জ¦ালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল

আগের সংবাদ

জ্বালানি তেলের প্রভাব বাজারে : পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে নিত্যপণ্যের > বাড়তি ব্যয়ের চাপে চিড়েচ্যাপ্টা মানুষ

পরের সংবাদ

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী : বঙ্গমাতার জীবনী বিশ্বের সব নারীর জন্য অনুকরণীয়

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশ ও মানুষের জন্য আমার মায়ের যে আত্মত্যাগ, তা খুব কমই উঠে এসেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ ও স্বাধীনতার জন্য আমার বাবার যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামের সারথি ছিলেন আমার মা। সব সময় আমার মা সাহস জুগিয়েছেন। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বঙ্গমাতা, শত বিপত্তির মধ্যেও কখনো ভেঙে পড়েননি। মহিয়সী নারী বঙ্গমাতার জীবন থেকে শুধু আমাদের দেশেরই নয়, পৃথিবীর সব দেশের নারীরা এই শিক্ষা নিতে পারবে, কীভাবে একটি দেশ ও দেশের মানুষের জন্য তিনি জীবনের সবকিছু ত্যাগ করেছিলেন। আমাদের দেশের মেয়েরা শুধু নয়, পৃথিবীর অনেক মেয়েরাই তার জীবনের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারবে।
গতকাল রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন অডিটোরিয়ামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘বঙ্গমাতা : এ প্যারাগন অব উইমেন্স লিডারশিপ এন্ড ন্যাশন-বিল্ডিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কথাসহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ, উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ড. তানিয়া হক।
শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধুর পাশে সব সংগ্রামে বঙ্গমাতা সব সময় সহযোগিতা করতেন জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, মার জীবনে কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল না। তিনি নিজের জন্য কোনো দিন কিছু চাননি। আমরা শুনিনি আমার আম্মা কোনো আবদার করেছেন। তার নিজের যেটুকু ছিল সবই তিনি বিলিয়ে দিতেন। দলের জন্য, মানুষের জন্য, গরিব আত্মীয়, পরিবার-পরিজনের জন্য।
বঙ্গমাতার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গমাতা সংসারের বিষয়ে, রাজনীতির বিষয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রেই যখন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা আমাদের দেশের জন্য সব সময় সঠিক ও সময়োপযোগী প্রতীয়মান হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিনি তার জীবনটাও দিয়ে গেলেন।
তার অত্যন্ত সাদাসিদে জীবনযাপনের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য বাবা বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকলেও কখনোই বিরক্ত করতেন না। মা বলতেন, আমি দেখব তুমি চিন্তা করো না। সংসার সামলানোর পাশাপাশি জাতির পিতার অনেক সময়োচিত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও বঙ্গমাতার পরামর্শ নিতেন। এতে আন্দোলন-সংগ্রামে গতির সঞ্চার করেছিল।
তিনি বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকাকালে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বা মুচলেকা দিয়ে আইয়ুব খানের ডাকা গোলটেবিলে যোগ দেয়া সম্পর্কে দলের কিছু নেতার সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে বঙ্গবন্ধুর কাছে বার্তা পাঠিয়ে অসাধারণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দেন বঙ্গমাতা। তার কথা ছিল, মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, সব আসামিকে মুক্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, তার মা ওই সময় তাকেই ডিক্টেশন দিয়ে ক্যান্টনমেন্টের কারাগারে বঙ্গবন্ধুর কাছে পাঠিয়েছিলেন এবং তার ইশারায় বাবা কাছে এলে মায়ের ওই বার্তা পৌঁছে দেন তিনি। এজন্য তখন আওয়ামী লীগের অনেক বড় বড় নেতা বঙ্গমাতা এবং তাকে দোষারোপ করেন, কিন্তু বঙ্গমাতার মধ্যে তিনি যে দৃঢ় আত্মবিশ্বাস দেখেছিলেন তা বাংলার মুক্তির সংগ্রামকে অনেকখানি এগিয়ে

নিয়েছে। জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণেও বঙ্গমাতার সুচিন্তিত পরামর্শ এবং জাতির পিতাকে আস্থা ও ভরসা দেয়ার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
১৫ আগস্টের নির্মমতা এবং বঙ্গমাতার সাহসিকতা ও ত্যাগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, যখন আমার আব্বাকে গুলি করল আমার মা কিন্তু জীবন ভিক্ষা চাননি। মা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন- ওকে যখন হত্যা করেছো আমাকেও হত্যা কর। তখন ঘাতকের বুলেট তাকে কেড়ে নেয়। তিনি বলেন, ঘাতক কারা? এরা তো আমাদের বাসায় অহরহ যেত। আমার মা সবাইকে আপ্যায়ন করতেন। অথচ তারা ঘাতক হয়ে এলো!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়