নির্বাচনী আইন প্রণয়নসহ ৫ দফা প্রস্তাব এনপিপির

আগের সংবাদ

বদলে গেছে ‘প্রাচ্যের ড্যান্ডি’

পরের সংবাদ

জিডিপি প্রবৃদ্ধি : বৈষম্য বিলোপে গুরুত্ব দিতে হবে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে সাফল্যে বাংলাদেশ বিশ্বে অপ্রতিদ্ব›দ্বী হয়ে উঠেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। পরবর্তী অর্থবছর অর্থাৎ ২০২২-২৩-এ প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৯ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়া এবং মাথাপিছু আয়ের ঊর্ধ্বগতি খুবই আশাব্যঞ্জক। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে মাথাপিছু আয় ও মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধি রেকর্ড পরিমাণে অর্জিত হয়েছে বর্তমান সরকার আমলে। এমন অর্জন সরকারের মুকুটে সাফল্যের পালক যোগ করেছে। এর জন্য সরকারের অভিনন্দন প্রাপ্য। গত বুধবার বিশ্বব্যাংকের ওয়াশিংটন কার্যালয় থেকে পাঠানো ‘গেøাবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস ২০২২’ বা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়, প্রবৃদ্ধির হার কমবে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলেও। ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধির হার কমে হবে ৬ শতাংশ। অথচ ২০২২ সালে প্রবৃদ্ধির হার প্রাক্কলন করা হয় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বাংলাদেশ। এই অঞ্চলে শীর্ষস্থানে উঠে আসবে মালদ্বীপ। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১১ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশটি ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। তবে প্রবৃদ্ধি অর্জনে দক্ষিণ এশিয়ায় (আগের অর্থবছরে মাইনাস ৭ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে) দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে ভারত। ভুটানের প্রবৃদ্ধির হার হবে ৫ দশমিক ১ শতাংশ, নেপাল ৩ দশমিক ৯ শতাংশ এবং পরের বছর ৪ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধির হার হবে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং পরের বছর ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় খারাপ অবস্থানে থাকবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের পালে জোর হাওয়া লেগেছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক, তার নেতৃত্বেই রপ্তানি খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে প্রকট বৈষম্যের এ সমাজে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির সুফল সবাই পাচ্ছেন কিনা, সেটা বড় প্রশ্ন। বিশ্লেষকদের মতে, জিডিপি বাড়লেও ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাই ধনীরা সম্পদের পাহাড় গড়লেও সুযোগ-সুবিধার অভাবে দরিদ্ররা দরিদ্রই থেকে যাচ্ছে। সামাজিক বৈষম্যের এই দুষ্টচক্র ভাঙতে না পারলে সংকট আরো তীব্র হতে পারে। একদিকে দারিদ্র্য কমছে, অন্যদিকে ধনী-গরিবের মধ্যে আয়ের ক্ষেত্রে বৈষম্য বাড়ছে। এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়। মূলত সম্পদের অসম বণ্টন এবং অবৈধ আয়ের উৎসের কারণে আয় বৈষম্য প্রকট হচ্ছে। জিডিপির ঊর্ধ্বগতির সুফল সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেয়ার জন্য ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। এজন্য ঘুষ, দুর্নীতি, কর ফাঁকির বিষয়টি কঠোরভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। বর্তমান সরকার যে দারিদ্র্য বিমোচনে তৎপর সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। নানা বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও অর্থনীতির ক্ষেত্রগুলোতে উন্নতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধিসহ কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো, বাণিজ্য, বৈদেশিক আয় ইত্যাদি খাতেও ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। মানুষের সচেতনতাও বেড়েছে আগের তুলনায়। আমরা অবশ্যই প্রত্যাশা করি, এই অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারা অব্যাহত থাকুক। পাশাপাশি জরুরি হচ্ছে, বৈষম্য কমাতে টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। বৈষম্য বিলোপ সম্ভব হলেই জিডিপি বৃদ্ধির শতভাগ সুফল দেশবাসী পেতে পারে, যা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়