নাসির-তামিমার বিয়েকাণ্ডে মামলা : অভিযোগ গঠনের আদেশ ৯ ফেব্রুয়ারি

আগের সংবাদ

ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন চূড়ান্ত : যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন তথ্য, আইসোলেশনের সময়সীমা ৫ দিনের বেশি চান বিশেষজ্ঞরা

পরের সংবাদ

অপু-বিজয় ঝলকে সিলেটের প্রথম জয় : বরিশালকে হারিয়ে শীর্ষে কুমিল্লা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথম দুই ম্যাচে হারের পর পরশু ফরচুন বরিশালকে হারিয়ে হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসেছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। কিন্তু এক ম্যাচ না যেতেই গতকাল ফের সেই হারের বৃত্তে প্রবেশ করেছে দলটি। এবার মাশরাফি, রিয়াদ ও তামিমের ঢাকাকে হারের স্বাদ দিয়েছে সিলেট সানরাইজার্স। নাজমুল ইসলাম অপুর ঘূর্ণি জাদুর পর ব্যাট হাতে এনামুল হক বিজয়ের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে মিনিস্টার ঢাকাকে উড়িয়ে দিয়েছে সিলেট সানরাইজার্স। গতকাল বিপিএলের চতুর্থ দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি লড়াইয়ে নামে ঢাকা-সিলেট। আগে ব্যাটিং করে ব্যাটসম্যানদের বাজে পারফরম্যান্সে টেনেটুনে ১০০ রান করে ঢাকা। রান তাড়া করতে নেমে ১৮ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিলেট। এবার বিপিএলে ৪ ম্যাচে অংশ নিয়ে ৩ ম্যাচেই হেরেছে ঢাকা। যা তাদের নামের সঙ্গে বেমানান। আগে ব্যাট হাতে ব্যাটসম্যানদের হতশ্রী পারফরম্যান্স, টেস্ট মেজাজে ব্যাটিংয়ে মিনিস্টার ঢাকার স্কোর তিন অঙ্কের ঘরে যাওয়ার আগেই গুটিয়ে যাচ্ছিল, শেষে রুবেলের ব্যাটেই কোনোমতে ১০০ পার করেছে ঢাকা। এক ছক্কা ও এক চারে ৬ বলে ১২ রান করেন রুবেল। তার এই ইনিংসটি না হলে চলতি আসরে সর্বনিম্ন রানে অলআউটের লজ্জা পেত ঢাকা। এর আগে ৯৬ রান করেছিল সিলেট। রুবেলের আউটে ৮ বল আগে ঢাকার ইনিংসের ইতি ঘটে। তার উল্টো ব্যাটিং করেছেন মোহাম্মদ নাঈম। ৫০ স্ট্রাইকরেটে ৩০ বলে ১৫ রান করেন জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলের এই ওপেনার! আউট হয়েছেন ক্রিজে সেট হয়ে।
ঢাকার শুরুটা হয়েছিল বাজেভাবে। ১৭ রানে দলটি হারিয়ে ফেলে ৩ উইকেট। এরপর নাঈম-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জুটিতে কিছু রান পায় ঢাকা। নাঈমের আউটে ভাঙে ৪১ বলে ৪০ রানের জুটি। কিন্তু এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের টেস্ট মেজাজে ব্যাটিংয়ে দলটি আরো বিপদে পড়ে। ৩ চারে মাহমুদউল্লাহ ফেরেন ২৬ বলে ৩৩ রান করে। চাপের মধ্যে ঢাকা আবার বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়। আন্দ্রে রাসেলের ব্যাট হয়ে প্যাডে বল লাগলেও আম্পায়ার আউট দিয়ে দেন। শুভাগত ১৬ বলে করেন ২১ রান কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি।
সিলেটের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন অপু। ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়েছেন তিনি। এছাড়া ৩ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। ২ উইকেট নেন সোহাগ গাজী। ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন অপু।
ঢাকার দেয়া ১০১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে প্রথম উইকেট হারায় সিলেট। মাশরাফির ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে রুবেল হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ২১ বলে ১৬ রান করা ক্যারিবীয় ওপেনার লেন্ডল সিমন্স। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুন ও এনামুল হক বিজয় যোগ করেন ৩৮ রান। ইনিংসের ১১তম ওভারে হাসান মুরাদের বলে আউট হওয়ার আগে ১৫ বলে ১৭ রান করেন মিঠুন। কলিন ইনগ্রামকে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলের জয় নিশ্চিত করেন এনামুল হক বিজয়।
তবে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি বিজয়। ইনিংসের ১৭তম ওভারে নিজের স্পেল শেষ করতে এসেছিলেন মাশরাফি। সেই ওভারের তৃতীয় বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪৫ বলে ৪৫ রান করা বিজয়। সেই ওভারের শেষ বলেই ম্যাচ জিতে যায় সিলেট। বিপিএলে গতকাল দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে নাহিদুল ইসলামের ঘূর্ণিতে নাজেহাল সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দেয়া ১৫৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৯৫ রানে অলআউট হয়ে যায় সাকিব আল হাসানের দল। ৬৩ রানে জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলতি আসরে টানা দ্বিতীয় জয় নিশ্চিত করে কুমিল্লা। একই সঙ্গে দুই ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্টে টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে ইমরুলের দল।
বরিশালের লক্ষ্য তাড়ার কাজটি পুরোপুরি কঠিন করে তুলেছেন অফস্পিনার নাহিদুল ইসলাম। পাওয়ার প্লেতে দুই ওভারসহ নিজের ৪ ওভারের স্পেলে মাত্র ৫ রান খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। যা কিনা বিপিএল ইতিহাসে এক ম্যাচে সবচেয়ে কম রান দেয়ার রেকর্ড।
শুধু কিপটে বোলিং করাই নয়, প্রথমে সৈকত আলি ও সাকিব আল হাসানকে ফিরিয়ে কুমিল্লাকে আনন্দে ভাসিয়েছেন নাহিদুল। পরে ক্যারিবীয় দানব, দ্য ইউনিভার্স বস ক্রিস গেইলকে ফ্লাইটে বোকা বানিয়ে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে বরিশালের মেরুদণ্ডই যেন ভেঙে দেন এ অফস্পিনার। নাহিদুলের এমন বোলিংয়ের পর আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি বরিশালের পক্ষে। তাদের ইনিংসটা কোনোমতে ৯৫ রানে গিয়েছে মূলত বাঁহাতি ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর কল্যাণে। কুমিল্লার পক্ষে নাহিদুলের ৫ রানে ৩ উইকেট ছাড়াও দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন শহিদুল ইসলাম, তানভির ইসলাম ও করিম জানাত। কিপটে বোলিং করে পরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন নাহিদুল ইসলাম।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে কুমিল্লা। ক্যামেরন ডেলপোর্টের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন মাহমুদুল হাসান জয়। দুই ব্যাটসম্যান ঝড় তোলেন নিজ ব্যাটে। প্রথম ৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে জমা করেন ২৯ রান। চতুর্থ ওভারে খানিক ছন্দপতন। ডেলপোর্টের লাগাম টেনে ধরেন নাঈম হাসান।
ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে বলের লাইন হারিয়ে স্টাম্পিং হন ডেলপোর্ট। ১৩ বলে ১৯ রান করেন তিনি।
৭১ রানে ৩ উইকেট হারানো কুমিল্লার হাল ধরেন জয় আর মুমিনুল হক। চতুর্থ উইকেটে দুজন যোগ করেন ৪৪ রান।
এই জুটি ভাঙেন জ্যাকব লিনটট। শর্ট থার্ডম্যান অঞ্চলে ক্রিস গেইলের তালুবন্দি হন জয়। সমাপ্তি ঘটে জয়ের ৩৫ বলে ৪৮ রানের ইনিংসের। মুমিনুল ২৩ বলে ১৭ রান করে সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পিং হন। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ৫ বলে ৮ রান করে বিদায় নেন। শেষ দিকে করিম জানাত ১টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ১৬ বলে ২৯ রান করেন। এতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৮ রান সংগ্রহ করেছে কুমিল্লা। বরিশালের পক্ষে ব্রাভো ৩ এবং সাকিব ২ উইকেট নেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়