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী।
ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজাহারুল আলম বলেন, মাসুম আহমেদের ছাত্রত্ব নিশ্চিত করতে বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি এবং প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করেছি। ওই বিষয়টি সঠিকভাবে যাচাই করতে অনলাইনে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়