এবার রাজধানীতে গাড়িচাপায় সাইকেল আরোহী নিহত

আগের সংবাদ

প্রতিকারহীন মৃত্যুর মিছিল!

পরের সংবাদ

মুম্বাই টেস্টে চালকের আসনে ভারত : প্যাটেলের রেকর্ডের দিনে ৬২ রানে গুটিয়ে গেল কিউইরা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দারুণ জমে উঠেছে ভারত-নিউজিল্যান্ড টেস্ট। ক্ষণে ক্ষণে রং পাল্টাচ্ছে এ টেস্ট। একাই ভারতের ১০ উইকেট তুলে নিয়ে রেকর্ড গড়েছেন কিউই স্পিনার এজাজ প্যাটেল। ভারতের ৩২৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৬২ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস। ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং তোপে মাত্র দুই ব্ল্যাক ক্যাপস ব্যাটার দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন। অধিনায়ক টম লাথাম ১৪ বলে ১০ এবং কাইল জেমিসন ৩৫ বলে ১৭ রান করেছেন। অন্য কোনো কিউই ব্যাটার দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। ভারতের বোলারদের মধ্যে পেসার মোহাম্মদ সিরাজ ১৯ রানে ৩, অক্ষর প্যাটেল ১৪ রানে ২ এবং অশ্বিন ৮ রানে ৪ উইকেট লাভ করেন। অপর উইকেট তুলে নেন যাদব। মুম্বাই টেস্টে গতকাল ২৬৩ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ভারত। দিন শেষে ২১ ওভার ব্যাট করে ভারতের দুই ওপেনার মায়াঙ্কা এবং পূজারা ৬৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। ফলে ভারত এখন ৩৩২ রানের লিড পেয়েছে। হাতে রয়েছে ১০ উইকেট। মায়াঙ্কা ৩৮ ও পূজারা ২৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন। আজ তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবে ভারত। এ টেস্টে ফলাফল যে আসবে তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছিল।
পরশু (শুক্রবার) ম্যাচের প্রথমদিন ৪ উইকেট হারিয়ে ২২১ রান করেছিল ভারত। সব উইকেটই নিয়েছিলেন এজাজ। গতকাল শনিবার দ্বিতীয় দিন তার ঘূর্ণি ফাঁদে পড়ে আর ১০৪ রান তুলতে বাকি সব উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা। গতকাল ৬ উইকেটও নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঁ-হাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেল। ভারতের সব উইকেট নিয়ে ইতিহাস গড়েছেন কিউই স্পিনার প্যাটেল। তার জন্মস্থান মুম্বাইতে গড়লেন তিনি এই ইতিহাস। তিনিসহ টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৪ বছরের ইতিহাসে মাত্র ৩ জনের আছে এই কীর্তি। তিনজনই স্পিনার। ১৯৫৬ সালে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি গড়েছিলেন ইংল্যান্ডের জেমস চার্লস লেকার। ওই টেস্টে তিনি নিয়েছিলেন ১৯ উইকেট। তার ৪৩ বছর পর ঘরের মাঠ দিল্লিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে একই কীর্তি গড়েছিলেন ভারতের অনিল কুম্বলে। কুম্বলের ২২ বছর পর ভারতের মাটিতে ১০ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়লেন কিউই স্পিনার এজাজ। ১৯৫৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যানচেস্টার টেস্টে ৫৩ রানে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের অফস্পিনার জিম লেকার। পরে ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭৪ রানে ১০ উইকেট নেন ভারতের লেগস্পিনার অনিল কুম্বলে। চলতি শতকে প্রথম বোলার হিসেবে লেকার-কুম্বলের দলে যোগ দিলেন কিউই বাঁ-হাতি স্পিনার এজাজ। যিনি হয়তো খেলতে পারতেন ভারতের হয়েই। ৪৭.৫ ওভার বোলিং করে ১১৯ রান খরচায় এজাজের শিকার পুরো দশটি উইকেট। টেস্টে দশে দশ পাওয়া তিন স্পিনারের মধ্যে এজাজই বেশি (একশর উপরে) রান দিয়ে দশ উইকেট পেয়েছেন। এজাজের ইতিহাস গড়া ইনিংসে ভারতকে নিরাপদ সংগ্রহে পৌঁছে দেয়ার কৃতিত্বটা মায়াঙ্কের। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরিতে তিনি করেছেন ১৫০ রান। এছাড়া ফিফটি হাঁকিয়ে ৫২ রানে আউট হন অক্ষর। ভারতের ইনিংস থামে ৩২৫ রানে। ঘটনাটা ঘটিয়েই ফেললেন এজাজ প্যাটেল। মুম্বাই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভারতের ১০ উইকেটের সবই নিলেন নিউজিল্যান্ডের এই বোলার। সর্বশেষ ২২ বছর আগে এমন ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব। অনিল কুম্বলের কল্যাণে। দেড়শ বছরের ইতিহাসে এর আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন জিম লেকারও।
মুম্বাই টেস্টে শুভমন গিলকে ফিরিয়ে শুরুটা করেছিলেন এজাজ। এরপর টেস্টের প্রথম দিনেই চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহলিদের সাজঘরের পথ দেখিয়েছিলেন শূন্য রানে। সেদিনই আউট করেছিলেন শ্রেয়াস আয়ারকেও।
গতকাল যেন আরো ধারালো হয়ে উঠলেন এজাজ। গতকাল সকালেই অনন্য হয়ে গেলেন ঋদ্ধিমান সাহাকে আউট করে। নিউজিল্যান্ডের প্রথম কোনো স্পিনার হিসেবে প্রতিপক্ষে প্রথম ৫ উইকেটই তুলে নিয়েছিলেন এজাজ প্যাটেল। পরের বলেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে আউট করে শেষ পর্যন্ত ১০ উইকেট তুলে নেন তিনি। দুর্দান্ত ব্যাট করা মায়াঙ্ক আগারওয়ালই যত দুশ্চিন্তার কারণ ছিলেন। অক্ষর প্যাটেলকে নিয়ে সেই আগারওয়াল আরো ২৮ ওভার কাটিয়ে দিলেন। ততক্ষণে আবার ‘পারফেক্ট টেনে’র আলোচনা থেমে গিয়েছিল। ইনিংসের ১০০তম ওভারে আগারওয়ালকে (১৫০) উইকেটরক্ষকের হাতে বন্দি করে নিজের সপ্তম উইকেট তুলে নিলেন এজাজ। একটু পরই আরেক পথের কাঁটা অক্ষর প্যাটেলকেও (৫২)। আম্পায়ার আউট দিতে চাননি। কিন্তু রিভিউ নিয়ে ঠিকই নিজের উইকেট আদায় করে নিয়েছেন প্যাটেল।
পরের ওভারেই আর দেরি করেননি। দ্বিতীয় বলে জাদেজাকে ক্যাচ বানিয়েছেন।
চতুর্থ বলে মোহাম্মদ সিরাজ একটি চার মারলেও কিছু মনে করেননি প্যাটেল। ৯ উইকেট পেয়ে গেছেন। আরেকটি উইকেটেরই শুধু অপেক্ষা। মুত্তিয়া মুরালিধরনের মতো বোলারকেও যেখানে থামতে হয়েছিল, সে বাধায় আটকা পড়লেন না। সিরাজের স্লগ মিড অন পার হলো না। ইতিহাসে জায়গা করে নিলেন। ইনিংসশেষে তার বোলিং ফিগার দাঁড়াল- ৪৭.৫ ওভার, ৩ মেডেন, ৩৬ রান, ১০ উইকেট।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়