এশিয়া কাপ : হংকংকে লজ্জায় ডুবিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আগের সংবাদ

বন্ধুত্ব সুসংহত করার প্রত্যয় : বাংলাদেশে চীনা বলয় ঠেকাতে চায় দিল্লি > পানিসহ সীমান্ত সুরক্ষায় সমাধান চায় ঢাকা

পরের সংবাদ

অস্ট্রেলিয়াকে হারের স্বাদ দিল জিম্বাবুয়ে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ক্রিকেটপ্রেমীরা গতকাল চমৎকার একটি ম্যাচ উপভোগ করছেন। কারণ এদিন অস্ট্রেলিয়া ও জিম্বাবুয়ের ম্যধ্যকার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচ ছিল। দুদলের ম্যাচে জয় পরাজয় ছাপিয়ে বেশ কিছু ঘটেছ। টাউন্সহিলে টনি আয়ারল্যান্ড স্টেডিয়ামে এই ম্যাচে মিচেল স্টার্ক একটি মাইলফলক স্পর্শ করেছন। একই ভেন্যুতে দুই ম্যাচ জিতে ওয়ানডে সিরিজি নিশ্চিত করেছে অজিরা।
তিন ম্যাচের শেষটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ উইকেটে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। এর ফলে মান রক্ষা করতে পেরেছে রেগিস চাকাবা-সেকেন্দার রাজারা। কারণ ১৪ বারের চেষ্টায় অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এটি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের প্রথম জয়।
আর দুই দলের ৩৯ বছরের লড়াইয়ের ইতিহাসে ৩৩ ওয়ানডেতে এটি তৃতীয় জয় জিম্বাবুয়ের, যার সর্বশেষটি ছিল ২০১৪ সালে হারারেতে। যেকোনো সংস্করণ মিলিয়ে আট বছর পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম জয় পেল জিম্বাবুয়ে।
এদিকে দল হেরে গেলেও টাউন্সহিলের সঙ্গে স্টার্কের রেকর্ড স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ওয়ানডে ইতিহাসের দ্রুততম ২০০ উইকেট শিকারি তালিকায় নাম তুলেছেন এই বাঁহাতি ফাস্ট বোলারই। তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের রায়ার্ন বার্লকে ফিরিয়ে এই মাইলফলকে পা রাখেন স্টার্ক। ১০২ ম্যাচ খেলে ২০০ উইকেট নিজের ঝুলিতে তুলে নিলেন। এর ফলে তিনি ভেঙে দিলেন ২৩ বছর পুরনো রেকর্ড। ১০৪ ম্যাচ খেলে ২০০ উইকেট নিয়ে আগের রেকর্ডটি ছিল সাকলায়েন মুশতাকের।
১৯৯৯ সালে সেই মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন পাকিস্তানের স্পিন গ্রেট ও এখনকার কোচ। স্টার্কের পূর্বসূরি গতিতারকা ব্রেট লি ১১২ ম্যাচে মাইলফলকটি ছুঁয়ে এখন আছেন রেকর্ডের তিনে।
১১৭ ম্যাচ লেগেছিল দক্ষিণ আফ্রিকান কিংবদন্তি ও বাংলাদেশের এখনকার বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের। পাকিস্তানি ফাস্ট বোলিং গ্রেট ওয়াকার ইউনিস ছুঁয়েছিলেন ১১৮ ম্যাচে। ওয়ানডেতে দ্রুততম দেড়শ উইকেটের রেকর্ডও স্টার্কের। সেখানেও তিনি ৭৭ ম্যাচ ছাড়িয়েছিলেন সাকলায়েনকে। কারণ পাকিস্তানের এই বোলার খেছেন ওয়ানডেতে ৭৮ ম্যাচ।
এদিকে ১৪ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জিম্বাবুয়ের প্রথম জয়টি এল টাউন্সভিলের স্টেডিয়ামে। টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সফরকারীরা। সিদ্ধান্তটা যে ভুল ছিল না, তা প্রথম থেকেই প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে পড়েন জিম্বাবুইয়ান বোলাররা। তারা ১০ রানেই তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ার দুই উইকেট। এরপর থেকে অজিরা উইকেট খুইয়েছে নিয়মিত বিরতিতে। এক পর্যায়ে ৭২ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে ১০০ রানের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে যায় দলটি।
ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার একপাশ আগলে রেখে ৯৬ বলে ৯৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন বলে বাঁচা। ষষ্ঠ উইকেটে তাকে কিছুটা সঙ্গ দিয়েছিলেন গেøন ম্যাক্সওয়েল। তাদের ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৭ রানের জুটিতে ভর করেই ১০০ রান ছাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ। ২৭তম ওভারে আক্রমণে আসা বার্লের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। বার্ল ম্যাক্সওয়েলকে ফেরান প্রথমে। এক বল পরই অ্যাশটন অ্যাগারকে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় করেন তিনি। ওয়ার্নার তখনো গলার কাঁটা হয়ে ছিলেন জিম্বাবুয়ের। পরের ওভারে সেই ওয়ার্নারকেও বিদায় করেন তিনি।
৩১তম ওভারে আবারো আক্রমণে এসে মিচেল স্টার্ক আর জশ হেইজেলউডকেও বিদায় করেন বার্ল। ৩ ওভারে ১০ রান খরচায় বার্ল পান ৫ উইকেট। ১৪১ রানেই শেষ হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
অস্ট্রেলিয়াকে ১৪১ রানে বেঁধে রেখে ইতিহাস গড়ার পথটা আগেই তৈরি করে ফেলেছিল জিম্বাবুয়ে। নড়বড়ে ব্যাটিং একটু শঙ্কা জাগাল বটে, তবে শেষমেশ হাসিটা সফরকারী জিম্বাবুয়েই হাসল। মামুলি লক্ষ্য সামনে রেখে টাউন্সভিলে সফরকারীদের শুরুটা নেহায়েত মন্দ হয়নি।
জশ হেইজেলউডের বলে স্টিভেন স্মিথের হাতে ক্যাচ দিয়ে তাকুজওয়ানাশে কাইতানো যখন ফিরছেন, তার আগে উদ্বোধনী জুটিতে ৩৮ রান পেয়ে গেছে দলটি।
তবে সফরকারীদের সে ভয় দূর হয়ে যায় রেজিস চাকাভার ব্যাটে। তাকে প্রথমে সঙ্গ দিয়েছেন টনি মুনইয়োঙ্গা। দলীয় ১১৫ রানে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে তার বিদায়ের পর বল হাতে ভেল্কি দেখানো রায়ান বার্ল ব্যাট হাতে সঙ্গ দেন অধিনায়ককে। তাতেই একটু একটু করে জয়ের কাছে চলে যায় সফরকরীরা।
জয় থেকে যখন কেবল ৫ রান দূরে দল, তখন বার্ল ফেরেন মিচেল স্টার্কের শিকার হয়ে। জিম্বাবুয়ের ইনিংসের লেজ গুটাতে অজিদের কেউ তেমন কিছু করতে পারেননি। পরের পাঁচ রান কোনো বিপদ ছাড়াই তুলে নেয় জিম্বাবুয়ে। ৩ উইকেটের ব্যবধানে জয় তুলে নিয়ে ইতিহাস গড়ে সফরকারীরা।
নিজেদের ইতিহাসে এর আগে স্বাগতিকদের দুই বার হারাতে পেরেছিল জিম্বাবুয়ে। প্রথম জয়টা এসেছিল সেই ১৯৮৩ সালে, দুই দল যখন প্রথমবারের মুখোমুখি হয়েছিল একে অপরের। এরপর ২০১৪ সালে আরেকবার জিম্বাবুয়ের কাছে হারে অজিরা।
তবে সেই দুই জয়ের একটিও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আসেনি। প্রথমটি ছিল নিরপেক্ষ ভেন্যু নটিংহ্যামে, ১৯৮৩ বিশ্বকাপের ম্যাচে। দ্বিতীয়টি আসে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে, নিজেদের মাঠে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়