র‌্যাব মহাপরিচালক : নাশকতার তথ্য নেই তবুও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছি

আগের সংবাদ

বাংলাদেশের গর্ব, বিশ্বের বিস্ময় : জাতীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে যেভাবে ডানা মেলল স্বপ্নের পদ্মা

পরের সংবাদ

সেন্ট লুসিয়ায় তিন টাইগার পেসারের অগ্নিপরীক্ষা

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে টাইগার পেসারদের আক্রমণ সম্পর্কে ক্রিকেট বিশ্বের প্রতিটি দলেরই বেশ ভালো করে জানা আছে জেনে নেয়। চলতি বছরের শুরুতে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামিয়ে সিরিজ জিতেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার সফরে তাসকিন-শরিফুল ও মোস্তাফিজরা ইতিহাস রচনা করেছে। যেখান থেকে শক্তিশালী ভারত নাকানি-চুবানি খেয়ে আসছে সেই মাঠ থেকে ওয়ানডে সিরিজ জিততে দলে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছে টাইগার পেসাররা। রঙিন পোশাকে ভয়ংকর হলেও সাদা পোশাকে এখনো নিজেদের সেভাবে প্রমাণ করার সুযোগ পায়নি তাসকিন-মোস্তাফিজরা। এবাদত হোসেনের কৃতিত্বে চলতি বছরের শুরুতেই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয় করে আরেকটি ইতিহাস রচনা করেছিল। কিন্তু পরবর্তী দুই সিরিজের দুটিতেই হেরেছে সাকিব-তামিমরা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই ম্যাচের দুটিতেই হেরেছে। এরপর ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র করলেও মিরপুর টেস্টে হারের স্বাদ গ্রহণ করেছে। এরপর অধিনায়কত্বের পরিবর্তন ঘটিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু করলেও প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট হারিয়েছে সাকিব বাহিনী। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ক্যারিবীয় পেসারদের বোলিং তোপে মাত্র ১০৩ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। যেখানে ১০টি উইকেটই পেয়েছে চার ক্যারিবীয় পেসার। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসেও ছিল কেমার রোচের দাপট। তার পাঁচ উইকেটের পাশাপাশি আলজারি জোসেফের ৩ ও কাইল মেয়ার্সের ২ উইকেট টাইগারদের লম্বা ইনিংস খেলার সুযোগ দেয়নি। সফরকারী বাংলাদেশও তিন পেসার নিয়ে খেলেছে। কিন্তু দীর্ঘদিন পর সাদা পোশাকে মোস্তাফিজের প্রত্যাবর্তন হওয়ার পরও নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে পেয়েছেন মাত্র ১ উইকেট। তবে খালিদে আহমেদ কিছুটা ছন্দে ছিল। প্রথম ইনিংসে ২টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩টি উইকেট পেয়েছেন। এবাদত হোসনেও ২টির বেশি কোনো উইকেট পাননি। অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়ার ম্যাচে হোঁচট খেয়ে অতিরিক্ত পেসার নিয়ে আজ দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামার পরিকল্পনা করেছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। যে কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই শরিফুলকে দেশ থেকে নিয়ে গেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে। আজ দ্বিতীয় টেস্টে চার পেসার নিয়েও মাঠে নামতে পারেন সাকিব আল হাসান। অথবা মোস্তফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দিয়ে তার জায়গায় তরুণ শরিফুলকে খেলাবেন তিনি। প্রথম ম্যাচে হোঁচট খাওয়ার পর এই ম্যাচে যে কোনা মূল্যে ঘুরে দাঁড়াতে ইচ্ছুক টাইগাররা। কিন্তু প্রথম ম্যাচের ক্যারিবীয় নায়ক কেমার রোচ আবারো পেস আক্রমণ দিয়ে টাইগারদের প্রায় হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে গতকাল তিনি বলেছেন, এটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের অন্যতম সেরা উইকেট। পেসারদের জন্য অনেক কিছু আছে এখানে। আমি এখনো উইকেটে যাইনি, তাই জানি না। আশা করি, অনুশীলনে উইকেট দেখব। সাধারণত এটা ক্যারিবীয়নে পেসারদের জন্য অন্যতম সেরা উইকেট।
সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দল এর আগে ২০১৪ সালে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছে। যেটিতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ২৯৬ রানের ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা। সেই ম্যাচেও এই কেমার রোচ প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছিল। আজ রাত ৮টায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট লুসিয়ায় শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ। প্রথম ম্যাচ প্রচার করার জন্য কোনো টিভি সম্প্রচার স্বত্ব না পেলেও আজ থেকে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার পূর্ণাঙ্গ সিরিজের প্রতিটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশের একমাত্র খেলাধুলাভিত্তিক টিভি চ্যানেল টি-স্পোর্টস। সাদা পোশাকে অতিরিক্ত পেসার হিসেবে প্রথমেই নাম ছিল স্পিডস্টার তাসকিন আহমেদের। কিন্তু ইনজুরির কারণে তার পরিবর্তে শরিফুলকে পাঠানো হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। তবে তাসকিন আহমেদও ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবে। টেস্ট স্কোয়াডে না থাকলেও ওয়ানডে স্কোয়াডে আছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকে টাইগার পেসারদের মধ্যে একের পর এক ইনজুরিতে ছিলেন। প্রোটিয়াদের মাটিতে প্রথম টেস্ট শেষ করেই দেশে চলে এসেছিলেন তাসকিন। শরিফুলও ইনজুরিতে পড়েছিলেন। তবে দুজনই এখন শঙ্কামুক্ত। এই দুই পেসার ইনজুরির সঙ্গে যুদ্ধ করে মাঠে ফিরলেও একের পর এক ইনজুরিতে নাস্তানাবুদ হয়ে আছে টাইগারদের একমাত্র পেস অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন। দেশের জার্সিতে সর্বশেষ মাঠে নেমেছিলেন ২০২১ সালের অক্টোবরে। এরপর ইনজুরিতে থেকেছেন দীর্ঘদিন। ৮ মাস পর ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দেশ ছাড়ার আগে আবারো ছিটকে গেছেন সিরিজ থেকে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে জানিয়েছে, পিঠের চোট এখনো ভালো না হওয়া বোলিং ফিটনেস নেই সাইফউদ্দিনের। টানা বল করতে পারছেন না। বল করার পর চোটের জায়গায় ব্যথা পাচ্ছেন। এজন্য তাকে নিয়ে আর ঝুঁকিতে যেতে চাচ্ছে না বোর্ড। যদিও ব্যাটিংয়ে খুব বেশি সমস্যা হচ্ছিল না তার। তবে বল করতে গিয়ে সমস্যা অনুভব করায় এবারো মাঠে নামা হলো না তার।
অপরদিকে ইয়াসির আলী রাব্বিও ইতোমধ্যে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন। তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ চলাকালীন পিঠে চোট পেয়েছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটার। সময়মতো সুস্থ না হওয়ায় দেশে ফিরে আসবেন তিনি। ইয়াসির আলী রাব্বির সম্পর্কে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফিজিও বায়জেদুল ইসলাম বলেছেন, পিঠের ইনজুরি থেকে প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে সেরে উঠতে পারেননি ইয়াসির আলী। পুনর্বসানও শুরু করতে পারেননি। বিশ্রামের প্রায় দুই সপ্তাহ পরও তাকে সীমিত পরিসরে শারীরিক কাজ করতে হচ্ছে। আমরা বুঝতে পারছি এই ইনজুরির সময় আরো লম্বা হবে। তাকে বাকি ম্যাচগুলোতেও পাওয়া যাবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়