প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
হুমায়ূন আহমেদ স্যারের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয় তার কাকরাইলের অফিসে। তখন সম্ভবত ১৯৯২ সাল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউক্লিয়ার মেডিসিনে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে আমি তখন গাজীপুরে থাকি। আমার ডাক্তারি সার্টিফিকেট নিতে একদিন আমাদের বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. এম এ করিমের সঙ্গে দেখা করতে আসি। তিনি ছিলেন হুমায়ূন স্যারের বন্ধু। আমি যেদিন আসি, সেদিন করিম স্যার আমাকে কাকরাইলে হুমায়ূন স্যারের অফিসে যেতে বললেন। করিম স্যার তখন সেখানে ছিলেন। আমি করিম স্যারের সঙ্গে দেখা করতে সেখানে গিয়ে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়। আমি জানি না হুমায়ূন স্যার প্রথম দিন দেখেই আমাকে কেন পছন্দ করলেন! আমি গাজীপুরে থাকি শুনে হুমায়ূন স্যার আমাকে বললেন, ‘গাজীপুরে তো শুটিংয়ের কাজে যাই, তোমার যদি সময় হয় আমাকে সহযোগিতা কর।’ এরপর স্যারের কাজে আমাকে ডাকতেন। এভাবেই স্যারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা শুরু হয়।
তখন ‘সবুজ সাথী’ নামে একটি ধারাবাহিক নাটকের কাজ করছিলেন হুমায়ূন স্যার। এটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার হয়েছিল। এই ধারাবাহিকটিতে কাজ করার মধ্য দিয়ে স্যারের সঙ্গে আমার প্রথম কাজের সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর অনেক কাজ করেছি স্যারের সঙ্গে। ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গেও জড়িয়ে গেছি। কত কত আড্ডার স্মৃতি। স্যার ভীষণ ভোজন রসিক ছিলেন। ইলিশ মাছ, শিং মাছ, চ্যাপা শুঁটকির ভর্তা খুব পছন্দ করতেন। তবে অল্প খেতেন। মাসকলাইয়ের ডাল, গরু ও খাসির মাংস খুব পছন্দ ছিল স্যারের। গাজীপুরে বিভিন্ন কাজে যখন স্যার আমাকে ডাকতেন, তখন আমিও আনন্দ নিয়ে হাজির হতাম। স্যার আমাকে একদিন বলেছিলেন, একটা বাগানবাড়ি করার স্বপ্ন আছে। তুমি গাজীপুরের দিকে একটা জায়গা দেখো। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করে এখনকার নুহাশ পল্লীর জায়গাটা স্যারকে খুঁজে দিই। স্যার অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন। স্যার তার গ্রামে একটা স্কুল করেছিলেন। সেই স্কুলটা এখনো আছে। আমরা স্যারের সঙ্গে সেখানে গিয়ে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করেছি। অনেক স্বপ্ন নিয়ে স্যার স্কুলটা করেছেন। স্যারের সান্নিধ্য আমাকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করেছে। স্যারের সঙ্গে কাটানো সময়গুলো আমি মনে করি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম সময়। শুটিং সেটে এবং কর্মহীন জীবনে আমরা আনন্দ করেছি। শুটিং সেটে কত মজা করেছি। আবার কাজে ফাঁকি দেওয়া যেত না। স্যারের শুটিং সেটে যে আনন্দ নিয়ে কাজ করেছি, সেই আনন্দ এখন পাই না। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম সময়গুলো স্যারের সঙ্গে কেটেছে। শ্রæতি লিখন : শাহনাজ জাহান
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।