গান আড্ডার ভিডিও চিত্রে ‘পঞ্চাশে আমরা’

আগের সংবাদ

আমদানির সুফল মেলেনি রাজস্বে : বছর শেষে শুল্কেও থাকবে ঘাটতি > মূল্যস্ফীতি বাড়লেও কমেছে ভ্যাট > নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ

পরের সংবাদ

ঠাকুরগাঁওয়ে বৃষ্টির জন্য আচার-অনুষ্ঠান : আমনক্ষেত ফেটে চৌচির

প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও জেলা দেশের উত্তরের কৃষিনির্ভর একটি জেলা। আমন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার কৃষকরা। সদর উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায় কিছু স্থানে চারা গাছ তুলছেন তারা। আবার কিছু স্থানে গিয়ে দেখা যায় চারা রোপণ করতে শুরু করেছেন কৃষক। কিন্তু বৃষ্টির পানির অভাবে কৃষকেরা চারা রোপণ করতে পারছেন না। আর আগে থেকেই যারা চারা রোপণ করেছেন কিন্তু পানির অভাবে ধানক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে আছে। এতে করে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। ফলে বেশ কিছু কৃষককে শ্যালোমেশিন, বরেন্দ্র গভীর নলকূপের সাহায্যে পানি দিতে দেখা যায়। কিছু এলাকায় বৃষ্টির জন্য দোয়া, ব্যাঙের বিয়েসহ নানা আচার-অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দানারহাট, বরুনাগাঁও ও রানিশংকৈল, শীবগঞ্জ, নারগুন, বেগুনবাড়ি, খোঁচাবাড়ি, পীরগঞ্জ, হরিপুর উপজেলাসহ রুহিয়া থানার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় আমনের চারা উঠানো ও রোপণ করার দৃশ্য। এতে দলবেঁধে শ্রমিকরা কোথায় আমনের চারা তুলছেন, আবার কোথায় চারা রোপণ করছেন। এদের মধ্যে নারী শ্রমিকদের চারা তুলে রোপণের দৃশ্য চোখে পড়ে বেশ কয়েক জায়গায়। জনপ্রিয় বেশ কয়েকটি জাতের ধান আবাদ করা হবে বলে জানান কৃষকরা। তবে বৃষ্টির পানির অভাবে উঁচু জমিতে লাগানো ধানের ক্ষেত শুকিয়ে গেছে। এতে করে বৃষ্টির পানির অপেক্ষায় রয়েছেন এ জেলার কৃষকরা। সদর উপজেলার ভেলজান গ্রামের কৃষক আবুল কালাম আজাদ জানান, তিনি এ বছর আড়াই একর (২৫০ শতক) জমিতে আমন ধান লাগানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড রোদে আর বৃষ্টি না হওয়াতে বিপাকে পড়েছেন। কারণ বৃষ্টির পানি না হওয়ায় আমনের জমিগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় তিনিও দুশ্চিন্তা করছেন।
সদর উপজেলার পারপুগী এলাকার কৃষক গিয়াস উদ্দিন জানান, প্রত্যেক বছরের মতো এ বছর তিনি ৩ একর জমিতে আমন লাগাবেন। জমি প্রস্তুতও করেছেন, কিন্তু বৃষ্টির পানির অভাবে শ্রমিক নিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছেন। এ অবস্থায় আমন লাগানোর সময় পেরিয়ে যাওয়ার চিন্তায় রয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাশেল ইসলাম জানান, জেলায় এ বছর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর। এর মধ্যে আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ৬৪০ হেক্টর। যাতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ লাখ ২৯ হাজার ৭১৬ টন। যা গত বছরে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৫ হেক্টর। এর মধ্যে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫০ টন। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, ঠাকুরগাঁও জেলা অন্যান্য ফসলের ন্যায় ধানের জন্যও বিখ্যাত। প্রচুর পরিমাণে ধান এ জেলায় উৎপাদন হয়। প্রত্যেক বছর আমন মৌসুমে কৃষকদের যাবতীয় পরামর্শ ও সেবা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রদান করা হয়। এ বছরও দেয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টির পানির অভাবে একটু সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে উঁচু জমিগুলোতে পানি থাকছে না।
তবে বৃষ্টির পানি না হওয়া পর্যন্ত সম্পূরক সেচ ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। সেচ পাম্পগুলোও সচল রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ধান উৎপাদন হবে এবং কৃষকরা এ বছরও ধানের ন্যায্যমূল্য পাবেন বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়