মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র : মাইন বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আহত

আগের সংবাদ

সংসদ প্রাণবন্ত করার তাগিদ : বিশ্লেষকদের মতে, ‘৭০ ধারা বড় বাধা’, সংশোধনীর দাবি, কার্যকর বিরোধী দলের বিকল্প নেই

পরের সংবাদ

কিছুক্ষণের জন্য কেবিনে নেয়া হয় খালেদা জিয়াকে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গোসল করাতে কিছুক্ষণের জন্য কেবিনে নেয়া হয়েছিল। গতকাল রবিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে তাকে ৪২১৯ নম্বর সিসিইউ বেড থেকে ৭২০৫ নম্বর কেবিনে নেয়া হয় বলে হাসপাতালের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র ভোরের কাগজকে নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, গত ১৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। গৃহকর্মী ফাতেমাসহ সিসিইউ নার্সরা মিলে তাকে কেবিনে নিয়ে যান। প্রতি সপ্তাহেই একদিন তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য কিছু সময়ের জন্য কেবিনে নেয়া হয়। গোসল শেষে তাকে আবারও সিসিইউতে নেয়া হয়। কারণ সিসিইউতে গোসল করার সুযোগ নেই।
বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এই ভালো; এই খারাপ। শরীরের বিভিন্ন প্যারামিটার নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। কয়েক দিন ধরেই কমে যাচ্ছে হিমোগেøাবিনের মাত্রা। অন্ত্রে থেমে থেমে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। রক্তক্ষরণের উপক্রম দেখা দিলেই স্যালাইনের সঙ্গে ইনজেকশন দিয়ে থামানোর চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা। একই সঙ্গে তিন বেলা এন্টিবায়োটিক ওষুধ চলছে।
লিভার সিরোসিসের কারণে সব খাবার খেতে পারছেন না খালেদা জিয়া। স্যুপ, জুস জাতীয় তরল খাবারই বেশি খাচ্ছেন। এর সঙ্গে আতপ চালের নরম জাউভাত, ডিম পোচ আর পাতলা রুটি খাচ্ছেন। তার (খালেদা জিয়ার) ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি প্রতিদিন দুবেলা খাবার রান্না করে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। এ ছাড়া ডা. এ জেড এম জাহিদ সার্বক্ষণিক হাসপাতালে অবস্থান করেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুয়েকদিন পর পর গিয়ে দলীয় চেয়ারপারসনকে দেখে আসেন। তার বাইরে অন্য নেতাদের হাসপাতালে দলীয় চেয়ারপারসনকে দেখতে যাওয়ার অনুমতি নেই।
খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, গত ২৯ ডিসেম্বর ফের অন্ত্রে রক্তক্ষরণ হয় খালেদা জিয়ার। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় চলমান চিকিৎসায় তার সুস্থ হয়ে ওঠার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং যে কোনো সময় অপ্রত্যাশিত কোনো ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শরীরের বিভিন্ন প্যারামিটার উপরে উঠানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। কয়েক দিন ধরেই কমে যাচ্ছে হিমোগেøাবিনের মাত্রা। রক্ত কিংবা ওষুধ দিয়ে তার মাত্রা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত রক্তও আর দেয়া যাচ্ছে না তাকে। এতে পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান চিকিৎসায় তার সুস্থ হয়ে ওঠার কোনো সুযোগ নেই। বরং তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। যতই দিন যাচ্ছে তার স্বাস্থ্যঝুঁকি ততই বেড়ে যাচ্ছে। এখন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার হিমোগেøাবিন ও প্লাটিলেট কমে গেছে, তার শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে। চিকিৎসকদের আশঙ্কা সময়োপযোগী সঠিক ও উন্নত চিকিৎসা না পেলে তিনি এমন এক জায়গায় উপনীত হবেন, যখন কোনো চিকিৎসা আর কাজে আসবে না।
গত ২৮ নভেম্বর গুলশানের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসক টিমের সদস্য এফ এম সিদ্দিকী জানান, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। বাংলাদেশের চিকিৎসায় তার পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য অথবা জার্মানির এডভান্স ট্রিটমেন্ট সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দিলে তিনি সুস্থ হতে পারেন। এজন্য খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেই আবেদন পাঠায় আইন মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে তাকে বিদেশে নেয়ার আইনি কোনো সুযোগ নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়