কাগজ প্রতিবেদক : মৌলভীবাজারের চৈত্রঘাট বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বাবর মিয়া, রাসেল মিয়া, মাসুদ মিয়া, মরদিছ মিয়া, তফাজ্জল আলী, খালেদ মিয়া, জুয়েল মিয়া ও আমির হোসেন হীরা। র্যাব বলছে, পারিবারিক বিরোধ নিয়ে দ্ব›েদ্ব নাজমুলকে হত্যা করা হয়েছে। আর পুলিশ বলছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী নাজমুলকে খুন করা হয়েছে। নাজমুলকে হত্যার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপর হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গতকাল ভোরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও সিলেট থেকে বাবর, রাসেল, মাসুদ ও মরদিছকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৯ এর সদস্যরা। পারিবারিক বিষয় নিয়ে নাজমুল হাসানের সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আহাদ নাইছ মিয়ার সন্তানদের দ্ব›দ্ব চলছিল। একপর্যায়ে নাজমুল হাসানের সমর্থকদের হামলায় নাইছ মিয়ার ছেলে জুয়েলের পা ভেঙে যায়।
এই হামলার প্রতিশোধ নিতে নাজমুলকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। গত ৩১ অক্টোবর আসামিরা মৌলভীবাজার সদর থেকে মাইক্রোবাসে চৈত্রঘাট বাজারে যান। নাজমুল হাসান চৈত্রঘাট বাজার থেকে বাসায় ফেরার পথে আসামিরা তাকে কুপিয়ে আহত করে রাস্তায় ফেলে যায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহত নাজমুল হাসানের বড় ভাই শামসুল হক কমলগঞ্জ থানায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন।
এদিকে, গতকাল মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, গতকাল ভোরে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে তফাজ্জল আলী ও খালেদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে পুলিশের হাতে মোট ৪ আসামি গ্রেপ্তার হলেন। অন্য দুইজন হলেন- জুয়েল মিয়া ও আমির হোসেন হীরা। এর মধ্যে তিনজন এজহাহারভুক্ত এবং একজন সন্দেহভাজন আসামি। গ্রেপ্তার তফাজ্জল নাজমুল হাসান হত্যার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি।
বিদেশে পালিয়ে যাবার সময় তফাজ্জল ও তার সঙ্গে থাকা খালেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তফাজ্জলের কাছ থেকে ভিসা সংযুক্ত পাসপোর্ট, টাকা এবং কিছু বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়। গত সোমবার কমলগঞ্জ থানা পুলিশ রাজনগর এলাকা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জুয়েল এবং সদর এলাকা থেকে মাইক্রোবাস চালক আমিরকে গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষের বিরোধ রয়েছে। এরই জের ধরে ব্যবসায়ী নাজমুল হাসান খুন হন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।