মাহমুদুর রহমান মান্না : খালেদা জিয়া এখন তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছেন

আগের সংবাদ

ওমিক্রন ঠেকাতে চার সুপারিশ

পরের সংবাদ

এলডিসি থেকে উত্তরণ : চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই প্রস্তুতি নিন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উত্তরণের সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। এই সুপারিশ নিঃসন্দেহে দেশের ভাবমর্যাদার জন্য গৌরবের। তবে দেশের জন্য চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা দুটিই অপেক্ষা করছে সামনে। যদিও স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশ থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর প্রস্তুতির সময় পাওয়া যাবে। বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যে দেশ জাতিসংঘ নির্ধারিত তিনটি মানদণ্ড পূরণের মাধ্যমে এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সিডিপির মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতার মান- এই তিন সূচকে নির্দিষ্ট মান অর্জন করে। এর তিন বছর পর এ বছর এই তিন সূচকে আবারো মান অর্জন করে। এ প্রেক্ষিতে এ বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশের নাম চূড়ান্ত করে সিডিপি। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ তার ভিত্তিতেই সুপারিশ অনুমোদন দিয়েছে। এই সুপারিশ নিঃসন্দেহে দেশের ভাবমর্যাদার জন্য গৌরবের। এ অর্জন অবশ্যই আমাদের আশাবাদী করে। জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পাশাপাশি নেপাল ও লাওসের ক্ষেত্রেও একই সুপারিশ করা হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় দ্বিতীয়বারের মতো এলডিসি থেকে উত্তরণের মানদণ্ড পূরণের সুপারিশ লাভ করে বাংলাদেশ। সিডিপি একই সঙ্গে বাংলাদেশকে ২০২১ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর প্রস্তুতিকালীন সুযোগ দেয়ার সুপারিশ করেছিল। উল্লেখ্য, উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে যেসব দেশ তুলনামূলক দুর্বল, সেসব দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭১ সালে প্রথম স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা করা হয়। বাংলাদেশ ১৯৭৫ সালে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার তিন শর্ত বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে ধরে রাখার সক্ষমতা দেখিয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী, বিচক্ষণ ও দক্ষ নেতৃত্বের কারণে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়া যেমন গৌরবের, তেমনি তা চ্যালেঞ্জেরও বটে। বাংলাদেশ এলডিসি হিসেবে বাণিজ্যে যে অগ্রাধিকার পায়, তার সবটুকু পাবে না। আবার বৈদেশিক অনুদান, কম সুদের ঋণও কমে আসবে। রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নতুন কিছু শর্ত পরিপালনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। অন্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় এগিয়ে থাকতে হলে বাংলাদেশকে এখন থেকেই জিএসপি প্লাস প্রাপ্তির শর্তগুলো পূরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। দেশের জনসংখ্যার ৬ কোটির বেশি মানুষ দরিদ্র হয়ে গেছে। দারিদ্র্যসীমা ৪০ শতাংশের ওপরে। সরকার দরিদ্র হওয়া, বেকারত্ব বৃদ্ধি পাওয়া, আয় কমে যাওয়া- এসব বিষয় কখনোই স্বীকার করতে চায় না। অথচ সবাই বিষয়গুলো দেখছে, বুঝছে এবং জানছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দিন দিন জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষ ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে প্রয়োজনের চেয়ে অর্ধেক জিনিসপত্র কিনে কোনো রকমে জীবনযাপন করছে। এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম গতিশীল করার প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করছে অনেক সমীকরণ। বিষয়গুলো মাথায় রেখে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়