যশোর প্রতিনিধি : জেলার শার্শায় নারীর ক্ষমতায়নে ৩ দিন মেয়াদি আয়বর্ধনমূলক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, ইরেসপো-২ পর্যায়, বিআরডিবির মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মাসুদুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে (ভার্চুয়ালি) এ কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। শার্শা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র পালের সভাপতিত্বে ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন (বিআরডিবি) কর্মকর্তা আবু বিল্লাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন (ভার্চুয়ালি) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব মশিয়ুর রহমান-এনডিসি, অতিরিক্ত সচিব এস এম মাসুদুর রহমান ও প্রকল্প পরিচালক (ইরেসপো)-২য় পর্যায় রাশেদুল আলম।
এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা (ভূমি) ফারজানা ইসলাম, যশোর জেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (ইরেসপো) ২য় পর্যায়ের উপপরিচালক কামরুজ্জামান, শার্শা থানার ওসি মামুন খান, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আবুল হাসান, কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র মণ্ডল, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মামুন, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ইলিয়াছ হোসেন, সমবায় কর্মকর্তা এম আক্কাস আলীসহ স্থানীয় বিভিন্ন সফল খামারি ও উদ্যোক্তরা।
নারীর ক্ষমতায়নে অনুষ্ঠিত ওই কর্মশালায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (ইরেসপো)-২ পর্যায়ের প্রকল্প পরিচালক রাশেদুল আলম জানান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সমবায় বিভাগের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) কর্তৃক দেশের ১৭টি জেলার ৫৯টি উপজেলার পল্লী অঞ্চলের দরিদ্র অসহায় সুবিধাবঞ্চিত ও বেকার মহিলাদের দরিদ্রতা হ্রাস, কিশোরীদের শতভাগ বাল্যবিয়ে হ্রাস, সঞ্চয়ে উৎসাহিত করা ও গ্রামীণ মহিলাদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে জীবনমানের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে ‘দরিদ্র মহিলাদের জন্য সমন্বিত পল্লী কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্প (ইরেসপো)-২য় পর্যায়’ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোর সফরকালে এ অঞ্চলের নারীদের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় জুলাই, ২০২১ থেকে জুন ২০২৬ মেয়াদে এই প্রকল্প চলছে। প্রকল্পের অধীনে নারীদের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ শেষে আয়বর্ধনমূলক আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ঋণ হিসেবে ৮ শতাংশ সেবামূল্যে ৩০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত এবং উদ্যোক্তা ঋণ হিসেবে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রদান করা হচ্ছে।
এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় কিশোরীদের শতভাগ বাল্যবিয়ে রোধকল্পে প্রকল্পভুক্ত ৫৯টি উপজেলার ১১৮টি স্কুলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রীদের নিয়ে কিশোরী সংগঠন গঠনপূর্বক কিশোরীদের ইভটিজিং, বাল্যবিয়ে, প্রজনন স্বাস্থ্য, ইত্যাদি বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদানসহ বিনামূল্যে স্যানেটারি ন্যাপকিন ও শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
তাছাড়া কিশোরী বয়স থেকে সঞ্চয়ে উৎসাহিত করার জন্য প্রতি মাসে নিজ সঞ্চয়ের দ্বিগুণ প্রণোদনা অর্থাৎ কিশোরী ১০০ টাকা সঞ্চয় করলে প্রকল্পের আওতায় সরকার থেকে ২০০ টাকা প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।