করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বেইজিংয়ে ফের স্কুল বন্ধ

আগের সংবাদ

রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৯ দফা নির্দেশনা : ঝুঁকি মোকাবিলায় নজরদারিতে চাকরিচ্যুত পুলিশরা

পরের সংবাদ

নারী কখনো বেদনা জাগায় কখনো জাগায় আনন্দ

প্রকাশিত: মে ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মানুষের সমাজে বসবাস করি। এই মানুষ আর সমাজ নিয়ে কত অনুভূতি নিজের ভেতর সৃষ্টি হয়। আমি যেহেতু মেয়ে, সেই কারণে মেয়ে মানুষ নিয়েই আমার ভেতর অনুভূতিগুলোর সৃষ্টি হয়। কখনো সেই অনুভূতি বেদনা জাগায়, কখনো জাগায় আনন্দ। সেইসব অনুভূতির কয়েক টুকরো পাঠকদের জন্য নিবেদন করলাম।

এক.
কারো বাহ্যিক রূপ, সৌন্দর্য নিয়ে কটাক্ষ করা একধরনের মানসিক নির্যাতন। এ পোশাকে তোমাকে মানাচ্ছে না, এটা পরতে পারবে না, এটা পরতে হবে; এগুলো সবই মানসিক নির্যাতন। অন্য মানুষের সামনে বিব্রত করা কারো কাছে খেলা বা শখ হতে পারে। কিন্তু যাকে বিব্রত করা হচ্ছে তার কাছে এটিও মানসিক নির্যাতন। এমন নির্যাতনে মানুষের আত্মবিশ্বাস কমে যায়।
অনেকে ইচ্ছা করে অন্যের আত্মবিশ্বাস ধ্বংস করে থাকে। যেমন, তুমি এটা পারবে না, তোমাকে দিয়ে হবে না, তুমি কিছুই পার না। সবসময় এমন নেতিবাচক ও অপমানজনক কথা শুনে শুনে নিজের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়। এগুলোও মানসিক নির্যাতন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখেছি এমন বলে বলে ঘরের বউকে অনেক কিছু করা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়। ফলে বউরা উদ্যোগী হয়ে কিছু করার মনোবল পায় না।
স্বামী তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা না বলা, উপেক্ষা করা, খামাখা দোষ ধরা, এগুলো সবই স্ত্রীর প্রতি মানসিক নির্যাতন। এসব করলে সবসময় স্ত্রী ভয়ে ভয়ে থাকে, সে নিজেকে নিজে সবসময় দোষী ভাবে।
সব মানুষের কিছু ভালোলাগার জায়গা থাকে। সে হয়তো নিজের মতো করে সংসার সাজাতে চায়, গুছিয়ে রাখতে চায় সেটি করার অধিকার ও সুযোগ না পাওয়াও মানসিক নির্যাতন।
স্ত্রীর পরিশ্রমকে খাটো করাও স্ত্রীর মনোকষ্টের কারণ। আসলে স্ত্রীকে অসম্মান করা উচিত নয়। তারাও মানুষ, তাদেরও ইচ্ছা-অনিচ্ছা, ভালোলাগা-মন্দলাগা আছে, তারও ভালো থাকার অধিকার আছে।

দুই.
মানুষ মানুষের ওপর নির্ভরশীল। সে কাউকে না কাউকে বিশ্বাস করে। তার বিশ্বাসের জয়গাটা অনেক বড়। আবার যাকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করে, যদি সেই মানুষটিই তার বিশ্বাসের জায়গাটা ভেঙেচুরে দেয়। তখন কী উপায়?
তারপরও বিশ্বাস আঁকড়ে বাঁচে, বাঁচতে হয়। অবিশ্বাসের ছায়া যে মানুষের চারপাশে গিজগিজ করে না, তা কিন্তু নয়। মানুষ জেনেশুনেই অবিশ্বাসকেও বিশ্বাস করে। বিশ্বাস করাই মানুষের স্বভাব। বিশ্বাস ছাড়া মানুষ বাঁচে না। বিশ্বাস করতেই হয়। যদিও বিশ্বাসেই মানুষকে মরতেও হয়। মানুষ যদি মানুষকে বিশ্বাসই না করে, তবে থেমে যাবে পৃথিবীর গতি।
ক’দিন আগে ভোরের ভূমিকম্পের সময় আমি ছিলাম সিলেটের একটি বারোতলা ভবনের ওপরে। আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছি লোকজনের ছুটোছুটি। সঙ্গত কারণেই আমার কিছু করার ছিল না। বাঁচবার জন্য নিচে নামতে মরিয়া মানুষের আকুতি-আর্তচিৎকারে আমিও কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম। এই সময় নিজে নিজে মনের ভেতর একটি বিশ্বাস জাগিয়ে তুললাম। আর সেটা হচ্ছে, আল্লাহপাক সবাইকে হেফাজত করবেন। বিশ্বাসটাই এখানে মুখ্য। ভাবলাম মানুষের কত শখ। কত মাল্টিস্টোরেড কমপ্লেক্স, কত বড় বড় দালান। লিফট বেয়ে নামারও কোনো উপায় নেই এসব ভবন থেকে। কত কত মানুষ মাটির সংস্পর্শে থাকতে চায় না। উঁচু দালানে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তারাও ভয় পেয়ে নিশ্চিত আশ্রয়ের জন্য ছুটোছুটি করছেন।
এই যে সকালে সূর্যটা হেসে ওঠে, সন্ধ্যায় নিভে গেলেও বিশ্বাস করি কাল সকালে ঠিকই সূর্যটা হাসবে। মৃত্যুকে আমরা দেখি না। মানুষসহ সমস্ত প্রাণকেই মরে যেতে দেখি। আমাদের বিশ্বাস, সে একদিন আসবে।

তিন.
জীবন মানেই তো যুদ্ধ, নিজের সঙ্গে নিজের। প্রকৃতির সঙ্গে, বিশ্বায়নের সঙ্গে, অভাব-অনটনের সঙ্গে। খ্যাতি-অখ্যাতির সঙ্গে, সম্মান-অসম্মানের সঙ্গে, ধনী-গরিবের পার্থক্যের সঙ্গে। হিংসা-অহিংসার সঙ্গে, ন্যায়-অন্যায়ের সঙ্গে। অধিকার-অধিকারহীনতার সঙ্গে। নিগ্রহ-নির্যাতনের সঙ্গে। নিষ্ঠুরতা-নির্মমতার সঙ্গে। মানবিক অধিকারের সঙ্গে। এই যে মানুষের হাতেই মানুষের জীবনের অসুন্দর অধ্যায় রচিত হয়। কেউ নিরীহ, কেউ শক্তিধর, এই বৈষম্য মানুষের হাতেই যে রচিত। মানুষই মানুষের জীবনের সংকট। মানুষই মানুষের সর্বনাশের চাবি। অন্য কোনো প্রাণীও নয়।
এই জগৎসংসারে মানুষই মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ করে। মানুষই মানুষের নিশ্বাস চেপে ধরে। মানুষই পারে মানুষের জীবনে আনন্দ ফিরিয়ে দিতে, মানুষই মানুষের জীবনের বেদনার কারণ। মানুষই লোভে পড়ে মানুষের সব লুট করে নির্লজ্জের হাসি হাসে। মানুষই কেড়ে নেয় মানুষের অধিকার, ইচ্ছা, আকাক্সক্ষা, স্বপ্ন, আশা, সব।
বিশ্বে ভয়ংকর চরিত্র মানুষ, অন্য কেউ নয়। কত মানুষ বাস্তব জীবনে দেখেছি দাম্পত্যের মসৃণ, কোমল, নির্মল নিশ্বাসের ভেতর বিষ ঢুকিয়ে দেয়।
মাঝে মাঝে মনে পড়ে শৈশবে বড়রা ভূতের ভয় দেখাত। ভূতের ভয়ে আমাদের মুখের ভেতর শুকিয়ে যেত। এখন বড় হয়ে দেখি সেই অদৃশ্য বিশ্বাস অবিশ্বাসের ভূতের চেয়ে দৃশ্যমান মানুষই যে বিশ্ব ভয়ংকর চরিত্র। সেই বিশ্বাস-অবিশ্বাসের ভূতেরাও পালিয়েছে মানুষরূপী চরিত্রের ভয়ে।

চার.
সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাইলে একটি মেয়ের পায়ের নিচের জমি মজবুত হওয়া দরকার। আর তার জন্য প্রতিটি মেয়েকে প্রথমেই বুঝে নিতে হবে নিজের আর্থিক অধিকারগুলো। বেশিরভাগ মহিলাই এসবের খবর রাখেন না। প্রত্যন্ত গ্রাম ও শহরতলিতো বটেই, শহরেও সমাজের বড় অংশেও এই সচেতনতার বড্ড অভাব। এমনকি বহু শিক্ষিত পরিবারেও একই ছবি।
তাই সমস্যায় পড়লে অনেকেই লড়াইয়ের রাস্তায় হাঁটতে ভয় পান। কেউ কেউ সাহস করে এগোলেও দীর্ঘ টানাপড়নে ভেঙে পড়েন। হার মেনে নিয়ে সরে আসেন। আইন কিন্তু বলছে, বিয়ে হোক বা না-হোক বাবার সম্পত্তির একটা অংশের উত্তরাধিকারী মেয়েরা। আবার স্বামীর সঙ্গে এক ছাদের তলায় থাকুন বা না-থাকুন, স্ত্রীর কিছু দাবি স্বামী কিংবা স্বামী পক্ষের লোকজন নস্যাৎ করতে পারেন না।
প্রথমেই বলে রাখি, টুকরো এই লেখাটি পুরুষদের বিরুদ্ধে মেয়েদের উসকে দেয়ার জন্য নয়। বরং এর মানে, মেয়েদের জন্যই মেয়েদের সচেতন করা। কারণ, তাদের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ এক এক ক্ষেত্রে এক এক রকম। কোথাও সন্তানসহ তরুণী মা লড়ছেন স্বামী-শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে, কোথাও স্বামীহারা স্ত্রী লড়ছেন মাথার ওপরে একটু ছাদের জন্য। কোথাও আবার ভাইদের বঞ্চনায় সব খোয়ানো একা অবিবাহিত মেয়ে খড়খুটো ধরতে মরিয়া। নিজের আর্থিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন হলে তবেই না প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে বেঁচে থাকার যুদ্ধটা চালিয়ে যাওয়া যায়।
বিয়ের আগে পর্যন্ত একটি মেয়ে আইনত তার বাবার ওপর নির্ভরশীল। তাই বাবারও দায়িত্ব এবং কর্তব্য তার সব দায়ভার গ্রহণ করা। সুতরাং মেয়ের প্রাপ্য অধিকারগুলো হলো; জন্মের মুহূর্ত থেকেই থাকতে পারেন বাবার বাড়িতে। সাবালিকা হওয়ার পরেও সেই অধিকার অক্ষুণ্ন থাকে। আয় ও অবলম্বনহীন ডিভোর্স হয়ে যাওয়া মেয়েটির নিজের জীবনধারণের জন্য যদি কোনো উপায় না থাকে, তা হলে তার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে বাবা বাধ্য।
বাবার সম্পত্তির অবশ্যই হকদার মেয়েটি। টাকা-পয়সা, জমি-বাড়ি, শেয়ার অর্থাৎ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি যাই থাকুক না কেন সন্তান সে ছেলেই হোক আর মেয়েই হোক বাবার অবর্তমানে তার অংশের দাবিদার হবে। নাবালিকা হোন বা সাবালিকা, যত দিন না বিয়ে হচ্ছে, সাধারণত তত দিন মেয়েরা বাবার কাছ থেকে খোরপোষ পাওয়ার অধিকারী।
বিয়ের পরে ছাদ পাল্টায়। পাল্টে যায় চেনা চারপাশ। ছোটবেলা থেকে বড় হওয়া পুরনো সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অজানা পরিবেশে শুরু হয় নতুন শিকড় ছড়ানোর পালা। অনেকে মনে করেন মেয়ের বিয়ে হওয়া মানে পরের বাড়ি চলে যাওয়া। কাজেই বাবার সম্পত্তিতে তার আর কোনো অধিকার রইল না।
কিন্তু ইসলাম বলে বাবার সম্পত্তির ওপর বিবাহিতা মেয়েরও অধিকার আছে। একটি মেয়ে মানে বাড়ির বা পরিবারের অংশ। ঠিক একজন পুরুষের মতোই। এটা ভাবতে পারলেই আর কোনো গোলমাল থাকে না। যদিও বাস্তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা হয় না। বিয়ের পর স্ত্রীকে বোঝা ভাবছেন, সমাজে এমন পুরুষের সংখ্যা কম নয়। আর সেই বিবাহিত জীবনে বহু মেয়েই অত্যাচারিত হয়েও মুখ বুজে পড়ে পড়ে মার খান শুধুমাত্র নিজের অধিকার সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ওয়াকিবহাল নন বলে।
ম্যারেজ রেজিস্টারে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে সিলমোহর পড়ার মুহূর্তেই পাকা হয়ে যায় পতœী হিসেবে মেয়েটির আর্থিক অধিকারগুলো। সেগুলো হলো- বিবাহ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হলো ‘একজন নারীকে বিশেষ রূপে বহন করার দায়বদ্ধতা স্বীকার করা’। তাই বিয়ের পর স্বামীর পূর্ণ দায়িত্ব তার স্ত্রীর ভরণপোষণের।
বিয়ের পরে একটি মেয়ে তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে উঠবে এবং সেখানেই তার অধিকার গড়ে উঠবে। প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা এই রীতিই এখন মেয়েদের আইনি অধিকার। তাকে ওই বাড়ি থেকে বেআইনিভাবে কেউ উচ্ছেদ করতে পারবে না।
স্বামীর সমস্ত রকম স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তির ওপর স্ত্রীর সমান অধিকার। স্ত্রীর যদি নিজের রোজগার থাকে, তাও স্বামী তার স্ত্রীর ভরণপোষণ বা খোরপোষ সংক্রান্ত দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। স্ত্রীকে সামাজিক নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষা দেয়াও স্বামীর কর্তব্য।
তবে আদালতের চোখে সব মহিলার অধিকার কিন্তু এক রকমের নাও হতে পারে। কারণ আদালতে যে আবেদন নিয়ে যাওয়া হয় আদালত আইনের বিধিবিধান অনুসারে সেটারই ফায়সালা করে দেন।

পাঁচ.
আমার সবসময় ঘর সাজাতে, ঘুছিয়ে রাখতে খুব শখ ছিল। পারিপার্শ্বিকতার কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। যে যুগে ইউটিউব ছিল না সে সময় আমি সিদ্দীকা কবীরের বই, সানন্দা পড়ে নতুন নতুন আইটেম রান্না করতাম। একসময় নানা কারণে সেসব ছেড়ে দিয়েছি। শুধু বেলায় বেলায় রান্নাই করেছি। এখন আর কিছু করতেও ইচ্ছা করে না। ভাবি সময় হলে একদিন সব করব। হয়তো সে সময় আর কোনোদিনই আসবে না।
সময়ের সঙ্গে চলাটাই আমাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ হ?ওয়া উচিত। সময়টা ভীষণ মূল্যবান জিনিষ। এ জীবনে কেউ জিতবে, কেউ হারবে, কেউ হারিয়ে যাবে এটাই নিয়ম। কত মানুষের সঙ্গে দেখা করার সাধ থাকে, আমাদের কত জায়গায় যাওয়ার স্বপ্ন থাকে, কত কথা বলার ইচ্ছা থাকে, কিন্তু সব ইচ্ছা আর স্বপ্নকে আমরা বাক্সবন্দি করে রাখি। ভাবি সময় আছে তো একসময় করা যাবে। কিন্তু আসলে কি সময় আছে? সময় কোথায় থাকে? তার ঠিকানা কেউ কি জানি? সত্যি জানি না। শুধু এই বলেই মনকে সান্ত¡না দিই, হয়তো এখন সময় হয়নি। অনেক সময় সময়?ও ধৈর্যের পরীক্ষা নেয়। কিছু কাজকর্ম আছে যেগুলো সত্যি সময়ের ওপরেই ছেড়ে দিতে হয়। যেমন কোনো মেয়ের বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে কিংবা ভালো পড়াশোনা করেও চাকরি পাচ্ছে না, তখন বড়দেরে বলতে শুনি ওর সময়টা এখন ভালো যাচ্ছে না। কেবল বড়দের কথাই বলি কেন, নিজেকে নিজে এমন কথা বলে সান্ত¡না দিই। সময় তো কারো জন্য বসে থাকে না সে তো তার নিয়মে চলবে। তার চলার জন্য আমাদের সময়টাকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আবার সব কিছু সময়ের ওপর ছেড়ে দিলেও খারাপ। তাতে হয়তো আমাদেরেই চরম ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই সময়কেও সময় দিতে হবে। আর আমাদেরও চেষ্টা ও আত্মবিশ্বাস রেখে সময়ের সঙ্গে চলতে হবে।

ছয়.
আপনি ভালো মানুষ। কিন্তু কারো কথায় প্ররোচিত হয়ে কিছু করবেন না। সেটাই করুন, যা করতে আপনার মন সায় দেয় কিংবা যেটা আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই। কারো জন্য খারাপ লাগছে, করুণা হচ্ছে; সে খুব কাছের মানুষ হলেও তার জন্য নিজের একান্ত বৈশিষ্ট্যগুলো ত্যাগ করবেন না।
আপনি একজন দয়ালু মানুষ, সত্যবাদী মানুষ, আবেগী মানুষ। আর এটাই কি আপনার দুর্বলতা? এই ব্যাপারটিকে পুঁজি করেই কি সকলে আপনাকে ব্যবহার করে? এই ব্যাপারগুলোকেই রূপান্তরিত করে নিন শক্তিকে। মিথ্যার মোকাবিলা করুন সত্য দিয়ে, নির্মমতা কিংবা প্রতারণার জবাব দিন দয়া কিংবা করুণা দিয়ে। নিজেকে কখনো ছোট হতে দেবেন না বা ছোট মনে করবেন না। জেনে রাখুন, আজকালকার পৃথিবীতে এমন মানুষ হতে পারাটা বিশাল একটি মহৎ গুণ। আর এটাই আপনার শক্তি।
কে কী করল, কী বলল সেটা ধরে বসে থাকার চাইতে নিজে মেনে চলুন কিছু নিয়ম। এগুলো আপনাকে ভালো রাখবে, স্বস্তিতে রাখবে। যেমন- সকলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন। যাকে একান্ত অপছন্দ করেন, তার সঙ্গেও, শেয়ার করতে শিখুন, সুবিচার করুন জীবনের সবক্ষেত্রে, কখনো অন্যায় করে ফেললে ক্ষমা চাইতে দ্বিধা করবেন না, কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করবেন না, নিজের ঝামেলা নিজেই শুধারতে শিখুন। একটাই জীবন। তাই ভালো থাকুন, ভালো বাসুন। নিজেকে ও প্রিয়জনদের ভালো রাখুন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়