বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ন : এমপি হারুনের নোটিস নাকচ করলেন স্পিকার

আগের সংবাদ

ঢাকার তৃণমূলে আ.লীগের পদ পেলেন ৫৪ হাজার কর্মী : থানা-ওয়ার্ডে পদ পাচ্ছেন আরো সাড়ে ১২ হাজার > সংগঠন গোছাতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন নগর নেতারা

পরের সংবাদ

তালা ওয়াশ ব্লক প্রকল্পে অনিয়ম ও অর্থ লুটপাটের অভিযোগ

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : শুরুতেই অনিয়ম এবং দুর্নীতির মধ্যেই চলছে জনস্বাস্থ্য পাবলিক হেলথের ওয়াশ ব্লক প্রকল্পের কাজ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্পে মাথাপিছু ব্যয় ১৬ লাখ টাকা ধরা হলেও প্রকৃত অর্থে ব্যয় করা হচ্ছে ৭-৮ লাখ টাকা। সাতক্ষীরার তালা সদরের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মফিজুর রহমান তালায় যোগদানের পর অফিসকে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রকল্পে লুটপাট ও অর্থ আত্মসাৎসহ অনিয়মিত অফিসে আসার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি রেন ওয়াটার হারভেস্টিং এবং গভীর নলকূপ প্রকল্পে ঠিকদারের সঙ্গে যোগসাজশে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গভীর নলকূপ প্রকল্পে সরকারি খরচ ৭ হাজার টাকা হলেও কৌশলে গ্রাহককে খরচ করানো হচ্ছে ১৫-২০ হাজার টাকা। সরজমিন অনুসন্ধানে গেলে তালা উপজেলার মাঝিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শক্তি সাধন দত্ত জানান, প্রথমে প্রকল্প নির্মাণের কিছু নিম্নমানের সামগ্রী ছিল। এর পরে বিষয়টি থানা প্রকৌশলীকে জানালে তিনি পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন। তবে দরজা-জানালায় নিম্নমানের টিনের পাত ও লোহা দিয়ে গেট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি পুনরায় প্রকল্প কর্মকর্তা মফিজুর রহমানকে জানিয়েছি। তিনি এখনো কোনো ব্যবস্থা নেননি। মঙ্গলানন্দকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খান জহিরুল ইসলাম জানান, ওয়াশ ব্লকের শুরুতেই অনিমের বিষয়টি আমি আমার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। একপর্যায়ে থানা ইঞ্জিনিয়ার পরিদর্শনে এসে নামমাত্র তদন্ত করে চলে যান। এছাড়া বাথরুমে দরজা নিম্নমানের টিন ব্যবহার করা হচ্ছে। মাঝিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শঙ্কর প্রসাদ নাথ জানান, ওয়াশ ব্লক প্রকল্পে কিছুটা অনিয়ম মধ্যে শুরু হয়েছি। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে আমি প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ারকে জানিয়েছি। কিন্তু তিনি কেন পদক্ষেপ নেননি। বাগমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দীন আহম্মদ জানান, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ওয়াশ ব্লক প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে। বিষয়টি আমি বহুবার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। তিনি কোনো কথায় কর্ণপাত করেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুড়াকুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, কোনো প্রকার মাটি পরীক্ষা ছাড়াই প্রকল্পের কাজ শুরু করেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর ঠিকাদার। এছাড়া ব্লিল্ডিং নিম্নমানের ইট, রড ছাড়াও গেট এবং দরজায় নিম্নমানের শিট ব্যবহার করা হয়েছে। তাকে বারবার জানালেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকল্পের সাবেক এক ঠিকাদার কর্মী জানান, প্রকৌশলী মফিজুর রহমান অর্থ লুটপাটের জন্য নিজের পরিচিত ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ করান সব সময়। বর্তমানে চলমান প্রকল্পে যিনি মাটি পরীক্ষা করেছেন তিনি ঠিকাদার। যার কারণে প্রকল্পে এত দুর্নীতি করতে পেরেছেন। এছাড়া তালা এলাকায় যতটি প্রকল্পের কাজ হয়েছে সবখানেই রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি, যা সরজমিন অনুসন্ধান করলে সত্যতা মিলবে। এ বিষয়ে প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কর্মী সাইফুল ইসলাম জানান, প্রকল্পে তেমন কোনো অনিয়ম হয়নি। তবে কিছু জায়গায় গেট এবং দরজা নরমাল হয়েছে। এগুলো ঠিক করে দেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত ওই প্রকৌশলী মফিজুর রহমান বলেন, প্রকল্পে যদি কোনো অনিময় হয়, সেটি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া যদি কারোর অভিযোগ থাকে সেটি আমাকে জানালে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়