ধানমন্ডিতে ট্রাকের ধাক্কায় নারী নিহত

আগের সংবাদ

অনাস্থা ভোটে স্পিকারের গড়িমসি

পরের সংবাদ

আলাপচারিতায় রিকিতা নন্দিনী শিমু : ‘চারপাশে অসংখ্য শিমুকে দেখি, তাদের জীবনটা কখনো ভেবে দেখি না’

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

একটু নিভৃতচারী প্রকৃতির। মিডিয়া গø্যামার আর চাকচিক্যের আড়ালে থাকতেই পছন্দ করেন। এর আগে তাকে দেখা গেছে ‘রানওয়ে’, ‘মাটির প্রজার দেশে’, ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ এর মতো সিনেমায়। রুবাইয়াত হোসেনের ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ সিনেমাটি এবার দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে মুক্তি পেয়েছে ‘শিমু’ নামে। আর এ ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু। শুধু তাই নয় ছবিতে তার চরিত্রের নামও শিমু। তার অভিনয়, নতুন ছবি ও আগামীর কাজ নিয়ে কথা হলো তার সঙ্গে-
শুরুতেই শুভেচ্ছা। দীর্ঘদিনের একটা যাত্রার ফসল এখন রুপালি পর্দায়
কেমন লাগছে?
অবশ্যই ভালো। আসলে এই ছবিটি আমাদের অনেকদিনের প্রস্তুতি ছিল অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ ছিল। সেলাই মেশিনের কাজ থেকে শুরু করে সঠিক লোকেশনে আমরা অনেকদিন গিয়েছি। রিয়েল কস্টিউম পড়ে রিহার্সেল করেছি। আমার কাছে এক সময় মনে হতো সেলাই মেশিন চালানো অনেক সহজ, কিন্তু আসলে সহজ ছিল না। একজন গার্মেন্টস কর্মীকে এটা যেভাবে অপারেট করতে হয়, তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, পায়ের স্পিড, সবকিছু কাছ থেকে দেখতে হয়েছে। এই ছবিটি যে নারী শ্রমিকরা দেখবেন বা যারাই দেখবেন এই গল্পটাকে তারা নিজের করে ভাবতে পারবেন। যে কোনো পেশার মানুষই এ গল্পের সঙ্গে নিজেকে কানেক্ট করতে পারবেন।

চরিত্রের শিমু আর ব্যক্তি শিমুর মধ্যে পার্থক্য কতখানি?
চরিত্রের শিমু আর ব্যক্তি শিমু অনেক আলাদা। আসলে মায়ের বাধ্য বলতে যেটা বোঝায়, আমি তাই। একদম শান্ত ধরনের মেয়ে। যে রাস্তায় একা চলতে পারত না। বাসার বাইরে গেলে পরিবারের কেউ সঙ্গে থাকত। এমনকি কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদও করতে পারিনি কখনো। কিন্তু এ ছবিতে কাজ করতে গিয়ে বর্তমান শিমুর এখন মনোবল অনেক শক্ত। আমি এখন একা একা চলা ফেরা করতে পারি। দেশেই না লন্ডন, বেলজিয়াম, ফ্রান্স ঘুরে এসেছি একা একা।

বিদেশের কথাই যখন এলো, জানতে চাই এ ছবির জন্য আপনি ফ্রান্সে পুরস্কৃত হয়েছেন, সেই অনুভূতি কেমন ছিল?
পুরস্কার পাওয়াতো সব সময় আনন্দের, কেননা আমি কাজটা কত ভালো করেছি পুরস্কারটা তার স্বীকৃতি। ব্যক্তিগতভাবে এটাই ছিল আমার প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার। যদিও এর আগে আমার অভিনীত ছবিগুলো একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে। সেই দিনের কথা মনে পড়লে আমি আবেগে আল্পুত হয়ে পড়ি।
ফরাসি প্রযোজক যখন পুরস্কারপ্রাপ্তির কথা লিখে অভিনন্দন জানিয়েছেন, তখনো আমার বিশ্বাস হয়নি। এরপর পরিচালক রুবাইয়াত আপু ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন, আর বলেছেন, এটা একেবারেই তাঁর নিজস্ব অর্জন।

এ চরিত্রে কাজ করতে গিয়ে কোন দায়বদ্ধতা কাজ করেছে?
আমি যেখানে থাকি অর্থাৎ মিরপুরে অনেক গার্মেন্টস এলাকা। চলতে ফিরতে আমরা আমাদের চারপাশে অসংখ্য শিমুদের দেখি কিন্তু তাদের জীবনটা কেমন তা কখনো ভেবে দেখি না। এই মানুষগুলোর জীবনের প্রকৃত গল্প সত্যি অন্যরকম। পরিচালক রুবাইয়াত আপু যখন গল্পটা বলল, মনে হলো শিমু চরিত্রটা আমার জন্য অনেকখানি চ্যালেঞ্জিং। তখন থেকে আমি এই মানুষগুলোকে অবজার্ভ করা শুরু করি। তাদের চলা ফেরা, তাদের কথা বলা কাছ থেকে দেখার চেষ্টা করি। কেননা আমাদের দেশের অর্থনীতির একটা বড় চালিকা শক্তি এই মানুষগুলো।

গার্মেন্টস শ্রমিক নেত্রীর ডালিয়া আক্তারের চরিত্রে তার প্রাণবন্ত উপস্থিতি নজর কেড়েছে দর্শকের। এই ছবি দিয়ে ডালিয়া কিংবা ডালিয়ার মতো যারা আছে তাদের জীবনের কোনো পরিবর্তন আসবে?
ডালিয়া আপা ছিল আমাদের কাজের অনুপ্রেরণা। প্রতিটি বিষয় তিনি আমাদের হাতে ধরে শিখিয়েছেন। অনেক কাছ থেকে দেখার কারণে তার চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে অনেক সহজ হয়েছে। আর আমার মনে হয় ডালিয়া আপাদের মতো যারা আছেন তার জীবনের একটা পরিবর্তন আসবে এই সিনেমায়। কারণ ছবিটি যারা দেখেছেন বা দেখবেন তারা অনুপ্রাণিত হবেন এই সিনেমাটি দেখে।

এবার আমরা একটু আসল শিমুতে আসতে চাই। আজকের শিমুর গল্পের শুরুটা কেমন ছিল?
আমার যখন ছয় বছর বয়স, তখন আমি টোকাই নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত হয়। দশ বছর তাদের সঙ্গে কাজ করি। আমার প্রথম ছবি হলো তারেক মাসুদের রানওয়ে, এরপর বিজন ইমতিয়াজ পরিচালিত মাটির প্রজার দেশে অভিনয় করি। এরপর পরিচয় হয় রুবাইয়াত হোসেনের সঙ্গে, তখন তিনি আমাকে তার আন্ডার কনস্ট্রাকশন ছবিতে কাস্ট করেন। আর দুই একটি বিজ্ঞাপন ও নাটকের পাশাপাশি ওয়েব সিরিজ তকদিরেও কাজ করা হয়েছে।

জানতে চাইব আপনার বর্তমান কাজ সম্পর্কে?
বলার মতো অনেক কাজ না থাকলেও উল্লেখ করার মতো কাজ করেছি। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ অর্থাৎ শিমু ছবি শেষ করার পর অভিনয় করেছি ভারতের কলকাতার পরিচালক আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্তের তৃতীয় ছবি ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ক্যালকাটা ছবিতে। এই পরিচালকের ‘আসা যাওয়ার মাঝে’ আর ‘জোনাকি’ বোদ্ধামহলে দারুণ আলোচিত আর প্রশংসিত ছবি। আর এছাড়া স¤প্রতি শেষ করলাম একটি ওয়েব সিরিজ। হ মেলা প্রতিবেদক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়