চট্টগ্রামে রিকশা-বাসের সংঘর্ষে যাত্রী নিহত

আগের সংবাদ

ইসি গঠন বিল ‘তড়িঘড়ি’ পাস : বিএনপি ও জাপার তীব্র বিরোধিতা > সার্চ কমিটিতে থাকবেন একজন নারী সদস্য

পরের সংবাদ

ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন চূড়ান্ত : যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন তথ্য, আইসোলেশনের সময়সীমা ৫ দিনের বেশি চান বিশেষজ্ঞরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ , ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ

সেবিকা দেবনাথ : দেশে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তি প্রথম শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এরপরই এই ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তি এবং ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে করণীয় কী হবে, রোগীর চিকিৎসা কোন পন্থায় চলবে সেই বিষয়টি নির্ধারণ করতে ওই বছরই মার্চ মাসে করোনা প্রতিরোধে ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন তৈরি করা হয়। সংক্রমণের দুই বছর পেরিয়ে গিয়ে ভাইরাসটির নতুন ধরন ওমিক্রনে সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার পর গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে বাংলাদেশেও সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। সংক্রমিতদের ক্ষেত্রে দেখা দেয় নতুন নতুন উপসর্গ। উপসর্গ ভিন্ন এবং সংক্রমণের মাত্রা মৃদু হওয়ায় অনেকেই হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। আক্রান্ত ব্যক্তি কত দিন আইসোলেশনে থাকবেন তা নিয়েও দেখা গিয়েছে প্রশ্ন। এ ছাড়া করোনায় সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাদের চিকিৎসায় যেসব ওষুধ ব্যবহার করা হতো (আইভারমেকটিন বা এরিথ্রোমাইসিন) সেগুলো এখনো অনেক হাসপাতালে ব্যবহৃত হচ্ছে। মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীদের চিকিৎসায় এসব ওষুধ ব্যবহার নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। এই বিষয়গুলো নির্ধারণ করতেই করোনা চিকিৎসায় পুরনো ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন সংশোধন করে নতুন করে আরেকটি গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে।
গতকাল বুধবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল বুলেটিনে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক (সংক্রমক রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ) ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ওমিক্রনের সংক্রমণ প্রতিরোধে ইতোমধ্যে ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন করা হয়েছে। যা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ইতোমধ্যে আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। ক্লিনিক্যাল গাইডলাইনটি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। নতুন নতুন তথ্য দিয়েই গাইডলাইন সাজানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ওমিক্রনের যে উপসর্গ আছে, সেগুলো নতুন ওই গাইডলাইনে যোগ করা হয়েছে। এর বাইরে অন্য কোনো উপসর্গ রয়েছে কিনা সেটি খুঁজে দেখা হচ্ছে।
২৫ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, করোনা চিকিৎসায় পুরনো ট্রিটমেন্ট প্রটোকল কিছুটা সংশোধন করে নতুন করে আরেকটি ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে এখন করোনা আক্রান্তদের আইসোলেশনে থাকার সময়সীমা কত হতে পারে সেই বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সরকার এই সময়সীমা ৫ থেকে ৭ দিন করার বিষয়ে ভাবছে বলেও জানান মন্ত্রী।
করোনা আক্রান্তদের আইসোলেশনে থাকার সময়সীমা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য – যাদের করোনা উপসর্গ রয়েছে তাদের উচিত ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকা। জার্মানি, জর্ডানের মতো দেশ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ করে এখনো তার নাগরিকদের ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকতে বলছে। ফ্রান্স ও জাপানের মতো কিছু দেশ এ সময়সীমা ১০ দিনে সীমিত করেছে। অনেক দেশ তা ৭ দিন এবং সম্প্রতি ইংল্যান্ডে তা নেমে এসেছে ৫ দিনে।
তবে আমাদের দেশে আইসোলেশনে সময়সীমা ৫ দিনে করার পক্ষে নন বিশেষজ্ঞরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোভিড-১৯ বিষয়ক ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সদস্য ভোরের কাগজকে বলেন, আমাদের দেশে আইসোলেশনের সময়সীমা ৫ দিনে নামিয়ে আনাটা ঠিক হবে না। কারণ, আমাদের দেশের পরিবারগুলোতে সদস্য সংখ্যা বেশি। তাছাড়া ঘনবসতিও। ফলে ৫ দিন খুব কম সময়। সময় কম হলে সংক্রমিত ব্যক্তিটি কাজে হয়তো যেতে পারবেন, কিন্তু সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যাবে।

গতকাল রাতে কোভিড-১৯ বিষয়ক ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নির্ধারণ করা হয়।
গত মঙ্গলবার ওমিক্রনের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেসরকারি হাসপাতালের প্রস্তুতি নিয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় হাসপাতাল মালিক ও চিকিৎসকরা বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় আইভারমেকটিন বা এরিথ্রোমাইসিন ওষুধ ব্যবহার না করার নির্দেশনা থাকলেও এখনো কিছু হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসায় এসব ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। যা রোগীর জন্য ক্ষতিকর। মৃদু উপসর্গযুক্ত ওমিক্রনে সংক্রমিত ব্যক্তির চিকিৎসা পদ্ধতি কেমন হবে তা নির্ধারণ করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়