বাটলার ঝড়ে বিধ্বস্ত দিল্লি

আগের সংবাদ

চাঁদার হাট নিউমার্কেট-গাউছিয়া

পরের সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীর বার্তা : পানি ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা বাড়ানোর তাগিদ

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কোভিড-১৯ মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার ও পুনঃগঠন উদ্যোগ ‘বিল্ড ব্যাক বেটারের’ জন্য একটি উন্নত পানি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি ব্যবস্থাপনায় অববাহিকাভিত্তিক পদ্ধতি নেয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতার জন্য আমাদের অবশ্যই ভালো অনুশীলন, জ্ঞান ও প্রযুক্তির সমন্বিত শক্তির বিনিময় ঘটাতে হবে। সেই সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত নদী ব্যবস্থাপনায় অববাহিকাভিত্তিক পদ্ধতি নেয়া প্রয়োজন।
গতকাল শনিবার জাপানের কুমামোটো শহরে ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য পানি-সর্বোত্তম ব্যবহার ও পরবর্তী প্রজন্ম’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী পানি সম্মেলনে সম্প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ গুরুত্বারোপ করেন। জল-বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহসহ আঞ্চলিক ও উপআঞ্চলিক সহযোগিতার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন সরকারপ্রধান।
পানি জীবনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, টেকসই উন্নয়ন ও শান্তির সংস্কৃতির প্রচারের জন্য এটি মৌলিক। চলমান কোভিড-১৯ মহামারি থেকে ভালোভাবে পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের সঠিক পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। এসডিজিতে পানি সম্পর্কিত বিষয়সহ পানির ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারগুলো পূরণ করার জন্য আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ঋণী। আমাদের যুবকদের অবশ্যই ক্ষমতায়িত করতে হবে যাতে তারা দক্ষ ও টেকসই অন্তর্ভুক্তিমূলক পানি ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্ব দিতে পারে। ২০১৬ সালে পানিসংক্রান্ত জাতিসংঘ উচ্চপর্যায়ের প্যানেলের আমরা সদস্য ছিলাম। তখন ‘কল টু অ্যাকশন’ পদক্ষেপ নেয়া হয়। আগামী বছরে ওয়াটার অ্যাকসন দশকের মধ্য-মেয়াদি পর্যালোচনা আমাদের অ্যাকশন এজেন্ডা বাস্তবায়নে একটি প্ল্যাট ফরম দেবে। আশা করছি কুমামোটো ঘোষণা সেই প্রক্রিয়ায় একটি কার্যকর অবদান রাখবে। আমরা পানি ব্যবস্থাপনার জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমগ্র সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছি। দেশের ৮৫ শতাংশর বেশি মানুষের নিরাপদ পানীয় জল ও উন্নত স্যানিটেশন সুবিধা রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগের অবসান ঘটিয়েছি। পানিবাহিত রোগের বিরুদ্ধে আমাদের অব্যাহত প্রচেষ্টা চলছে। আগামী মাস থেকে আমরা রাজধানীতে ২৩ লাখ কলেরা ভ্যাকসিন দেব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানিসংক্রান্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশকে ‘রোল মডেল’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশ বন্যার নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, উপকূলীয় পোল্ডার, সবুজ বেষ্টনী, ভাসমান কৃষি, নদী খনন ও শহরের ঝড়ের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় বিনিয়োগের সক্ষমতা বাড়িয়েছে। আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা এবং কমিউনিটিভিত্তিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে জনগণ উপকৃত হচ্ছে। বাংলাদেশে প্লাবন ভূমি ব্যবস্থাপনার লক্ষ্য হচ্ছে বিভিন্ন মৌসুমে পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা। আমরা একটি স্থিতিস্থাপক ও সমৃদ্ধ ব-দ্বীপ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ক্রস-সেক্টরাল বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ তৈরি করেছি। আমরা এই পরিকল্পনার অধীনে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংস্থান সংগ্রহের জন্য আগামী মাসে একটি আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সম্মেলনের আয়োজন করছি। উপকূলীয় অঞ্চলে ভূমি পুনরুদ্ধার ও উঁচু করার জন্য বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত পলির স্তূপ ব্যবহার করার জন্য আমরা উন্মুখ। সেই সঙ্গে ব্লু ইকনোমির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতেও প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ।
পানির ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাব সম্পর্কে সচেতন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, উপকূলীয় এলাকায় ক্রমবর্ধমান লবণাক্ততা অনুপ্রবেশ ও দেশের কিছু অংশে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যেতে দেখা যাচ্ছে। সরকার বৃষ্টির পানি সংগ্রহসহ প্রাকৃতিক সমাধানের ওপর জোর দিচ্ছে। বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা লবণাক্ততা ও পানি-প্রতিরোধী এবং খরা-সহনশীল ফসলের উন্নয়নে কাজ করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু জাত উদ্ভাবন করেছে। আমরা আমাদের জলাভূমি রক্ষার জন্য একটি প্রতিবেশভিত্তিক পদ্ধতি নিয়েছি। তাছাড়া আমরা আমাদের নদীগুলোকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে স্বীকৃতি দিই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়