ক্র্যাবের ২ সদস্যকে হুমকি দেয়া পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

আগের সংবাদ

গাপটিল-বাটলার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

পরের সংবাদ

উদ্যোক্তাদের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি : পরিত্যক্ত টায়ার থেকে তেল গ্যাস উৎপাদন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শাহ আলম সরকার সাজু, গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) থেকে : এক ধরনের আবর্জনা জাতীয় পণ্য বাতিল টায়ার থেকে তেল, গ্যাস, কয়লা ও লোহা উৎপাদন করা হচ্ছে। আর এগুলো প্রমাণ করেছেন দিনাজপুরের হিলি ও ভাদুরিয়ায় পরিবেশবান্ধব কারখানায় গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার একদল সফল উদ্যোক্তারা। তারা হলেন- জামাল উদ্দিন, দীপক, দেবু সাহা, ভূঁইয়া, ইলিয়াস হাজি, ছলেমান, আলম, মিলু প্রমুখ। উদ্যেক্তারা বলেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা এবং নির্ধারিত স্থান, ব্যাংক লোন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতা পেলে এই খাতকে আরো উন্নত করা সম্ভব। এটা খুবই সম্ভাবনাময় ও সহজ একটি পদ্ধতি। অনেক টায়ার একটি বয়লারের ভেতরে দিয়ে সেটি উত্তপ্ত করলেই বেরিয়ে আসে মূল্যবান সব পদার্থ তেল, গ্যাস, কয়লা ও লোহা।
উৎপাদনকৃত কয়লা বিভিন্ন ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তেল (গ্রিন অয়েল) জ্বালানি হিসেবে রাস্তা নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইস্পাতের তার চলে যাচ্ছে বড় মিলে যা রডের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর গ্যাস বোতলজাত করতে পারলে রান্নাসহ যে কোনো জ¦ালানি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এমনকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে বলে তারা মত পোষণ করেছেন তারা। তারা বলেন, এই রিসাইক্লিন কারখানা দিয়ে অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটানো সম্ভব। এটা একদিকে সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে, অপরদিকে বেকার সমস্যা দূর করছে।
খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে। এসব কারখানায় কাজ করে একেবারে পড়াশোনা জানে না এমন নিম্ন শ্রেণির মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হচ্ছেন। দেশের প্রায় সব এলাকাতেই বাতিল টায়ার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিশেষ করে যারা শহরের নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের বাড়ির আশপাশে বস্তিতে, ফুটপাতে, ড্রেনে , খালবিলে, ডোবা-নালাসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে। অনেক সময় শিশুদের এসব টায়ার দিয়ে খেলা করতে দেখা যায়। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ শিশুদের নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। বিশেষ করে এসব টায়ারের ভেতরে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে মশার প্রজনন হয়ে থাকে, যা মানবদেহে ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু , চিকনগুনিয়াসহ নানা রকম প্রাণঘাতী রোগ ছড়ায়।
যেহেতু এসব টায়ারগুলো রাবারের সঙ্গে কার্বনের সংমিশ্রণে তৈরি হয় এবং ভেতরটা ইস্পাতের তার দিয়ে মোড়ানো থাকে, তাই এটা খুব শক্ত হয়। এটা সহজেই মাটির সঙ্গে মিশে নষ্ট হয় না। আবার এটা আগুনে পুড়লেই খুব দুর্গন্ধ যুক্ত কালো ধোঁয়া বের হয়, যা পরিবেশ নষ্ট করে। তাই পরিবেশ রক্ষার্থে প্রক্রিয়াকরণ করে ধ্বংস করাই উত্তম। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ বাঁচবে অপরদিকে অর্থ উপার্জন হবে।
এ বিষয়ে এক সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করেন ভোরের কাগজ প্রতিনিধি। তিনি বলেন, এটা খুবই সম্ভাবনাময় খাত। কেননা, বাতিল হওয়া টায়ারগুলো যদি ধ্বংস করা না হয় তাহলে এগুলো একদিকে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। যার ছোবল থেকে রক্ষা পাওয়া মুশকিল। অপরদিকে এই কারখানাগুলোয় অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। সেহেতু এই খাতে সরকারের সহযোগিতার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়