চট্টগ্রাম অফিস : সীতাকুণ্ড থানার বাড়বকুণ্ড এলাকায় এক গৃহবধূকে গণধর্ষণে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামিসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭। গত শুক্রবার রাতে সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড মিজিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মকবুল রহমান জুট মিল সংলগ্ন রেললাইনে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সাদ্দাম হোসেন ও মো. জাহেদ ওরফে মোস্তফা জাহেদ।
গতকাল শনিবার বিকালে র্যাব-৭র চান্দগাঁও ক্যাম্পে এক ব্রিফিংয়ে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল এম এ ইউসুফ জানান, ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী ও ধর্ষণকারীরা একই গ্রুপের সদস্য। ৮ জনের গ্রুপটি সীতাকুণ্ডে চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে ডাকাতি-ছিনতাইসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। ২৪ দিন আগে চাঁদাবাজির একটি মামলায় ওই গৃহবধূর স্বামী পুলিশের কাছে ধরা পড়ে জেলহাজতে রয়েছে। তবে গ্রুপের বাকি সদস্যরা ধরা না পড়লেও বাকিরা জড়িত থাকার বিষয়টি গ্রেপ্তার হওয়া ওই আসামির কাছ থেকে জেনে যাওয়ার ‘ভয়’ কাজ করছিল তাদের। এদিকে সীতাকুণ্ড থানায় হাশেমনগরে একটি ভাড়া বাসায় স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাসকারী ওই গৃহবধূর স্বামী গ্রেপ্তার হওয়ার পর গৃহবধূ তার সন্তানদের নিয়ে তার বাবার বাড়ি সীতাকুণ্ড থানার মুরাদপুরে চলে যায়।
তিনি বলেন, গ্রুপের অন্য সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৮ জুলাই রাতে ওই গৃহবধূর বাসায় গিয়ে লুটপাট করে প্রায় দেড় কোটি সমমূল্যের বিভিন্ন মালামাল। সংবাদ পেয়ে ওই গৃহবধূ বাসায় এসে দেখেন দরজা খোলা এবং মালামাল এলোমেলো অবস্থায় আছে। পরে লুটপাট কাজে জড়িতদের কথা জানতে পেরে ছিনিয়ে নেয়া মালামাল আনার জন্য ওই গৃহবধূ তার ভাগিনা ও ফুফাতে ভাইকে নিয়ে বের হয়। সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মকবুল রহমান জুট মিল সংলগ্ন রেললাইনে পৌঁছালে আসামিরা একটি ঝুপড়ি ঘরে ভাগিনা ও ফুফাতো ভাইকে মারধর করে আটকে রেখে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। আসামিরা ধর্ষণকালীন ছবি ও ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় আসামিরা তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন এবং নগদ ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে গৃহবধূর বড় ভাই ঘটনাটি জেনে তাকে উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এ ঘটনায় গৃহবধূ বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১ জনকে আসামি করে একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
র্যাব-৭র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, সীতাকুণ্ড থানায় গণধর্ষণের মামলা দায়েরের ১৩ ঘণ্টার মধ্যে মামলার প্রধান আসামি ধর্ষক সাদ্দাম হোসেন ও মামলার তিন নম্বর আসামি মো. জাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। গ্রেপ্তার সাদ্দামের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড থানায় মাদক, অস্ত্র, ডাকাতি, ছিনতাইসহ ৬ মামলা রয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।