সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড : বড় মুনাফা এনেছিলেন আতাউর রহমান প্রধান

আগের সংবাদ

ভরা মৌসুমেও চালে অস্থিরতা : খুচরা বাজারে মোটা চাল ৫০ টাকা, পিছিয়ে নেই সরু চালও > কুষ্টিয়া ও নওগাঁয় বাড়ছে দাম

পরের সংবাদ

রমনা বটমূলসহ ২ মামলার ফাঁসির আসামি : আত্মগোপনে থাকা হুজির আব্দুল হাই ১৭ বছর পর গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর আত্মগোপনে থাকার পর অবশেষে র‌্যাবের জালে ধরা পড়লেন জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) সাবেক আমির মুফতি আব্দুল হাই। তিনি শেখ হাসিনা হত্যা প্রচেষ্টা ও রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পলাতক আসামি। ঢাকার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় র‌্যাব-২ এর একটি দল গত বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, আশির দশকে ভারত-পাকিস্তানের মাদ্রাসায় পড়াশোনা করা আব্দুল হাই আফগানিস্তানে মুজাহিদ হিসেবে যুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৯১ সালে দেশে ফিরে জঙ্গি সংগঠন হুজি-বি প্রতিষ্ঠা করেন। পরের বছর কক্সবাজারের উখিয়ায় চালু করেন জঙ্গি কার্যক্রম প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। পার্শ্ববর্তী দেশের এক জঙ্গি নেতা অস্ত্র সরবরাহ করতেন তাদের। প্রায় ৪ বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে তাদের কার্যক্রম চলার পর ১৯৯৬ সালে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ওই ট্রেনিং ক্যাম্প থেকে ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র‌্যাব আরো জানায়, উখিয়ার এ প্রশিক্ষণ শিবির বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হন জঙ্গি নেতা আব্দুল হাই। এরপর একে একে ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, ২০০১ সালে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলা, ২০০৫ সালে হবিগঞ্জে গ্রেনেড হামলা করান তিনি।
র‌্যাবের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে ৭টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, যার মধ্যে দুটি মৃত্যুদণ্ড ও দুটি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তিনি মোট ১৩টি মামলার আসামি। বিভিন্ন জঙ্গি হামলার ঘটনার সঙ্গে হুজিবির জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে গত ২০০৬ সালের পর আব্দুল হাই আত্মগোপনে চলে যান। তার বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে। তবে তিনি থাকতেন কুমিল্লার গৌরীপুরে শ্বশুরবাড়িতে। গত ২০০৯ সাল পর্যন্ত গৌরীপুরে শ্বশুরের দোকানে কর্মচারী সেজে ছিলেন আব্দুল হাই। মাঝেমধ্যে নারায়ণগঞ্জে যাতায়াত করতেন। পরে কৌশলে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে ভোটার কার্ড সংগ্রহ করেন। নারায়ণগঞ্জে বাসা ভাড়া নিয়ে ২০০৯ সালের পর থেকে থাকতে শুরু করেন আব্দুল হাই। কমান্ডার মঈন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আব্দুল হাই জানিয়েছেন, তিনি নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ মাদ্রাসায় ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত পড়েছেন।
১৯৮১ সালে দেওবন্দ দারুল উলুম মাদ্রাসায় পড়তে অবৈধভাবে পাশের দেশে যান। ১৯৮৫ সালের শেষে পার্শ্ববর্তী দেশের নাগরিক হিসেবে পাসপোর্ট বানিয়ে তিনি আবার বাংলাদেশে ঢোকেন। এক বছর পর আবার চলে যান পাশের দেশে। পরে সেখান থেকে ভিসা নিয়ে করাচিতে গিয়ে মুফতি টাইটেল নেন। ১৯৮৯ সালে ওই মাদ্রাসায় একাধিক বাংলাদেশিসহ বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি মিরানশাহ বর্ডার দিয়ে আফগানিস্তানে মুজাহিদ হিসেবে ঢোকেন। সেখানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কয়েক জঙ্গি মিলে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ নেন।
র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ১৯৯১-২০০০ সাল পর্যন্ত জাগো মুজাহিদ নামে একটি মাসিক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন আব্দুল হাই। তার পত্রিকা অফিসে নিয়মিত যাতায়াত ছিল শায়খ আব্দুর রহমান, মুফতি হান্নানসহ জেএমবির শীর্ষ নেতাদের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়