কুসিক নির্বাচন : ইভিএমে ভোটের প্রক্রিয়া দেখলেন ২১ প্রার্থী

আগের সংবাদ

গোপনে তৎপর জামায়াত : কৌশলে চলছে সাংগঠনিক কার্যক্রম > ‘যুগপৎ’ আন্দোলনের ছক

পরের সংবাদ

তামাক নিয়ন্ত্রণ : রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্কসহ ৯ সুপারিশ মানসের

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : তামাকপাতা রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক পুনরায় আরোপ, কৃষিজমি ও পরিবেশ সুরক্ষায় দ্রুত ‘তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ নীতি’ পাস করাসহ ৯টি সুপারিশ করেছে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস)। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২২ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়। অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। এবারের বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘তামাকমুক্ত পরিবেশ, সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী।
প্রবন্ধে বলা হয়, তামাক কোম্পানিগুলোতে সরকারি শেয়ার থাকায় জনস্বাস্থ্য ও তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই তামাক কোম্পানিগুলো এমন কৌশলে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিল করছে। বাংলাদেশেও তামাক কোম্পানিগুলোর অনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে জনস্বাস্থ্য ও তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর নেপথ্যে কাজ করছে তামাক কোম্পানিতে সরকারি শেয়ার। তামাকের ক্ষতি তুলে ধরে প্রবন্ধে বলা হয়, তামাক চাষে প্রচুর সার ও কীটনাশক ব্যবহৃত হয়, যা মাটি ও পানি দূষণ করে এবং মাছসহ জলাশয়ের উদ্ভিদ চক্রের মারাত্মক ক্ষতি করে। এছাড়া দেশে ৩১ ভাগ বন নিধনের ক্ষেত্রে তামাক চাষ দায়ী। এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে তামাক চাষ সম্পূর্ণ বন্ধ করা জরুরি।
প্রবন্ধে আরো বলা হয়, তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাত করতে চুল্লিতে প্রচুর কাঠ পোড়ানো হয়। ৩০০ সিগারেট তৈরি করতে প্রায় একটি সম্পূর্ণ গাছের প্রয়োজন হয়। একটি সিগারেট বানাতে ১৪ গ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড তৈরি হয়। তামাক উৎপাদনে বছরে প্রায় ৮৪ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন হয়, যা মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা ২ লাখ ৮০ হাজার রকেটের সমতুল্য।
প্রবন্ধে বলা হয়, দেশের ৪ কোটি ২০ লাখ মানুষ পাবলিক প্লেসে ও পরিবহনে পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার। যার মধ্যে ৩০ শতাংশ নারী কর্মস্থলে ও ২১ শতাংশ নারী পাবলিক প্লেসে শিকার। অর্থাৎ ধূমপান না করেও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি নারী । বিশ্বে প্রতি বছর তামাকজনিত রোগে ৮০ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়। তামাককে অর্থকরী ফসলের তালিকা থেকে বাদ দেয়া জরুরি উল্লেখ করে প্রবন্ধে বলা হয়, কৃষি বিপণন আইন-২০১৮ তে অর্থকরী ফসলের মধ্যে ‘তামাকের’ উল্লেখ রয়েছে। এ কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ্যপুস্তকেও তামাককে অর্থকরী ফসল হিসেবে পড়ানো হচ্ছে, যা পক্ষান্তরে তামাক চাষকে উৎসাহিত করছে। বাংলাদেশে তামাকজনিত কারণে বিভিন্ন মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে বছরে প্রায় ১ লাখ ৬২ হাজার মানুষ মারা যায়।
প্রধান অতিথি এ কে আজাদ খান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। এদিকে বিশ্বের শীর্ষ ১০টির মধ্যে ১টি অধিক তামাক ব্যবহারকারী জনগণের দেশও ‘বাংলাদেশ’। সুতরাং জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবিলায় কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। তামাক কোম্পানিগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনার সময় এসেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়