জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময়ে সৈয়দপুরে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। সন্ধ্যার পরেই ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। শ্রমজীবী মানুষরা খড়কুটো জড়ো করে তাতে আগুন দিয়ে শরীরে তাপ নিচ্ছে। রাত যতই বাড়ে ঠাণ্ডা ততই বাড়ছে। মাঝ রাতে নামছে কুয়াশা। ভোর বেলা হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা শীতল বাতাসে গা অধিক ঠাণ্ডা হচ্ছে। ঘরে সবাই ফ্যানের সুইচ অফ করে দিয়েছে। ইতোমধ্যে মানুষ টিশার্ট ছেড়ে ফুলহাতা শার্ট গায়ে জড়ানো শুরু করেছে। মধ্য রাতে বিছানায় অনেকে পাতলা কাঁথা অথবা পাতলা কম্বল জড়াচ্ছে গায়ে।
ঘাসের ডগা আর ধান গাছের পাতায় শিশির বিন্দু দুলতে দেখা যাচ্ছে। সকালে রোদের তীব্রতা কমতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে খাল, বিল ও ছোট নদীগুলোর পানি তলানিতে যাওয়া শুরু হয়েছে। সর্বউত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়া ও ডিমলায় সূর্যি মামার দেখা মিলছে খানিকটা দেরিতে। উঁচু জমিগুলোতে শীতের শাকসবজি আবাদ করতে চাষিরা জমি প্রস্তুতির কাজ বেশ জোরেশোরে করছেন। গরম কাপড় তৈরির ক্ষুদ্র কারখানাগুলোতে পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। পাইকারি গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে আসতে শুরু করেছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। শীতের কাপড় বিক্রেতারা শীতকালের ব্যবসা করতে ইতোমধ্যেই বেশ মজুদ গড়ে তুলেছেন।
কথা হয় গরম কাপড় তৈরিকারক ক্ষুদ্র শিল্প মালিক সোহরাব হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, পাইকারি ব্যবসায়ীরা শীত শুরুর এক-দুই মাস আগেই গরম কাপড়ের ক্রয়াদেশ দেন। সেই ক্রয়াদেশ পেয়েই আমরাও কারিগর দিয়ে গরম কাপড় তৈরি শুরু করি। কথা হয় পাইকারি গরম কাপড় ব্যবসায়ী মুহিব গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী মোকলেছুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, শীতের আগমনী বার্তা পেয়ে আমরা ব্যবসায়ীরা গরম কাপড়ের মজুদ গড়ে তুলছি। খুচরা ব্যবসায়ীরা দোকানে কেনাকাটা করতে আসছেন। বিশেষ করে যেসব এলাকায় ইউপি নির্বাচন শুরু হয়েছে সেসব এলাকার ছোট ছোট খুচরা ব্যবসায়ীরা আসছেন। তবে বড় ব্যবসায়ীরা আসবেন আরো কিছুদিন পর। আশা করি এ বছর ব্যবসা বেশ ভালো হবে। অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বেচাকেনা জমতে শুরু করবে।
ক্ষুদ্র শিল্প মালিক সোহরাব হোসেন জানান, শীত তিন-চার মাসের বেশি থাকে না। গরম কাপড়ের ব্যবসায়ীরা এই মৌসুমের জন্য বছরে আট মাস অপেক্ষা করে থাকে। চার মাসে বেচাকেনার লাভে সারা বছর আমাদের চলতে হয়। শীত যত তীব্র হবে ততই শীতের কাপড়ের ব্যবসা জমে উঠে বলে ওই ব্যবসায়ী জানান।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।