মানিলন্ডারিং মামলা : হাইকোর্টে জামিন পাননি এসপিসি ওয়ার্ল্ডের শারমিন

আগের সংবাদ

জাহাঙ্গীর আজীবন বহিষ্কার : আ.লীগের সভায় সিদ্ধান্ত, মেয়র পদ হারাতে পারেন জাহাঙ্গীর > খালেদার টার্গেট আমি : প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

আঞ্চলিক ইস্যুতে জাইকার পাইপলাইন নির্মাণ বন্ধ : ঝিনাইগাতীতে সরকারের উদ্যোগ ব্যাহতের শঙ্কা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

খোরশেদ আলম, শেরপুর থেকে : জেলার ঝিনাইগাতীতে আঞ্চলিকতার ইস্যুতে জাইকার পাইপলাইন নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের উন্নয়ন ভাবনার উদ্যোগ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানি ব্যবসায়ীদের দাবি, ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর রাবার ড্যামের পানি নালিতাবাড়ী উপজেলায় দেয়া হলে সেচ মৌসুমে কৃষকরা সেচ সংকটে পড়বে। এ ইস্যু তুলে পাইপলাইন নির্মাণে বাধা সৃষ্টি করে তারা। বর্তমানে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৩ সালে উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের শালচুড়া-রাংটিয়া মৌজার মাঝামাঝি স্থানে মহারশি নদীতে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়। জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সি (জাইকার) ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হয় রাবার ড্যামটি। ২০১৬ সাল থেকে রাবার ড্যামের সুফল ভোগ করতে শুরু করেছেন কৃষকরা। স্বল্প মূল্যে পানি পেয়ে কৃষরাও খুশি। কৃষি ক্ষেত্রে ঘটেছে ব্যাপক উন্নয়ন। হয়েছে ৫ হাজার কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন।
উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, উপজেলার সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন নলকুড়া, গৌরীপুর ও ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের সেচ সুবিধার অভাবে যুগ যুগ ধরে অনাবাদি থাকা জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় এসেছে। ইতোমধ্যেই ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমি বোরো আবাদের আওতায় এসেছে। চলতি বোরো মৌসুমে আরো ১ হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আনার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতি বছর বোরো মৌসুমে এ রাবার ড্যামের ৪০ ভাগ পানি অপচয় হয়। অপরদিকে ভৌগোলিক কারণে সেচ সুবিধার অভাবে রাবার ড্যামের পার্শ্ববর্তী এলাকা নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নে যুগ যুগ ধরে প্রায় ১ হাজার একর জমিতে বোরো আবাদ করতে পারেন না এলাকার কৃষকরা। ফলে দিন দিন ভূমিহীনে পরিণত হতে শুরু করেছেন কৃষকরা।
নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীতে ২টি রাবার ড্যাম থাকলেও দূরত্বের কারণে ওই এলাকায় রাবার ড্যামের পানি সেচ কাজে সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। এছাড়া এসব এলাকার পাহাড়ি জমির মাটির নিচে প্রচুর পরিমাণে পাথর থাকায় গভীর-অগভীর কোনো নলকূপ স্থাপন করা ও সম্ভব হয় না। ফলে যুগযুগ ধরে জমিগুলো অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। ফলে এসব এলাকার কৃষকরা দিন দিন ভূমিহীনে পরিণত হচ্ছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পোড়াগাঁও ইউনিয়নের ওই অনাবাদি জমিগুলো আবাদের আওতায় আনতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি ২০১৬ সালে পরিকল্পনা গ্রহণ করে। মহারশি নদীর রাবার ড্যামের অপচয় হওয়া পানি আধুনিক পদ্ধতিতে কাজে লাগাতে এ নিয়ে গত ২ বছর ধরে জরিপ কাজ পরিচালনা চালায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। জরিপ শেষে মহারশি নদীর রাবার ড্যামের অপচয়কৃত পানি সেচ কাজে ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া হয়। পোড়াগাঁও ইউনিয়নের অনাবাদি জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় আনতে জাইকার ক্ষুদ্র পানি সম্পদ ২ প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মাটির নিচ দিয়ে পাইপলাইন নির্মাণকাজ হাতে নেয় সরকার। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারও নিয়োগ দেয়। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ ও শুরু করা হয়। ২০২২ সালে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। আর নির্মাণকাজ শেষ হলেই সেচ সুবিধা পাবে আরো প্রায় এক হাজার একর অনাবাদি জমি। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় পানি ব্যবসায়ী না জেনে না বুঝে আঞ্চলিকতার ইসু তুলে পাইপলাইন নির্মাণে বাধা সৃষ্টি করে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, পাইপলাইন নির্মাণ করা হলে ঝিনাইগাতী উপজেলার কৃষকদের সেচ সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং রাবার ড্যামের পানির অপচয় রোধ করে আরো ১ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা বাড়ানো সম্ভব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়