ভারতের গমে রুবেলা ভাইরাস : অর্ধলাখ টন ফেরত দিল তুরস্ক

আগের সংবাদ

কিশোরগঞ্জে মানববন্ধন : ভোরের কাগজের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবি

পরের সংবাদ

আর্জেন্টিনার আক্রমণের ত্রিরতœ

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আর্জেন্টাইন বংশোদ্ভূত আলবিসেলেস্তেদের অন্যতম ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসির ইতিহাস কারো অজানা নয়। ক্যারিয়ারের শেষ দিকে এসেও জাতীয় দলের সঙ্গে দারুণ সময় কাটাচ্ছেন তিনি। ফুটবলের এই জাদুকর ৩৪ বছর বয়সে প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করেন চোখের পলকে। ফিনালিসিমার ম্যাচ শেষে বেশ কয়েকটি স্থিরচিত্র ভাসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যেখানে দেখা যাচ্ছে ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালির তিন-চারজন ফুটবলার তাকে বাধা দিয়ে রুখতে পারছে না। প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের পায়ের ফাঁক বের করে চলে যাচ্ছেন অনায়াসেই। কিয়েলিন্নি তার জার্সি টেনে ধরেও রাখতে পারেননি। অনবদ্য পারফরমেন্সের জন্য গোল না করেও ম্যাচসেরা পুরস্কার পেয়েছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বনন্দিত এই ফরোয়ার্ড গোলের দেখা না পেলেও ইতালির জালকে তিনবার কাঁপিয়েছেন আলবিসেলেস্তেরা।
সেই তিন স্কোরারের মধ্যে আছে দুই তরুণ লাউতারো মার্তিনেজ ও পাওলো দিবালা। আরেকটি গোল এসেছে দলের অভিজ্ঞ উইঙ্গার আনহেল ডি মারিয়ার পা থেকে। অভিজ্ঞ দুই ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসি ও আনহেল ডি মারিয়ার সঙ্গে বেশ মানিয়ে নিয়েছেন দুই তরুণ ফরোয়ার্ড লাউতারো মার্তিনেজ ও পাওলো দিবালা।
২০১৮ সাল থেকে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের জার্সিতে পথচলা শুরু হয়েছে এই তরুণ ফরোয়ার্ডের। জাতীয় দলে যোগ দেয়ার তিন বছর আগে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে তার। ২০১৫ সাল থেকে রেসিং ক্লাবে শুরু হয়েছে পথচলা। সেখানে চারটি মৌসুম অতিবাহিত করে ২০১৮ সালে নাম লিখিয়েছেন ইন্টার মিলানে। এরই মধ্যে ২০১৬-১৭ মৌসুম খেলেছেন আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে। অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে এক মৌসুমে ১১ ম্যাচে ৭ গোল করে নজরে এসেছিলেন হোর্সে সাম্পাওলির নজরে। এরপর থেকেই জাতীয় দলের হয়ে একের পর এক ম্যাচে অসাধারণ খেলছেন তিনি। মেসিদের সতীর্থ হয়ে গত কোপা আমেরিকায় করেছেন ৩ গোল। এর আগে ২০১৯ সালে কোপা আমেরিকায়ও ৪ ম্যাচে ২ গোল পেয়েছিলেন তিনি। কাতার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দেশের হয়ে ১৫ ম্যাচে ৩ অ্যাসিস্টের পাশাপাশি করেছেন ৩ গোল। গতকাল সেরাদের সেরা হওয়ার লড়াইয়ে ইতালির বিপক্ষে প্রথম গোলটিই করেছেন তিনি। মেসির ক্রস থেকে অফ সাইডের ফাঁদ এড়িয়ে বলকে পাঠিয়েছেন ইতালির জালে। এরপর দ্বিতীয় গোলেও দারুণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। এমিলিয়ানো মার্তিনেজের লম্বা শটকে রীতিমতো যুদ্ধ করে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়েই আক্রমণে ওঠেন তিনি। ডি বক্সের সামনে বাধাপ্রাপ্ত হবেন বিধায় ডি মারিয়াকে দিয়ে গোল আদায় করে নিয়েছেন এই তরুণ ফরোয়ার্ড। ২০১৮ থেকে ইতালিয়ান ক্লাবের প্রধান ফরোয়ার্ডের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তিনি। চলতি মৌসুমে ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটিয়েছেন। ক্লাবের জার্সিতে প্রথমবারের মতো এক মৌসুমে বিশের অধিক গোল করেছেন। সম্প্রতি শেষ হওয়া লিগ ওয়ানের ৩৫ ম্যাচে ৩ অ্যাসিস্টের পাশাপাশি ২১ গোল রয়েছেন তার নামের পাশে। এছাড়া গত তিন মৌসুমের তার গোলসংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৭, ১৪ ও ৬টি।
মেসি-মার্তিনেজের সঙ্গে তুরুপের তাসের মতো আছেন আনহেল ডি মারিয়া। কোপা আমেরিকার ফাইনালে ডি মারিয়ার এক গোলেই দীর্ঘদিনের শিরোপার আক্ষেপ মিটিয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। ব্রাজিলের মাঠে রদ্রিগো ডি পলের দেয়া লং শট থেকে বলকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এডারসনের মাথার উপর দিয়ে নিখুঁতভাবে জালে জড়িয়েছিলেন তিনি। গতকালও লাউতারো মার্তিনেজের থেকে বল পেয়ে বুটের মাথায় দিয়ে আলতো করে উঠিয়ে দিয়ে ডোনারুম্মাকে বোক বানিয়ে নামের পাশে আরেকটি গোল লিখিয়েছেন তিনি। আর্জেন্টিার জার্সিতে ডি মারিয়ার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ২০০৮ সাল থেকে মেসিদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেলেও মাঠে সে অনুসারে ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি। ৩টি বিশ্বকাপের খেলতে পেরেছেন তিনি। ২০১০ বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচে খেলার সুযোগ পেলেও কোনো গোলের দেখা পাননি তিনি। এরপর ২০১৪ বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচে ১ গোল ও ২০১৮ বিশ্বকাপে ৩ ম্যাচে ১ গোল পেয়েছেন তিনি। আকাশি-নীল জার্সিতে সব মিলিয়ে ২৫ গোল করেছেন তিনি।
আর্জেন্টাইন রক্ষণভাগের আরেক রতœ পাওলো দিবালা। ইতালির বিপক্ষে গতকাল লাউতারে মার্তিনেজ ও ডি মারিয়ার গোলে জয় প্রায় নিশ্চিত। ম্যাচের নির্ধারিত নব্বই মিনিট শেষে ইনজুরির চার মিনিটের জন্য অনেকটা গা গরম করতে সুপার সাব হিসেবে লো সেলসোকে উঠিয়ে দিবালাকে নামিয়েছিলেন স্ক্যালোনি। সেই চার মিনিটেই নিজের জাত চিনিয়েছেন এই তরুণ আর্জেন্টাইন। ম্যাচ শেষ হওয়ার ১০ সেকেন্ড আগে জালের ঠিকানা ঠিকই খুঁজে নিয়েছেন তিনি। সাবলীল ড্রিবলিংয়ে ইতালির ডি-বক্সে বল নিয়ে যান মেসি। তবে ডি বক্সের ভেতরে আর নিজের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি তিনি। মেসি তার উদ্দেশ্য সাধন করতে ব্যর্থ হলেও সেই বলেই গোল করেছেন দিবালা। মেসি থেকে ছুটে আসা বলকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েই বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে ডোনারুম্মাকে পরাস্ত করেন তিনি। দলের অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসি যে রকম শট নিয়ে থাকেন অনেকটা সেভাবেই নিয়েছিলেন দিবালা। গোল পোস্টে লেগে বল চলে যায় ইতালির জালে। এই বলগুলো রুখতে যে কেনো গোলরক্ষকের জন্যই অনেকটা অসাধ্য। আর্জেন্টিনার জার্সিতে বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি তিনি। তবে যখনই সুযোগ পেয়েছেন তখনই সাফল্য পেয়েছেন আকাশি-নীল জার্সিতে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়