বাজারের ব্যাগে মিলল নবজাতকের লাশ

আগের সংবাদ

দেশীয় জ্বালানি উত্তোলনে গুরুত্ব : অনুসন্ধান ও উত্তোলনে মহাপরিকল্পনা > ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি কূপ খনন করার উদ্যোগ পেট্রোবাংলার

পরের সংবাদ

সি আর দত্ত বীর-উত্তমের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী : মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দেশ অনেক দূরে সরে এসেছে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বাংলাদেশ অনেক দূরে সরে এসেছে। এখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভোটের কোনো মূল্য নেই। সংখ্যালঘুদের ভোটের মূল্য কতখানি তা এদেশের রাজনীতিকরা যেমন ভাবেন না, সংখ্যালঘুরাও ভাবে না। ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা এই দেশে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাপ্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল সি আর দত্ত বীর-উত্তমের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণ সভার আয়োজন করে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি। বিকালে অনুষ্ঠিত এই স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ আর সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সেক্টর কমান্ডারর্স ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবিব, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ৩ সভাপতি উষাতন তালুকদার, ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্র নাথ পোদ্দার, সিনিয়র সাংবাদিক ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্টস এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ইমক্যাব) এর সভাপতি বাসুদেব ধর প্রমুখ।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টচার্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দেশ এখন অনেক দূরে সরে এসেছে। সংখ্যালঘুরা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছে। একদিকে রাষ্ট্রধর্ম, অন্যদিকে ধর্ম নিরপেক্ষতা। এ যেন সুকুমার রায়ের কবিতার হাঁস ও সজারু মিলে হাঁসজারু অবস্থা। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য যেসব প্রতিশ্রæতি গত নির্বাচনে দেয়া হয়েছিল সেগুলোর একটিও পূরণ হয়নি। তা আদায় করতে না পারলে আমাদের ভাবতে হবে আমরা কী করব?
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা কমে গেছে উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এই সংখ্যা কমে ৮ দশমিক ৯ শতাংশে এসে পৌঁছেছে। এই সংখ্যাকে কৌশলগতভাবে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা ভাবতে হবে।
শ্যামল দত্ত বলেন, একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা লড়াই করেছেন। অথচ পরবর্তীতে তা ধর্মীয় রাষ্ট্রে পরিণত হয়। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন এবং যারা এখনো লড়াই করে যাচ্ছেন তাদের এই রাষ্ট্রকে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে। বাংলাদেশ একটি ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র হতে পারে না।
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভোটের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে হিন্দু জনগোষ্ঠী আছে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ। কিন্তু তাদের ভোটের কোনো মূল্য নেই। অথচ প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের ভোটের ব্যবধান মাত্র ৪ থেকে ৫ শতাংশ। এখানে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ ভোটের মূল্য যে কতটা তা আমাদের দেশের রাজনীতিকরা যেমন ভাবেন না, আমরাও ভাবি না।
হারুন হাবিব বলেন, সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল সি আর দত্ত বীরউত্তম মুক্তিযুদ্ধকে মনেপ্রাণে লালন করতেন। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির আস্ফালন ও আক্রমণকে তিনি উপেক্ষা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালির যে একক স্বত্বা তৈরি হয়েছে তা অটুট রাখতে না পারলে সামনে আরো বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী। বাঙালি যেন বিভাজিত না হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। স্মরণ সভায় অন্য বক্তারা সেক্টর কমান্ডার মেজর

জেনারেল সি আর দত্ত বীরউত্তমের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে স্মৃতিচারণ করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়