হৃদরোগে এসপি দেওয়ান লালন আহমেদের মৃত্যু

আগের সংবাদ

ইসির সংলাপ শুরু আজ, যাচ্ছে না বিএনপি

পরের সংবাদ

গরমে পুড়ছে নগর, কখন নামবে বৃষ্টি

প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : গরমে পুড়ছে নগর। মেঘ আছে বর্ষার আকাশে, তবু গরমে টেকা দায়। হাঁসফাঁস করছে নগরবাসী। ছটপট করছে চিড়িয়াখানার পশুপাখিরা। যদিও বর্ষার শুরুটা ছিল বৃষ্টিমুখর। আর এখন চলছে বৃষ্টি আর রোদের পালাবদলের খেলা। একটু-আধটু ঝিরিঝিরি বৃষ্টির দেখা মিললেও পরক্ষণেই রোদ উঠছে প্রচণ্ড তাপ নিয়ে। বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্প থাকায় আঁচটা খুব বেশি। তবে দুএকদিনের মধ্যে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
গতকাল দুপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা যায়, ঘুরতে আসা অনেকেই খালি গায়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেউ কেউ বাচ্চাদের চিড়িয়াখানার ভেতরে পানি দিয়ে গোসল করিয়ে দিচ্ছে। প্রচণ্ড রোদে ঘুরে বেশ কয়েকজনকে অসুস্থ হয়ে পড়তেও দেখা গেল। সকালে যারা চিড়িয়াখানায় ঢুকেছিলেন তাদের বেশিরভাগই দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ঘুরে বেরিয়ে যান। চিড়িয়াখানার সামনে লেবুর ঠাণ্ডা শরবতের দোকানেও প্রচুর ভিড়। গøাসের সবটুকু লেবুর ঠাণ্ডা শরবত পান করল জুয়েল। পান শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে বলল, গরমে টেকা
যাচ্ছে না! শরবত বিক্রেতা কাদিরের সঙ্গে আলাপে জানা গেল গত কয়েকদিনে গরমে শরবত বিক্রি বেড়ে গেছে দ্বিগুণ। তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময়ে বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ গøাস। গত কয়েকদিনে বিক্রি হলো দুইশ গøাসের উপরে।
কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সকালে সূর্যে উঠতেই গরম শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তার তীব্রতাও বাড়ে। তবে দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অসহ্য গরম থাকে। সন্ধ্যার পর অস্বস্তিকর গুমট হয়ে ওঠে পরিবেশ, রাতেও ভ্যাপসা গরম। অনেকেই বলেছেন দিনে কয়েকবার করে গোসল করেও স্বস্তি পাচ্ছেন না। অনেকে আবার মেঝেতেও বিছানা পেতেছেন। নারী-শিশু-শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির মাত্রা অন্যদের তুলনায় বেশি।
মিরপুর যেতে গরমের ধকল কমবে ভেবে শাহবাগ থেকে বাসে না উঠে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নেন আশা দীপ মজুমদার। তাতেও খুব বেশি স্বস্তি মেলেনি। এই মাঝ বয়সি নারী বলেন, প্রচণ্ড গরম। তাই বাসে ওঠার সাহস পাইনি। জ্যাম থাকে। সিএনজিতে ভাড়া কয়েক গুণ বেশি গেলেও তেমন স্বস্তি মেলেনি। ঈদের পরে শহরে কিছুটা যানজট কম। রবিবার থেকে মানুষ বাড়বে। তখন তাপমাত্রা এই রকম থাকলে জীবনযাত্রা দুর্বিসহ হয়ে উঠবে।
বর্ষায় কেন বৃষ্টি নেই : সাধারণত বছরের জুন-জুলাইয়ে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি হয়। তবে গত এক সপ্তাহে তুলনামূলক কম বৃষ্টি হয়। ফলে গরম তীব্র হয়েছে। গতকাল বিকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হালকা বৃষ্টি হয়। তবে গরম কমেনি। গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রংপুরের সৈয়দপুরে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। ঢাকায় ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
বৃষ্টি না হওয়ার কারণ সম্পর্কে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রচুর বৃষ্টির হওয়ার জন্য যে পরিমাণ শক্তিশালী হয়ে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করা দরকার সেই পরিমাণ শক্তিশালী হয়ে প্রবেশ করছে না। আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, এখন বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্প রয়েছে। এ কারণে শরীরে প্রচুর ঘাম হয়। আরো দুএকদিন পরিস্থিতি এমনই থাকতে পারে। কোথাও হালকা বৃষ্টি হলেও গরম খুব একটা কমবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ ভোরের কাগজকে বলেন, গত কয়েক বছরে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়েছে। সঠিক সময়ে বৃষ্টি হচ্ছে না। গতকাল আবহাওয়া অফিস নিয়মিত বুলেটিনে জানায়, আজ চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দুএক জায়গায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়