মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪৪

আগের সংবাদ

উদ্ধারের অপেক্ষা আর ত্রাণের আকুতি : পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ > ভেসে উঠছে বানভাসি মানুষের লাশ > এখনই সচল হচ্ছে না ওসমানী বিমানবন্দর

পরের সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা : ২২ বছর আত্মগোপনে থেকে ইমামতি করেন এনামুল

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পরিকল্পনা নস্যাৎ হলে আত্মগোপনে চলে যান গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুতে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেখ মো. এনামুল হক। আরবি শিক্ষায় শিক্ষিত না হলেও পলাতক থাকাবস্থায় গাজীপুরের একটি মসজিদে ৮ বছরের বেশি সময় ইমামতি করেন তিনি। এছাড়া এইডস-ক্যান্সারসহ নানা রোগের চিকিৎসাও করে আসছিলেন এই ব্যক্তি। ২০১০ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) হক বাদ দিয়ে নাম রাখেন এনামুল করিম। এভাবেই দীর্ঘ ২২ বছর আত্মগোপনে থাকলেও অবশেষে র‌্যাবের জালে ধরা পড়েন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনাকারী শেখ মো. এনামুল হককে গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল রবিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র?্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র?্যাব মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ২০০০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখার ঘটনায় কোটালীপাড়া থানায় হত্যাচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র এবং বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৩টি মামলা হয়। তদন্ত শেষে ওই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ শেখ মো. এনামুল হক ওরফে শেখ মো. এনামুল করিমসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। তবে হামলা পরিকল্পনা নস্যাৎ হওয়ার পরেই পালিয়ে যান তিনি। গত শনিবার রাতে সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এর একটি দল রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এনামুলকে গ্রেপ্তার করে।
খন্দকার আল মঈন আরো বলেন, ব্যবসার সূত্র ধরে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও তৎকালীন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হুজির আমীর মুফতি আব্দুল হান্নানের সঙ্গে এনামুলের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। তিনি ২০০০ সালে গোপালগঞ্জ শহরে বিসিক শিল্পনগরীতে মুফতি হান্নানের ছোট ভাই আনিসের সঙ্গে যৌথভাবে প্লট বরাদ্দ নিয়ে সোনার বাংলা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ নামে টুথপেস্ট, টুথপাউডার, মোমবাতি ও সাবান তৈরির একটি কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। মুফতি হান্নান ও অন্য জঙ্গি নেতারা ২০০০ সালের জুলাই মাসে বেশ কয়েকবার তার ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করেন। গ্রেপ্তার এনামুল বিভিন্ন সময়ে মুফতি হান্নানসহ অন্যান্য জঙ্গি নেতার সঙ্গে গোপন বৈঠক ও সমাবেশে অংশগ্রহণ করতেন। এনামুল মুফতি আব্দুল হান্নানের পরিকল্পনা ও নির্দেশ অনুযায়ী দেশের গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করার জন্য

পরস্পর যোগসাজশে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফর সঙ্গীদের হত্যার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে বোমা বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করে। এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তারা ওই কারখানায় সাবান তৈরির কেমিক্যাল সংগ্রহের আড়ালে বিভিন্ন প্রকার বিস্ফোরকদ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি কারখানায় জমা করে লোহার ড্রামের ভেতর ২টি শক্তিশালী বোমা তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ায় জনসভার অদূরে বোমা পুঁতে রাখে। ডিএমপিতে বাসা ভাড়া নিতে হলে ভাড়াটেকে তার পরিচয়পত্র দিতে হয় ও একজন ফাঁসির আসামি নতুন করে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে কীভাবে ২২ বছর পালিয়ে ছিলেন। ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে সংশ্লিষ্ট কেউ জড়িত রয়েছে কিনা জানতে চাইলে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার এনামুল সব সময় নিজস্ব গণ্ডির মধ্যেই থাকতেন। গাজীপুরে দীর্ঘদিন ধরে থাকার কারণে সেখানে তার একটি অবস্থান তৈরি হয়। সেই হিসেবে তিনি গোপালগঞ্জের পরিবর্তে গাজীপুরের ঠিকানায় স্থানীয় ঠিকানা হিসেবে ও তার নাম এলানুম হক থেকে এনামুল করিমে পরিবর্তন করে ভুয়া এনআইডি তৈরি করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়