জাল সার্টিফিকেট তৈরি চক্রের ৫ সদস্য রিমান্ডে

আগের সংবাদ

স্মার্টকার্ড নিয়ে আনস্মার্টকাণ্ড!

পরের সংবাদ

গাপটিল-বাটলার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন ইংল্যান্ডের জশ বাটলার। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে ইংলিশরা। আজ আবুধাবির মাঠে তাদের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। বাটলার যদি ইংল্যান্ডের বিধ্বংসী ব্যাটার হন, তবে কিউই দলে আছেন মার্টিন গাপটিল। বলা যায় আবুধাবিতে লড়াইটা মাতিয়ে রাখবেন চার-ছক্কার এই দুই রাজা। অর্থাৎ সপ্তম বিশ্বকাপ আসরের প্রথম সেমিফাইনালে ক্রিকেটবিশ্ব দেখবে বাটলার-গাপটিল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই।
চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম থেকেই দুর্দান্ত ইংলিশ ওপেনার জশ বাটলার। আসরে ৫ ম্যাচ খেলে তার সংগ্রহ ২৪০ রান। আসরে তার একটি সেঞ্চুরি ও একটি হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসও রয়েছে। চলতি আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তার অবস্থান দুইয়ে। ৫ ম্যাচ খেলে ২৬৪ রান নিয়ে তালিকায় সবার উপরে পাকিস্তানের বাবর আজম। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাটলার ২২ বলে ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে তিনি ৩টি বাউন্ডারি হাঁকান। দ্বিতীয় ম্যাচে ইংলিশ ওপেনার বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৮ বলে ১৮ রান করে মাঠ ছাড়েন। এদিন তার ব্যাট থেকে ১টি করে চার ও ছক্কার মার আসে। তৃতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাটলার ঝড় তোলেন। ৩২ বলে ৭১ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। ওই ইনিংসে সমান ৫টি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি হাঁকান। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তুলে নেন চলতি আসরের প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র সেঞ্চুরি। ঝড় তুলে ৬৭ বলে ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন বাটলার। ইনিংসে তার ৬টি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি ছিল। নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাটলার ঝড় তুললেও খুব বেশিক্ষণ মাঠে থাকতে পারেননি। ১৫ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন। এদিন ৩টি চার ও ১টি ছক্কার মার মারেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে বাটলার ঝড় থামানো না গেলে বিপদ আছে কেন উইলিয়ামসনদের জন্য। এর আগে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিল ইংল্যান্ড। ওই ম্যাচে ৫১ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন জশ বাটলার। ইনিংসে তিনি ১১ চারের পাশাপাশি ২টি ছক্কার মার মারেন।
এদিকে নিউজিল্যান্ড দলের একমাত্র ত্রাতা হতে পারেন মার্টিন গাপটিল। আসরে খুব একটা জ¦লে উঠতে না পারলেও ইংলিশদের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে একমাত্র ভরসা হতে পারেন তিনি। তাছাড়া স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি আসরে তার ৫৬ বলে ৯৩ রানের ইনিংস বলে দেয় কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারেন গাপটিল। চলতি আসরে ৫ ম্যাচ খেলে তিনি রান করেছেন ১৭৬। তালিকায় তার অবস্থান ১১তম হলেও কিউইদের মধ্যে আরব আমিরাতে সপ্তম বিশ্বকাপ আসরে সর্বোচ্চ রান গাপটিলের। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে গাপটিল পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০ বলে ১৭ রানের ইনিংস খেলেন, যেখানে ছিল ৩টি চারের মার। এরপর ভারতের বিপক্ষে কিউই ওপেনার ১৭ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলেন। এই ম্যাচে তিনি ৩টি চার হাঁকান। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ঝড় তোলেন মার্টিন গাপটিল। স্কটিশ বোলারদের তুলাধুনা করে ৫৬ বলে ৯৩ রানের ইনিংস খেলেন গাপটিল। ওই ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারির পাশাপাশি ৭টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। পরের ম্যাচে গাপটিল নামিবিয়ার বিপক্ষে ১৮ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলেন, যেখানে ১টি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। আর চলতি বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গাপটিল ২৩ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। ওই ম্যাচে কোনো ছক্কার দেখা না পেলেও ৪টি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। ইংলিশদের বিপক্ষে গাপটিল কতটাই বা তাণ্ডব চালাতে পারবেন? তার উত্তর বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়েই দেয়া যাক। গত ২০ অক্টোবর দুই দলের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে দুইশর বেশি স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করে গাপটিল ২০ বলে ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। ওই ইনিংসে তিনি ৪টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকান। সেমিফাইনালে আবুধাবিতে শুরুর দিকে গাপটিল ঝড় তুলতে পারলে ইংলিশদের বিপক্ষে কিউইরা জয়ের সম্ভাবনা থাকবে বেশি।
চলতি বিশ্বকাপ আসরে ব্যাটিংয়ে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা এগিয়ে থাকলেও বোলিংয়ে এগিয়ে আছে নিউজিল্যান্ড। ৫ ম্যাচে ১১ উইকেট শিকার করে চলতি আসরে উইকেট সংগ্রাহকের তালিকায় কিউই ফাস্ট বোলার ট্রেন্ট বোল্টের অবস্থান তিনে। ১৬ উইকেট শিকার করে তালিকায় সবার প্রথমে আছেন শ্রীলঙ্কার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। দুইয়ে থাকা অ্যাডাম জাম্পার উইকেট সংখ্যা বোল্টের সমান ১১। বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান সমান ১১ উইকেট শিকার করে আছেন তালিকার চারে। ইংলিশ বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ উইকেট শিকার করেছেন স্পিনার আদিল রশিদ। তিনি আছেন তালিকার ১২তম স্থানে।
যেভাবে সেমিতে ইংল্যান্ড : বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ থেকে দুর্দান্ত ইংলিশরা। প্রথম ম্যাচে তারা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে গুঁড়িয়ে দেয় মাত্র ৫৫ রানে। ২ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রক ছিলেন ইংলিশ স্পিনার আদিল রশিদ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৮.২ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ম্যাচে তারা বাংলাদেশের বিপক্ষে ১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয়। এরপর অস্ট্রেলিয়াকে ১২৫ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় ইংলিশরা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ২৬ রানের জয় তুলে নিয়ে সেমিতে পা রাখে তারা। শ্রীলঙ্কা ১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৩৭ রানে গুঁড়িয়ে যায়। তবে সুপার টুয়েলভের শেষ ম্যাচে হোঁচট খায় তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ রানের বিনিময়ে হেরে আসরে প্রথম হোঁচট খায় ইংল্যান্ড।
যেভাবে সেমিতে নিউজিল্যান্ড : বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড আসর শুরু করে হোঁচট খেয়ে। প্রথম ম্যাচে তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে হারে ৫ উইকেটের ব্যবধানে। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ১১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটের বড় জয় পায় ব্ল্যাক ক্যাপসরা। তৃতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬ রানের জয় তুলে নিয়ে সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখে কিউইরা। ১৭৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে স্কটিশদের ইনিংস থামে ১৫৬ রানে। এরপর সহজ প্রতিপক্ষ নামিবিয়াকে তারা হারায় ৫২ রানের ব্যবধানে। ১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তাদের ইনিংস থামে ১১১ রানে। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে আফগানিস্তান তাদের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১২৪ রান সংগ্রহ করে। নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে আসরে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে নেয় নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচটি কিউইরা হারলে সেমিতে পৌঁছে যেত ভারত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়