পরিকল্পনামন্ত্রী : দেশে রাজনীতিবিদের চেয়ে আমলাতন্ত্রের দাপট বেশি

আগের সংবাদ

শ্যামল দত্ত’র প্রত্যয় : চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই এগিয়ে যাবে ভোরের কাগজ

পরের সংবাদ

বাউফলে জিপিএ ৫ পেল মান্তা সম্প্রদায়ের অভি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : এসএসসি পরীক্ষায় বাউফলে মান্তা সম্প্রদায়ের আবু ইউসুফ অভি নামের এক ছাত্র পেল জিপিএ ৫। এই সম্প্রদায় থেকে এই প্রথমবার কেউ এসএসসি পাস করেছে। অভি বাউফলের কালাইয়া ইউনিয়নের বগী তুলাতলা এলাকার মান্তা সম্প্রদায়ের ফরিদ সর্দার ও রুনু লায়লার ছেলে। ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে অভি সবার ছোট।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙনের শিকার শতাধিক পরিবার বগী তুলাতলায় আশ্রয় নিয়েছে। নিজেদের কোনো ভিটাবাড়ি না থাকায় যুগের পর যুগ নৌকায় বসবাস করছেন এই সম্প্রদায়ের লোকজন। মান্তা সম্প্রদায়ের সবাই তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। ভাসমান হওয়ায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত তারা। জীবিকার টানে সন্তান নিয়ে মাছ শিকার করায় লেখাপড়ার সুযোগ হয় না এ সম্প্রদায়ের শিশুদের। কয়েক বছর আগে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাঠদান কার্যক্রম শুরু করে। ওই সংস্থার মাধ্যমে অভি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে। এরপর জহিরুল হক নামের এক শিক্ষকের সহায়তায় কর্পূরকাঠী ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। অভি পঞ্চম শ্রেণিতে জিপিএ ৫ পেয়ে এলাকায় সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এর পর অভি কর্পূরকাঠী ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতে এবং সর্বশেষ এসএসসি পরীক্ষায় সে জিপিএ ৫ পায়। বর্তমানে অভিকে নিয়ে এলাকায় কৌতূহলের শেষ নেই।
কর্পূরকাঠী ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি ঘোষ বলেন, দারিদ্র্যের কারণে অভির উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন যখন ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল তখন আমরা এক শিক্ষকের বাড়িতে রেখে তাকে লেখাপড়া করার সুযোগ করে দেই। অভি এখন মান্তা সম্প্রদায়ের গর্ব। এই সম্প্রদায় থেকে এই প্রথম কেউ এসএসসি পাস করেছে।
অভি বলে, এবার এইচএসসির পর্ব শুরু করতে হবে। বিভিন্ন সময় অনেকে আমাকে দান করেছেন। সেই দানের অর্থ আমি ব্যাংকে জমা করে রেখেছি। ভর্তি আর বই কিনতে জমানো টাকা ব্যয় করব। এই মুহূর্তে আমার কোনো উচ্চাকাক্সক্ষা নেই। শুধু লেখাপড়া করতে চাই। ভবিষ্যতে কী হব তা সময় বলে দেবে। এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে কিশোরগঞ্জে ৪ হাজার টাকা বেতনে একটি বেসরকারি হাসপাতালে পার্টটাইম কাজ করছি। খুব শিগগিরই বাউফলে এসে কলেজে ভর্তি হব। অভির বাবা ফরিদ সর্দার ও মা রুনু লায়লা বলেন, আমাদের নৌকায় জীবন। আমরা লেখাপড়ার কদর বুঝি না। এলাকার দশজনের দোয়া ও শিক্ষকদের সার্বিক সহযোগিতায় আমাদের ছেলেটা এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করেছে। মহান আল্লাহর কাছে দোয় চাইছি অভি যেন মানুষের মতো মানুষ হয়ে মান্তা সম্প্রদায় ও দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়