এফএএস ফাইন্যান্সের ৭০ কোটি টাকা লোপাট : দুদকের দুই মামলায় পি কে হালদারসহ আসামি ৩৫

আগের সংবাদ

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান, প্রথম দিনেই দুই পক্ষে হতাহত শতাধিক : কিয়েভ ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ

পরের সংবাদ

দিশেহারা আট শতাধিক গ্রাহক : পলাশে একশ কোটি টাকা হাতিয়ে সমিতি লাপাত্তা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. তারেক পাঠান, পলাশ (নরসিংদী) থেকে : প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে শাহ্ সুলতান এমসিএস কো-অপারেটিভ সমবায় সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। জেলার প্রায় আট শতাধিক গ্রাহক তাদের আমানতের অর্থ হারিয়ে এখন নিঃস্ব প্রায়। অর্থ ফেরত পেতে দিশেহারা হয়ে জেলা সমবায় অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ আদালতে ঘুরছেন অনেকে। করছেন মামলা, দিয়েছেন বিভিন্ন দপ্তরে প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১০ সালের দুই মার্চ শাহ্ সুলতান এমসিএস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে জেলা সমবায় অফিস থেকে নিবন্ধন পায় প্রতিষ্ঠানটি। যার নিবন্ধন নং ৯৫। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি জেলা সদর ও বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে দৃষ্টিকাড়া স্থানে নামিদামি মার্কেটে অফিস ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। খেটে-খাওয়া মানুষ ও মধ্যবিত্তদের উচ্চহারে মুনাফা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ জমা করার জন্য জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। প্রতিষ্ঠানটি মানি রিসিটে লেখা আছে ‘ইসলামী শরীয়াহ্ মোতাবেক পরিচালিত, সরকারকর্তৃক অনুমোদিত ও নিয়ন্ত্রিত’। সমিতির কর্মকর্তাদের মন ভোলানো কথা দিয়ে সদস্যদের কাছ থেকে মাসিক সঞ্চয় ও সাপ্তাহিক সঞ্চয়ের কথা বলে টাকা উত্তোলন করতেন সমিতির লোকজন। শুরু থেকে গ্রাহকদের আমানত ও মুনাফার টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরিয়ে দেয়ায় প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকে।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন প্রকল্পে সঞ্চয় স্কিমের নাম করে লোভনীয় মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে এফডিআর ও ডিপিএসের অর্থ জমা রাখত আলাদা-আলাদা মানি রিসিটে। যার মধ্যে স্বদেশ টেক্সটাইল মিল্স লিমিটেড, রেজি. নং সি-১২১৪৫১, শাহ্ সুলতান প্রোপাইটিজ লিমিটেড রেজি. নং- সি-৮৩০১২/১০, শাহ সুলতান টেক্সটাইল লিমিটেড, রেজি. নং-১০০৬৯০ উল্লেখযোগ্য। প্রতিষ্ঠানটি মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীও নিয়োগ দিয়েছিল। আমানতের এ টাকা সংগ্রহ করে সমিতির পরিচালনা কমিটি এখন আত্মগোপনে রয়েছে। সমিতির সদস্য পলাশ উপজেলার শিল্পাঞ্চল কলেজের প্রভাষক হাবিবুর রহমান জানান, তার নিজের ও স্ত্রীর নামে ১২ লাখ টাকা জমা রেখেছেন এই সমিতিতে। বর্তমানে সমিতির কাউকেই খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে শাহ্ সুলতান এমসিএস লিমিটেড কো-অপারেটিভ সমিতির কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে। জেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. সালমান ইকবাল জানান, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সমিতির নিবন্ধন বাতিল করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, গ্রাহকদের যে মামলাগুলো তদন্তের দায়িত্ব পিবিআই পেয়েছে, সেগুলোর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। নরসিংদী জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান জানান, ইতোমধ্যে আমরা জেলা সমবায় সমিতির মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। জেলা সমবায় কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, এটি দ্রুত তদন্ত করে জানাবেন। প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়