ঐক্য পরিষদের বিবৃতি : ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দে ধর্মীয় বৈষম্য অবসান দাবি

আগের সংবাদ

নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা : সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি

পরের সংবাদ

রূপগঞ্জে স্বামী-স্ত্রীকে হত্যার মামলায় ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জে জোড়া খুনের মামলায় ছয় আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- লোকমান, শফিক, সুমন, আরিফুল, মো. সুমন ও জামাল। তাদের মধ্যে সুমন, লোকমান ও শফিক পলাতক রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দাম্পত্য কলহের কারণে স্ত্রীকে হত্যা করার জন্য ছয়জনকে ভাড়া করে স্বামী। খুনিরা স্ত্রী খাদিজাকে ধর্ষণের পর পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী ১০ হাজার টাকা না দেয়ায় এবং খুনের ঘটনা বলে দিতে পারে এই সন্দেহে স্বামী আব্দুর রহমানকেও গলা কেটে হত্যা করে তারা।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান জানান, রূপগঞ্জের দেবই এলাকার আনোয়ার হোসেনের মেয়ে খাদিজার সঙ্গে আব্দুর রহমানের বিয়ে হয়। অভাব-অনটনের কারণে তাদের পরিবারে দাম্পত্য কলহ হতো। এ কারণে খাদিজা বাপের বাড়ি চলে এসে একটি মশার কয়েলের কারখানায় কাজ নেন। ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট খাদিজা কয়েল কারখানায় কাজ শেষে রাতে সহকর্মী আমেনা বেগমের সঙ্গে বাসায় ফিরছিলেন। পথে গাউছিয়া কটন মিলের পেছনে স্বামী আব্দুর রহমানের সঙ্গে দেখা হলে একটি বেবিট্যাক্সিযোগে স্বামীর সঙ্গে চলে যান খাদিজা।
পরে ১৬ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে বোচারবাগ এলাকায় রমিজউদ্দিনের ডোবায় কচুরিপানা দিয়ে ঢাকা অবস্থায় খাদিজা ও আব্দুর রহমানের মরদেহ দেখতে পান এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় খাদিজার বাবা আনোয়ার হোসেন মিয়া বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জোড়া খুনের এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কৃষ্ণ সরকার আসামি আরিফুল, মো. সুমন ও জামালকে গ্রেপ্তার করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। তারা জানায়, স্বামী আব্দুর রহমান স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা ছয়জনের সঙ্গে ১০ হাজার টাকায় চুক্তি করে।
আসামিরা জানায়, খাদিজাকে ছয়জনে মিলে ১১ আগস্ট রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে ডোবার পানিতে চুবিয়ে খাদিজাকে হত্যা করা হয়। স্বামী আব্দুর রহমান চুক্তি অনুযায়ী ১০ হাজার টাকা না দেয়ায় এবং ঘটনা মানুষকে বলে দিতে পারে এই সন্দেহে আব্দুর রহমানকেও গলা কেটে হত্যা করে দুজনের লাশ ডোবার পানিতে কচুরিপানার নিচে ডুবিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনায় ওই বছরই ২৭ ডিসেম্বর পুলিশ ছয়জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবুজ্জামান রাকিব জানান, চাঞ্চল্যকর এই মামলায় অভিযুক্ত ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। এই রায়ে আমরা খুশি। দীর্ঘদিন পরে হলেও ন্যায়বিচার পেয়েছি। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহাদৎ হোসেন বলেন, ন্যায়বিচার পায়নি আসামিপক্ষ। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়