কাগজ ডেস্ক : চীনা কমিউনিস্ট পার্টি এক ঐতিহাসিক প্রস্তাব পাস করার মাধ্যমে রাজনৈতিক ইতিহাসে শি জিনপিংয়ের মর্যাদাকে পাকাপোক্ত করেছে। দলটির ১০০ বছরের ইতিহাসের একটি সারসংক্ষেপে তাদের মূল অর্জন এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনার বিষয়গুলো তুলে আনা হয়েছে। পার্টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো কোনো প্রস্তাব পাস হলো। এর আগে ১৯৪৫ সালে মাও জে দং এবং ১৯৮১ সালে দেং জিয়াও পিং প্রস্তাব পাস করেছিলেন। গত বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে এটি পাস হয়, যা ছিল চীনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠক। পাস হওয়া এ প্রস্তাবের লক্ষ্য, শিকে পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাও এবং তার উত্তরসূরি দেং-এর সমান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
চার দিনের রুদ্ধদ্বার অধিবেশনে দলের ১৯তম কেন্দ্রীয় কমিটির ৩৭০ জনেরও বেশি পূর্ণ ও বিকল্প সদস্য জড়ো হন, যারা দেশটির শীর্ষ নেতৃত্বে আছেন। সামনের বছর জাতীয় কংগ্রেসের আগে এটি ছিল দলের নেতাদের সবচেয়ে বড় ও সর্বশেষ বৈঠক। এখানে শি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঐতিহাসিকভাবে তৃতীয় মেয়াদে থাকতে চাইবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে দেশটি একজন প্রেসিডেন্টের সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে থাকার নীতি বাতিল করে এবং কার্যকরভাবে তাকে আজীবন ক্ষমতায় থাকার অনুমোদন দেয়। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ড. চং জা ইয়ান বলেন, সাম্প্রতিক পদক্ষেপটি শিকে অন্যান্য পূর্ববর্তী চীনা নেতাদের থেকে আলাদা করেছে। হু জিনতাও এবং জিয়াং জেমিনের মতো প্রাক্তন নেতাদের কারোই শির মতো এমন দৃঢ়তা ছিল না। তবে একই ধরনের সুযোগ পেলে তারাও এমনটা করত কিনা সেটা বিতর্কিত। ১৯৪৫ সালে একটি পার্টির পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে গৃহীত প্রথম প্রস্তাবটি মাওকে তার নেতৃত্ব সুসংহত করতে সাহায্য করেন, যাতে তিনি ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন গঠনের ঘোষণা দেয়ার সময় তার সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব লাভ করেন। ১৯৭৮ সালে দেং যখন নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন, তখন ১৯৮১ সালে তিনি দ্বিতীয় রেজুলিউশন শুরু করেন। সেখানে তিনি ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় মাওয়ের ত্রæটিপূর্ণ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন, যার ফলে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে।
শির রিপোর্ট এমন এক সময়ে এলো, যখন চীন একটি বিশ্ব শক্তিতে পরিণত হয়েছে, যা কয়েক দশক আগেও ভাবা যায়নি। দেশটি এমন এক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে এটি এখন তার অর্থনীতি ও সামরিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সাধন করেছে এবং বিশ্বের অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে তার মর্যাদাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। শির নেতৃত্বে থাকা সিসিপি-পার্টি চীনকে কৃতিত্বের শীর্ষ স্তরে পৌঁছে দিয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।