সংবাদ সম্মেলনে দোকান মালিক সমিতি : গুজবেই তেলের সংকট

আগের সংবাদ

সয়াবিন তেল সংকট কারসাজিতে > ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস করেছিলাম, তারা কথা রাখেনি : সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি

পরের সংবাদ

সাংবাদিক ও গীতিকার কে জি মোস্তফা আর নেই

প্রকাশিত: মে ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : তোমারে লেগেছে এত যে ভালো… আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন… অসামান্য জনপ্রিয় সব গানের গীতিকার ও প্রবীণ সাংবাদিক কে জি মোস্তফা আর নেই। গতকাল রবিবার রাত ৮টার দিকে নিজ বাসায় অসুস্থবোধ করলে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন তার ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন। আজ সোমবার বাদ জোহর কে জি মোস্তফার মরদেহ জাতীয় প্রেস ক্লাবে নেয়া হবে। সেখানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
কে জি মোস্তফার জন্ম ১৯৩৭ সালের ১ জুলাই নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে।
১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। দৈনিক ইত্তেহাদে ১৯৫৮ সালে শিক্ষানবিশ হিসেবে সাংবাদিকতায় যোগ দেন তিনি। ওই বছরেই ‘দৈনিক মজলুম’-এ সহ-সম্পাদক পদে নিয়োগ পান এবং পত্রিকাটির বিলুপ্তির আগ পর্যন্ত বহাল ছিলেন। এরপর দীর্ঘ বিরতি শেষে ১৯৬৮ সালে সাপ্তাহিক জনতায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।
স্বাধীনতার পর কে জি মোস্তফা প্রথমে ‘দৈনিক গণকণ্ঠ’, পরে ‘দৈনিক স্বদেশ’ পত্রিকায় চিফ রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ‘দৈনিক জনপদে’ কূটনৈতিক রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন। ওই সময় ‘নূপুর’ নামে একটি বিনোদন মাসিকেও সম্পাদনা করতেন। ১৯৭৬ সালে তিনি বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারভুক্ত হন এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে সিনিয়র সম্পাদক (যুগ্ম সচিব পদমর্যাদা) হিসেবে অবসর নেন।
কে জি মুস্তফা দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, রাত ৮টায় তার হার্ট অ্যাটাক হয়। তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
১৯৬০ সাল থেকে চলচ্চিত্র, রেডিও এবং টেলিভিশনে তার লেখা প্রচুর গান প্রচারিত হয়। হাজার গানের গীতিকার কে জি মোস্তফার ফিল্মি গানগুলো খুবই জনপ্রিয়।
তার গানে উপমহাদেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী তালাত মাহমুদ এবং বাংলাদেশের খ্যাতিমান প্রায় সব শিল্পী কণ্ঠ দেন।
এক সময় তিনি নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালনার দিকেও ঝুঁকেছিলেন। ‘মায়ার সংসার’, ‘অধিকার’ ও ‘গলি থেকে রাজপথ’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজও করেন।
বেশ কিছু সিনেমার সহকারী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। রয়েছে বেশ কিছু কাব্যগ্রন্থ, ছড়ার বই, গানের বই, গদ্যগ্রন্থ, গানের সিডি, ক্যাসেটও।
কে জি মোস্তফার লেখা প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ‘কাছে থাকো ছুঁয়ে থাকো’, ‘উড়ন্ত রুমাল’, ‘চক্ষুহীন প্রজাপতি’, ‘সাতনরী প্রাণ’, ‘আয়নাতে ঐ মুখ দেখবে যখন’, ‘এক মুঠো ভালোবাসা’, ‘প্রেম শোনে না মানা’।
গদ্যগ্রন্থ- কোথায় চলেছি আমি (সরস আত্মকাহিনী), ছড়ার বই- ‘শিশু তুমি যিশু’, ‘কন্যা তুমি অনন্যা’, ‘মজার ছড়া শিশুর পড়া’। এছাড়াও তার বেশ কিছু গানের সিডি ও ক্যাসেট রয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ কৃর্তক পদক ‘দেশবরেণ্য গীতিকার’ পদকসহ আরো বহু পদকে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়