করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বেইজিংয়ে ফের স্কুল বন্ধ

আগের সংবাদ

রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৯ দফা নির্দেশনা : ঝুঁকি মোকাবিলায় নজরদারিতে চাকরিচ্যুত পুলিশরা

পরের সংবাদ

দাবানল

প্রকাশিত: মে ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বর্তমান সময়ে পুরো বিশ্বেই চলছে চরম অস্থিরতা। রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে দেশটিতে চলছে চরম খাদ্যাভাব। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে কাগজ এবং কালির অভাবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ, ফলে ইলেকট্রিসি পাচ্ছে না দেশটির জনগণ। জ্বালানির কেরাসিন নেই। সবমিলিয়ে মধ্য আয়ের দেশ শ্রীলঙ্কা এখন দেউলিয়া। ওদিকে লেবাননকেও নাকি দেউলিয়া ঘোষণা করেছেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী সায়েদ আল সামী।
তবে লেবাননের মুদ্রার মান পড়ে গেছে এবং অর্থনৈতিক মন্দার খবর আমরা প্রায় সকলেই জানি। আমি চাইলেই খবরগুলো শতভাগ নিশ্চিত হয়েই আজকের প্রবন্ধটি লিখতে পারি। কিন্তু বহি বিশ্বের সংবাদগুলো নিয়ে আমি একটু অনিশ্চয়তা রেখেই আজকের লেখাটি লিখতে চাই। এজন্যই লিখতে চাই কারণ, আমরাও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশ হইচই তোলপাড়ে একটা অস্থির পরিবেশের মধ্যে সময় পার করি। এটা যতটা না পরিস্থিতি তারচেয়েও মনেহয় বেশি প্রচার বা অপপ্রচার! এটাও একধরনের দাবানল। বনে নয়, মানুষের মনে। ভাবতে গেলে অনেকগুলো প্রশ্ন মনে ভিড় করে। যেমন প্রচার বা অপপ্রচার যায় হোক না কেন, এর কারণ কী? প্রচার বা অপপ্রচারে লাভ কী? নাকি এটা সামাজিক অস্থিরতা? কারা করছে? এর রিরুদ্ধে আমাদের করণীয় কি? অনেক ভেবে মনে হলো এই প্রচার এবং অপপ্রচারে লাভ এবং ক্ষতি দুটোই বিদ্যমান। তাহলে আমারা সাধারণ মানুষেরা কী করবো? এই সংবাদগুলো বিশ্বাস করবো না? অস্থির হবো না?
আচ্ছা প্রশ্নগুলো মনের একপাশে আলাদা করে রেখে আগে বর্তমান সময়ের কথায় যাওয়া যাক। এই মার্চের শেষের ক’টা দিন থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের শুরুতেই পর পর তিনটি ঘটনা আমাদের দেশে ব্যাপক ঝড় তোলে (১)কপালে টিপ পরা নিয়ে ঢাকা তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার এন্ড মিডিয়া স্ট্যাডিজ বিভাগের শিক্ষিকা লতা সমদ্দারকে হেনস্তা করে একজন পুলিশ তাকে গালিগালাজ করে এবং তার পায়ের ওপর মোটরসাইকেল চালিয়ে দিয়ে যায়।
এরপরই ঘটে (২)য় ঘটনাটি, গত ২০ মার্চ মুন্সীগঞ্জের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডল দশম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছিলেন। সেদিন তিনি ক্লাসে ধর্ম নিয়ে আলোচনা করেন, যা কয়েকজন শিক্ষার্থী রেকর্ড করে। পরে কিছু শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তুলে, শিক্ষক ধর্ম নিয়ে ‘আপত্তিকর’ কথা বলেছেন এবং শিক্ষার্থীরা এলাকায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রকাশ করলে শিক্ষক হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
(৩)য় ঘটনাটিও নওগাঁর মহাদেবপুরের স্কুল শিক্ষক আমোদিনী পালকে নিয়ে। হিজাব পরে স্কুলে আসার অপরাধে তিনি নাকি ১৮ ছাত্রীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন। এর জের ধরে অভিভাবকরা পরদিন ৭ এপ্রিল স্কুলের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এবং সেখানেও খবর পেয়ে পুলিশের দুটি ভ্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এখন প্রতিটি ঘটনার পর আবার পাল্টা ঘটনা এসে উপস্থিত হচ্ছে। আমরা দেখতে পাই, লতা সমদ্দারের ঘটনাটি অন্যদিকে ঘুরানোর জন্য কোন একটি পক্ষ ‘পুলিশ কনস্টেবলের হোন্ডায় ঝুলিয়ে রাখা ব্যাগকে তার প্রেগন্যান্ট ওয়াইফ বানিয়ে শিক্ষিকা লতার বিষয়ে বলা হয় যে, তিনি কনস্টেবলের প্রেগন্যান্ট ওয়াইফ কথা কেন সম্পূর্ণ চেপে গেলেন? সুতরাং লতারই কোন দূরাভিসন্ধি আছে টিপ কাহিনির পিছনে। কিন্তু আরো পরে আমরা প্রমাণ পাই যে, ওইটি একটি ব্যাগ ছিল। অথচ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর কথা গুজব ছড়িয়ে পাল্টা অপদস্ত করার উদ্যোগ কেউ বা কারা নিয়ে ছিলেন।
বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডলকে নিয়েও কে বা কারা প্রচার করার চেষ্টা করেন যে, গ্রেপ্তারের ঘটনাটি বানানো। হৃদয় মণ্ডল নাকি বহাল তবিয়তেই ঘুরে ফিরে বেড়াতে দেখ যাচ্ছে।
এবং শিক্ষক আমোদিনি পালের ঘটনাটিও আমি ইউটিউবের একটি নিউজে চ্যানেলে দেখি, স্বয়ং আমোদিনী পাল মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তার সঙ্গে কিছু শিক্ষার্থীও ছিল সাক্ষী দেবার জন্য। এবং শিক্ষার্থীরাও সেখানে বলছে যে, ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমোদিনী পালের সঙ্গে আরেকজন পুরুষ শিক্ষক ছিলেন, যার কথা কেউ বলছে না।
এবার আসি আরও কিছু প্রশ্ন নিয়ে। তা হলো, টিপ ঘটনা শুরু হয় ঢাকা থেকে এবং কেন্দ্রবিন্দু শিক্ষক। এটা যেন সিরিজ বোমার মতো ছড়িয়ে যায়, মুন্সীগঞ্জ এবং নওগাঁর মহাদেবপুর পর্যন্ত। প্রতিটি ঘটনায় শিক্ষকদের নিয়ে এবং ঘটনাগুলো ধর্মীয় অনুভূতি নিয়েই। প্রথম ঘটনাটি মসুলমান পুলিশ কনস্টেবল দ্বারা হিন্দু শিক্ষক লাঞ্ছিত। পরেরগুলে হিন্দু শিক্ষকের দ্বারা মুসলিম ছাত্র-ছাত্রী লাঞ্ছিত! (সেটা যেমনই হোক না কেন) প্রতিটি ঘটনা যেন একটির সঙ্গে আরেকটা অদৃশ্য সুতোয় গাঁথা। এই কর্মগুলো কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়?
আমরা বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সূত্রে কিছু তথ্য জানতে পারি যেমন, একটি দেশের সামাজিক মূল্যবোধ হ্রাস, নৈতিক অবক্ষয়, সামাজিক বন্ধন ঢিলে হয়ে যায়, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য শুরু হয় সেই দেশের বিচারহীন সংস্কৃতি থেকে। এবং এই সংকট ক্রমাগত ভয়াবহ রূপ নিতে থাকে। এইটি মনে করেন সমাজবিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি অপরাধ বিশ্লেষকরা জানান, ঐতিহাসিকভাবে মহামারি, দুর্ভিক্ষ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো পরিস্থিতিতে অপরাধের চিত্র বদলায়। বিশেষত, যারা অর্থনৈতিক ঝুঁকি ও মানসিক অশান্তিতে থাকে, তাদের একটি অংশ অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। একটি অংশ অপরাধের শিকার হয়। এছাড়া পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, বৈশ্বিক এই মহামারিতে নির্দিষ্ট কিছু অপরাধ বাড়তে পারে। সেই পরিকল্পনা মতো পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে সেদিকে নজর রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল পূর্বেই। তবে দেশে যে হারে খুন, নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং বিকৃত যৌনাচারের ঘটনা বেড়েছে, তাতে তারাও উদ্বিগ। নতুনভাবে ই-কমার্স অপরাধ আরো বৃদ্ধির আশঙ্কা করছে পুলিশ প্রশাসন। প্রতারণার মাধ্যমে ই-কমার্সসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান লাখ লাখ মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ইতোমধ্যে ঘটেছে। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকদের এগিয়ে আসা জরুরি বলে মনে করছেন পুলিশ প্রশাসন।
ওদিকে রয়টার্স বলছে, খাবারের দাম আকস্মিক বেড়ে গেলে সামাজিক পরিস্থিতি মোড় নেয় অস্থিরতার দিকে, যেমনটি ঘটেছিল ২০০৭-০৮ এবং ২০১১ সালে, যা পৃথিবীর ৪০টি দেশে ঘটে যাওয়া দাঙ্গার কারণ। ঘুষ, দুর্নীতি, বেকারত্ব, রাজনৈতিক নিপীড়ন ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে তিউনিশিয়ার এক ফেরিওয়ালা ২০১০ সালের ১৭ ডিসেম্বর নিজের গায়ে আগুন জ্বেলে বিপ্লবের মশাল জ্বেলে দিয়েছিলেন। যে বিদ্রোহের আগুন আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। এবং সেই গণআন্দোলনের নামকরণ করা হয়েছিল ‘আরব বসন্ত’ নামে।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা জানান, বেশির ভাগ মানুষই
সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়ে যথেষ্ট শিক্ষা গ্রহণের আগেই সব কিছু দেশের মানুষের হাতের মুঠোয় পেয়ে গেছে দেশবাসী। যার পরিণতিতে সাধারণ মানুষ এর দায়িত্বশীল ব্যবহার করতে তো শেখেইনি বরং অনেকেই এর যথেচ্ছা ব্যবহার করছে। এবং এইসব মাধ্যম থেকেই বেশি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-ফ্যাসাদ, এমনকি নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ঘটছে। গত দেড় দুই বছরে যে কয়টি সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, এর বেশিরভাগই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে করা হয়েছে। এই গুজব ছড়ানোর পেছনে কখনো একজন মানুষের কখনো একটি গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য থাকে। উদ্দেশ্য হলো মানুষকে আতঙ্কিত করা এবং বিভ্রান্ত করা। মানুষের ভেতর বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করাকে পবিত্র কুরআনে মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারে সামাজিক অপরাধ বাড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টজনেরা। গোয়েন্দারা জানান, করোনাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে সংখ্যক সাইবার ক্রাইম সংঘটিত হয়েছে, তা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এ মাধ্যমেই সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তারা। কিছু কিছু নৃশংস ঘটনার পর্যালোচনা করে বিশেষজ্ঞরা বলেন খুনিরা হয়তো আগে কখনো খুনি ছিল না। সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলেই বিভিন্ন ধরনের অন্যায় অপরাধে মানুষ জড়িয়ে পড়ছে। অশান্তির জ্বালা মেটাতে অবুঝ শিশুকে শাড়ির সঙ্গে বেঁধে মা ঝাঁপ দিচ্ছেন নদীতে। এ ক্ষেত্রে সামাজিক অস্থিরতা, আকাশ সংস্কৃতি, মাদকের বিস্তার, প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাবে তাদের মধ্যে এক ধরনের জিঘাংসা ও মানসিক অস্থিরতা কাজ করে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিটি তথ্য সূত্রের সঙ্গে আমিও সহমত প্রকাশ করে বলতে চাই, আমরা যারা গৃহের কাজ করতে করতে প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরের কাগজ পড়ার সময় পাই না, কিংবা আমাদের দেশে যে বহু নিম্ন আয়ের মানুষ আছেন যারা অশিক্ষিত এবং প্রতিদিন খবরের কাগজ কিনে পড়তে পারেন না। কিন্তু পুরনো হলেও মোবাইল ব্যবহার করছে। হাতের কাছে মোবাইল থাকায় ইলেকট্রনিকস মিডিয়া যেমন, ইউটিউব, গুগল, ফেসবুকে আসা খবরগুলোতে চোখ বুলান অশিক্ষিত, অল্পশিক্ষিত কিংবা উচ্চ শিক্ষিত অর্থাৎ সমাজের সব শ্রেণির মানুষই। তাহলে আমরা কি তবে ইউটিউবে আসা সংবাদগুলো বিশ্বাস করব না? অস্থির হবো না? আচ্ছা তা না হয় হলাম না। কিন্ত‘ এভাবে যে রাখাল বালকের গল্পের মতো আমাদের অনুভূতিগুলোকে অকেজো করে দাওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে, সেই ক্ষতি কী জাতি পূরণ করে নিতে পারবে?
একটা ঘটনা ঘটলে সেটা তদন্তের দায়দায়িত্ব সাধারণ মানুষের হাতে কেমন করে আসছে? পুলিশ কনস্টেবলের সঙ্গে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর ছবি এবং তথ্য দিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল করে ঘটনার মোড় অন্য দিকে ঘুরানোর চেষ্টা কেন সাধারণেরা করছে? তারা কারা, যারা দ্রুত ঘটনার পর ঘটনা সাজাচ্ছেন? এ পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার উপায় কী?
আমরা জানি, যে কোনো জনসংখ্যা বহুল দেশে অপরাধ প্রবণতা প্রবল হয়। আমাদের দেশেও এর ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়। এবং মানুষকে আমার এখনো বন্যপ্রাণীর মতোই মনে হয়। মানুষের ভেতরে যে পশুর বসবাস তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয় পারিপার্শ্বিক শিক্ষা, ধর্ম, এবং আইন দিয়ে। তবে ধর্মকে অনেকেই জুজুর ভয় ভেবে এড়াতে পারেন। কিন্তু মানুষের যে কোনো প্রকার ঔদ্ধত্যকে দমিয়ে রাখতে শিক্ষা এবং আইনের কোনো বিকল্প নেই। তাই আইনশৃঙ্খলা আরো কঠোর হওয়া প্রয়োজন সঙ্গে সঙ্গে অপরাধের দ্রুত বিচার আরো বেশি প্রয়োজন। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা অন্যায় প্রবণতাকে বৃদ্ধি করে। যেটাকে আমরা এখন আর অস্বীকার করতে পারি না। নানা অপরাধকাণ্ডে সামাজিক অস্থিরতা যেভাবে বেড়েছে তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কর্মী সালমা আলী বলেন, পত্রিকায় যতটুকু আসে, মূল ঘটনা তার চেয়েও ভয়াবহ। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আইন পরিবর্তনের কথা বলে আসছি। মানসিকতার পরিবর্তন না করলে, শুধু আইন পরিবর্তন করে অপরাধ বন্ধ করা যাবে না।’ আর এই মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা। সন্তানকে নৈতিক শিক্ষা এবং সামাজিক মূল্যবোধ সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে ছোটবেলা থেকেই। পাশাপাশি নৃশংসতা এবং সাম্প্রদায়িক গুজবের বিরুদ্ধে সমাজের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন প্রতিটি মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক অস্থিরতা ও অবক্ষয় থেকে মুক্তি পেতে হলে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ। একটি দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত বিকাশের উন্নয়ন জড়িত থাকে সেই দেশের যাবতীয় কাজের মধ্য দিয়ে। সচেতনতার মধ্য দিয়ে। কিন্তু দেশকে বিভিন্নভাবে অস্থির করে তুলে আমরা দেশ এবং সরকারকে কতটুকু সহযোগিতা করছি? দেশের প্রতি দায় এবং দায়িত্ব কতটুকু পালন করছি? না করেছি না। মানুষের মুখের কথাকে গুলির সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে। মুখের কথায় যুদ্ধ পর্যন্ত হতে পারে। আর এই কথাগুলো যখন গুজব বা অপপ্রচার আকারে ছড়াতে থাকে তখন তা একটি দেশের জন্য কতটা ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে তা হয়তো এখনো অনেকেরই কল্পনাতীত। সুতরাং সতর্ক হন, দেশপ্রেমিক হন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়