কাগজ ডেস্ক : বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম মানবিক ঘর তৈরির জন্য যুক্তরাজ্যের মর্যাদাপূর্ণ সনপদক পেয়েছেন। গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রথম স্থপতি হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কার জিতেছেন বাংলাদেশের এই স্থপতি। যুক্তরাজ্যের স্থপতি স্যার জনসনের নামে এই পুরস্কার দেয়া হয়।
সনের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুয়ায়ী, মানুষের জীবনে স্থাপত্যের গুরুত্ব ভালোভাবে বোঝার জন্য উৎসাহিত করে এ পুরস্কার। ২০১৭ সাল থেকে স্থপতি, শিক্ষাবিদ ও সমালোচকদের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর এ পুরস্কার দেয়া হয়। বিশিষ্ট স্থপতি, সমালোচক ও কিউরেটরদের একটি প্যানেল পুরস্কারের জন্য যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করেন, যার নেতৃত্বে থাকেন স্যার জনসন জাদুঘরের সাবেক ট্রাস্টি স্যার ডেভিড চিপারফিল্ড।
সনের ওয়েবসাইটে বলা হয়, মেরিনা প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভবন নকশা করার চর্চার ওপর গুরুত্ব দেন, যাতে নকশা স্থায়িত্বের চ্যালেঞ্জ নিতে পারে এবং গ্রহের ওপর আমাদের সামষ্টিক প্রভাব পড়ে। স্থপতি হিসেবে তিনি প্রশংসিত। এছাড়া তিনি নিজের সম্প্রদায়ের জন্য নিবেদিত শিক্ষক ও চ্যাম্পিয়ন।
পুরস্কার জেতার প্রতিক্রিয়ায় মেরিনা বলেন, প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটা কৌতুক। আগের বিজয়ী রাফায়েল মনেও, ডেনিস স্কট ব্রাউন ও কেনেথ ফ্রাম্পটনের তুলনায় আমার কাজ এখনো চলমান। এখনো অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি।
মেরিনা গত বছর করোনা মহামারির শুরু থেকে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল নিয়ে কাজ শুরু করেন। একজন স্থপতির দক্ষতা ওই অঞ্চলে কোনো ভূমিকা রাখতে পারে কিনা, তা পুনর্মূল্যায়ন করেন তিনি। বিধিনিষেধের কারণে অনেকে চাকরি হারান। অনেকে নতুন করে গৃহহীন হয়ে পড়েন। অগণিত বদ্বীপবাসীকে অস্থায়ী তাঁবুর নিচে আশ্রয় নিতে হয়। গত বছর তাবাসসুম এবং তার দল ভূমিহীন চরের বাসিন্দাদের জন্য কম খরচের ‘মডুলার হাউস কিট’ তৈরিতে কাজ শুরু করেন। যার জন্য পেলেন মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার।
ঢাকার দক্ষিণখানে বায়তুর রউফ নামের একটি শৈল্পিক নকশার মসজিদের জন্য ২০১৮ সালে স্থপতি হিসেবে জামিল প্রাইজ পান মেরিনা তাবাসসুম। এর আগে একই নকশার জন্য ২০১৬ সালে তিনি সম্মানজনক আগা খান পুরস্কার পান। সুলতানি আমলের স্থাপত্যের আদলে নকশা করা এ মসজিদ ২০১২ সালে ঢাকায় নির্মিত হয়।