কাগজ প্রতিবেদক, রংপুর : বিত্তশালীদের টার্গেট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অশ্লীল ভিডিও ধারণের পর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে রংপুরে এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। একটি চক্র গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে সুকৌশলে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন তিনি। আটক কানিজ ফাতেমা ওরফে ফাতেমা কানিজ রংপুর পুলিশ হাসপাতালের পুলিশ পরিদর্শক হাবিবুর রহমানের স্ত্রী। গত মঙ্গলবার বিকালে নগরীর সেনপাড়া এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাকে আটক করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। গতকাল বুধবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রশিদ।
মেট্রোপলিটনের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মারুফুল ইসলাম বলেন, শুনেছি কানিজ ফাতেমার সঙ্গে হাবিবুর রহমান থাকেন না। এ ঘটনায় আর কে কে সম্পৃক্ত তা তদন্ত করে দেখা হবে। মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রশিদ বলেন, অপরাধী চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে কানিজ ফাতেমাকে আটক করা হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। আর পুলিশ হাসপাতালের পুলিশ পরিদর্শক হাবিবুর রহমান বলেন, ?কানিজ ফাতেমার সঙ্গে এখন আমার সম্পর্ক নেই। আমাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে।
পুলিশ জানায়, কয়েকজন নারী ও পুরুষকে নিয়ে একটি চক্র গড়েছেন কানিজ ফাতেমা। চক্রের নারী সদস্যদের দিয়ে বিত্তশালীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলতেন। এরপর বাসায় ডেকে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও তুলে ব্লাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন। আসমানি, কানিজ ফাতেমা ও আরো কয়েকজন নারী নিয়ে এই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। অভিজাত ফ্ল্যাটে দীর্ঘদিন এসব কর্মকাণ্ড চললেও পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী হওয়ায় ভয়ে কিছু বলতেন না স্থানীয়রা।
এর আগে সোমবার এই চক্রের সদস্য নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় এলাকার শাহরুখ করিম অনিক ও তার স্ত্রী আসমানি আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব-১৩। অনিক ও তার স্ত্রী আসমানি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের জবানবন্দিতে উঠে আসে কানিজ ফাতেমার নাম। এরপরই অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে পুলিশ।
সূত্র জানায়, কানিজ ফাতেমাকে নিয়ে তার অন্য সহযোগীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এই চক্রে আর কে কে আছেন তা খতিয়ে দেখছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
র্যাব জানায়, অনিক ও তার স্ত্রী আসমানিকে সোমবার রাতে কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করেছিল র্যাব। রাতেই রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তারা। জবানবন্দিতে পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের স্ত্রী কানিজ ফাতেমার নাম বলেছেন ওই দম্পতি। একই সঙ্গে চক্রের অন্যান্য সদস্যের পরিচয় ও নানা অপরাধ সম্পর্কে জানিয়ে দেন। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কানিজ ফাতেমাকে আটক করে পুলিশ
র্যাব-১৩-এর সহকারী পরিচালক মাহমুদ বশির আহমেদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ওই দম্পতি বিভিন্ন ব্যক্তিকে জিম্মি করে টাকা আদায় এবং নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।