ইসলামী ঐক্যজোট : মোদির আগমনের বিরোধিতা করা ঠিক হয়নি

আগের সংবাদ

লক্ষ্য অর্জনে বেপরোয়া পুতিন : কিয়েভসহ চার শহরে অস্ত্রবিরতি > সর্বাত্মক হামলার আশঙ্কা ইউক্রেনের

পরের সংবাদ

ডিএনসিসির নতুন ওয়ার্ড উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন : সেবা পাবে ২০ লাখ বাসিন্দা

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অধিকার পেয়েও তা ভোগ করতে না পারার বহুদিনের আক্ষেপ মিটতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এবার মেগা প্রকল্পের আওতায় এসব ওয়ার্ডের উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ঢাকা শহরটাকে সীমিত শক্তি দিয়েই যতদূর সম্ভব আধুনিকায়ন, সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করার আমরা চেষ্টা করছি। নতুন ইউনিয়নগুলো যুক্ত করার মাধ্যমে ১৮টি ওয়ার্ড করেছি। এখানে খেলার মাঠ, পাবলিক টয়লেটসহ নানা নাগরিক সুবিধা সৃষ্টির জন্য প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে এই নতুন ঢাকা আরো সুন্দর হয়ে উঠবে।
গতকাল রবিবার দুপুরে ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ-১)’ শীর্ষক প্রকল্পের কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডিএনসিসির ৪৪নং ওয়ার্ডের কাঁচকুড়া হাইস্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। ঘন বাসতিপূর্ণ হরিরামপুর একসময় অত্যন্ত অবহেলিত ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্প সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনজীবিকার মান আরো উন্নত হবে এবং মানুষ স্বাস্থ্যকরভাবে বসবাস করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। এ সময় সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং স্থানীয় মেয়র মো. আতিকুল ইসলামও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ওপর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম জাকারিয়া হোসেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন ওয়ার্ড উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের দায়িত্বে থাকা ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়ানও আমারই করা। যখনই তাদের কোনো কাজ দিয়েছি, তারা তা সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন করছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় তারা জনগণের পাশে থেকে সেবা করে যাচ্ছেন।
তার সরকারের প্রচেষ্টায় উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশন প্রাপ্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আজ একটা সম্মানজনক জায়গায় আমরা আসতে পেরেছি। যেটা ধরে রেখেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নাগরিক সুবিধাটাও বাড়াতে হবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারার মতো এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরো উন্নয়নের জন্যও সংশ্লিষ্ট মেয়রকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে রাজধানীর ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে এবং পথচারীদের চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন। সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের যারা ইঞ্জিনিয়ার বা আর্কিটেক্ট, যখন তারা কোনো প্ল্যান করবেন অন্তত ফুটপাতটা যেন মানুষের হাঁটার যোগ্য থাকে এবং সেটা যেন দখল না হয় যেদিকে দৃষ্টি দিয়েই করতে হবে। আর কাউকে দোষ দেব না, আমাদের প্ল্যান করার সময়ই এই সর্বনাশটা হয়ে যায়। যেটাকে তিনি ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেও উল্লেখ করেন।
ডিএনসিসির আওতায় উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত হরিরামপুর ইউনিয়ন এবং পূর্বাঞ্চলে উত্তরখান, দক্ষিণখান, বাড্ডা, বেরাইদ, বুমনি, সাঁতারকুল ও ভাটারা ইউনিয়নের এলাকাসমূহের ১৮টি ওয়ার্ডকে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চলমান প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে এই ১৮টি ওয়ার্ডে বসবাসরত জনসাধারণের নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। সেইসঙ্গে বিদ্যমান জলাবদ্ধতা দূরীভূত হবে এবং নাগরিক সেবার মান বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ডিএনসিসির কর্মকর্তারা জানান, নতুন ওয়ার্ডের উন্নয়নের লক্ষ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন হয়েছে। অ্যাকশন মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ধাপে ধাপে সড়ক, নর্দমা, ফুটপাতের উন্নয়ন কাজ করবে। প্রথম ধাপে ৪ হাজার ২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার এবং পরবর্তী কয়েক ধাপে আরো অন্তত ২২ হাজার কোটিসহ মোট ২৬ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করা হবে।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাস্টারপ্ল্যানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নতুন ওয়ার্ডের মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। আমরা নতুন এলাকাগুলোকে সম্পূর্ণ পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। পরিকল্পিত ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন কার্যক্রমের ফলে এসব ওয়ার্ডগুলোর চেহারাই বদলে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়