গাজীপুরে কেমিক্যাল কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

আগের সংবাদ

বাজার অস্থির দিশাহারা মানুষ : নিত্যপণ্যের দাম সাধারণের নাগালের বাইরে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় আরেক দফা বাড়বে

পরের সংবাদ

তরুণী সহযোগীসহ গ্রেপ্তার : শিক্ষার্থী পরিচয়ে নেন বাসাভাড়া পুলিশ পরিচয়ে মাদক সরবরাহ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাফিস মোহাম্মদ আলম। এই পরিচয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নেন বাসা ভাড়া। পরবর্তীতে এই বাসা থেকেই শুরু করেন মাদক ব্যবসা। অনলাইনে গ্রুপ খুলে মাদকের অর্ডার নিয়ে পুলিশ পরিচয়ে গুলশান বনানী উত্তরাসহ অভিজাত এলাকায় পৌঁছে দিতেন তিনি। ব্যবসা রমরমা হওয়ায় নিজের বাসাতেই বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও বিয়ারসহ অন্যান্য মাদক জমা করতে থাকেন নাফিজ।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাসাটিতে অভিযান চালায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব-১)। গতকাল বৃহস্পতিবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ১০ নম্বর রোডের এইচ ব্লকের ৩১০ নম্বর বাসার চতুর্থ তলা থেকে মোছা. রাত্রি খান নামে এক তরুণী সহযোগীসহ নাফিজকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) সহকারী পুলিশ সুপার নোমান আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযানের সময় ওই বাসা থেকে ৩৬১ বোতল বিদেশি মদ, ২৯৯ ক্যান বিয়ার, ৫০ গ্রাম গাঁজা, ০.৩৪ গ্রাম আইস ড্রাগ, ৩ পিস প্যাথেড্রিন ইনজেকশন, ৮টি মাদক সেবনের উপকরণ, মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত পুলিশ লেখা স্টিকার ও বিকন লাইটসহ একটি প্রাইভেটকার, ৪টি ওয়াকিটকি সেট, দুটি ওয়াকিটকি চার্জার, একটি সিগন্যাল লাইট, পুলিশ মনোগ্রাম সংযুক্ত একটি ব্যারেট ক্যাপ, দুটি পুলিশের কটি, ৪টি পুলিশের মনোগ্রাম সংবলিত কোটপিন, দুটি প্লাস্টিকের খেলনা পিস্তল, দুটি হোলস্টার, ৫টি খালি কার্তুজ, ৪টি ভিসা কার্ড, ১টি পাসপোর্ট, দুটি স্পাই ক্যামেরা, একটি হার্ডডিস্ক, একটি ল্যাপটপ, ক্যাসিনো খেলার বিভিন্ন উপকরণ, ৪টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ৪ লাখ ৭৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ এর কর্মকর্তা নোমান আহমদ জানান, নাফিস একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি শিক্ষার্থী পরিচয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ওই বাসাটি ভাড়া নেন। পরবর্তীতে এই বাসা থেকে মাদক ব্যবসা শুরু করেন। তিনি মূলত বিদেশি মদের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী। রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, মোহাম্মদপুর, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাইকারী ও খুচরা মাদক সরবরাহ করতেন। নাফিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিন্ডিকেট ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি গ্রুপ পরিচালনা করেন এবং এই গ্রুপের মাধ্যমে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা।
নোমান আহমদ আরো জানান, নাফিস সহজেই মাদক পরিবহন, সরবরাহ ও বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন। তিনি মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে অন্তরঙ্গ মূহূর্তের ছবি তার শয়নকক্ষে থাকা গোপন ক্যামেরায় ধারণ করতেন। এসব অশ্লীল অনেক ছবি, ভিডিও ও তথ্য তার মোবাইল ফোন ও হার্ডডিস্কে পাওয়া গেছে। এছাড়াও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হিসেবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে নাফিজ ওরফে নাফিজ ডন নামে তার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা রয়েছে। আর মোছা. রাত্রি খান নাফিজের মাদক ব্যবসায়ের সহযোগী হিসেবে কাজ করত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। তাদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়