বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি : একাত্তরের বীর সেনা শহীদ লে. কর্নেল মুহম্মদ আব্দুল কাদিরের জন্মভিটায় স্মৃতি কমপ্লেক্স ও স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে। গত শনিবার বদরগঞ্জের দামোদরপুর ইউনিয়নের চিকলী নদীর তীরে ওই স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আব্দুল কাদিরের ছেলে সাংবাদিক নাদীম কাদিরের সভাপতিত্বে এতে অতিথি ছিলেন রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, রক্তধারা ৭১-এর উপদেষ্টা ও কুমিল্লা-১১ আসনের এমপি এরমা দত্ত। দেশের বিভিন্ন এলাকার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা এতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে অতিথিরা নবনির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি সুইট, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবার রহমান হাবলু, মুক্তিযুদ্ধের গবেষক বায়েজিদ সারওয়ার, রক্তধারা ৭১-এর সম্পাদক মিজান তালুকদার, স্থপতি ফুয়াদ হায়দার প্রমুখ।
বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামের আবুল হোসেন মিয়ার সন্তান শহীদ লেফট্যানেন্ট কর্নেল মুহম্মদ আব্দুল কাদির। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তার নামেই নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসের নামকরণ করা হয়। ১৯২৯ সালের ২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন কর্নেল কাদির। ১৯৪৯ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ৭০ নম্বর সরকারি বাড়িতে পরিবারসহ বসবাস করতেন। পাকিস্তানি সেনারা জানতে পেরে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় তাকে। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন কর্নেল কাদির। ৩৬ বছর পর ২০০৭ সালে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে বাবার কবর খুঁজে পান পুত্র নাদীম কাদির। ২০১১ সালে দেহাবশেষ তার নামে করা নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পুনরায় দাফন করা হয়।
নাদীম কাদির বলেন, নিখোঁজ হওয়ার ৩৬ বছর পর বাবার কবরের সন্ধান পাই। পরিত্যক্ত অবস্থায় কবরটি পড়ে ছিল। এই দীর্ঘ সময় বাবার কবরের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছি। বাবার কবরের স্মৃতি পেয়ে তার জন্মভিটায় স্মৃতিস্তম্ভসহ একটি কমপ্লেক্স নির্মাণ করার পরিকল্পনা নিই। যা আজ বাস্তবে রূপ লাভ করে।