মুম্বাইয়ে ভবনধসে নিহত ১৯

আগের সংবাদ

বানভাসিদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই

পরের সংবাদ

কমলনগর উপজেলা মৎস্য বিভাগ : ৬০ হাজার টাকার উপকরণে ৪৫ হাজার টাকা ঘুষ!

প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কমলনগর (ল²ীপুর) প্রতিনিধি : কমলনগরে প্রান্তিক জেলেদের মাঝে বিনামূল্যের উপকরণ বিতরণে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ১২ জন প্রান্তিক জেলের মাঝে মাছ শিকারের উপকরণ বিতরণে এ অর্থ আদায় করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, প্রতি গ্রুপের জন্য বরাদ্দ হওয়া ৬০ হাজার টাকার উপকরণের সুবিধাভোগীর নাম অন্তর্ভুক্তিতে মৎস্য অফিসের লোকজন জেলেদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ৪৫ হাজার টাকা করে। অথচ জেলেরা গ্রুপপ্রতি যে উপকরণ পেয়েছেন সেগুলোর বাজারমূল্য সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা। সম্প্রতি উপকরণ পাওয়ার পর একটি ভিডিও ক্লিপে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
উপজেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণ এবং জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক একটি প্রকল্প সরকার দেশের উপকূলীয় বেশ কিছু উপজেলায় বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটির আওতায় মেঘনা উপকূলীয় ল²ীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকালকিনি এলাকার চারটি গ্রুপের ১২ জন প্রান্তিক জেলেকে মাছ শিকারের বিভিন্ন উপকরণ দেয়ার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়। গত সোমবার উপজেলা পরিষদ চত্বরে ওই সব জেলের মাঝে প্রতি গ্রুপে ৫৩৪ মিটার সুতার জাল, রশি ও পুলুট বিতরণ করা হয়।
এদিকে ক্ষুব্ধ জেলেদের বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ সংবাদকর্মীদের হাতে আসে। এতে দেখা যায়, ক্ষোভ প্রকাশ করে তিন জেলে বলেন, নাম অন্তর্ভুক্তির সময় মৎস্য কর্মকর্তার কথা বলে চরকালকিনি ইউনিয়নের মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মী জয়নুল আবদিন সবুজ তাদের কাছ থেকে ১০ হাজার করে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, সোমবার উপকরণ বিতরণের আগে উপজেলা পরিষদ চত্বরে তাদের তিনজনের কাছ থেকে আরো পাঁচ হাজার টাকা করে ১৫ হাজার টাকা নেয়া হয়। কিন্তু লক্ষাধিক টাকার উপকরণ পাওয়ার লোভ দেখিয়ে ৪৫ হাজার টাকা নিলেও বাস্তবে তারা ওই টাকার উপকরণ পাননি।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলায় সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার পদটি কয়েক বছর ধরে শূন্য থাকায় সহকারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস ওই পদের দায়িত্বে রয়েছেন। এ সুযোগে তিনি বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সময়ে জাটকা ও ডিমওয়ালা মা ইলিশ শিকারে অসাধু আড়তদারদের সুযোগ করে দেয়া, জেলেদের নিবন্ধন তালিকা হালনাগাদ, জেলেদের মাঝে ভিজিএফ, মাছ ও বিভিন্ন উপকরণ বিতরণে অর্থ আদায়ের অভিযোগ এখন মানুষের মুখে মুখে।
যোগাযোগ করা হলে চরকালকিনি ইউনিয়নের মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মী জয়নুল আবদিন সবুজ জেলেদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল কুদ্দুস দাবি করেন, তিনি কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নন। তার নাম ভাঙিয়ে কেউ কোনো অর্থ আদায় করে থাকলে সেটার দায় তার নয়। ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক সঞ্জয় দেবনাথ জানান, সরকারি আইন মেনে নদীতে মাছ শিকারের শর্তে প্রকল্পটির আওতায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জেলেদের মাঝে ওই সব উপকরণ বিতরণ করা হয়। কিন্তু এটাকে পুঁজি করে কেউ যদি কোনো রকম অর্থ আদায় করে থাকে তা সম্পূর্ণ অনিয়ম।
তিনি বলেন, অর্থ আদায়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখে সত্যতা পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়