ডেঙ্গুতে ৯১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত সাড়ে ২৩ হাজার

আগের সংবাদ

তৃণমূলে সংঘাত থামছেই না : সংঘর্ষে জড়িতদের তালিকা করছে আ.লীগ, অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে এক মাসে নিহত ৮, নির্বাচনী সংঘর্ষে ৩৮ নিহত

পরের সংবাদ

জয়ে ফিরল ম্যানইউ, পয়েন্ট হারাল বার্সা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : একটি ম্যাচ খারাপ খেললে নানা কথা শুনতে হয় খেলোয়াড়দের। আবার ভালো খেললে তাদের প্রশংসায় ভাসান সমর্থকরা। এ অবস্থা দেখা গেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ক্ষেত্রে। এমনকি লিভারপুলের বিপক্ষে হারের পর সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হচ্ছিলেন দলটির ফুটবলাররা। সেই সঙ্গে ম্যানচেস্টার কোচ ওলে গানার শোলজারের চাকরি নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছিল। অবশেষে চোখ জুড়ানো গোল করে সব সমালোচনার জবাব দিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তার দুর্দান্ত গোলের সুবাদে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে টটেনহ্যামকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার। দলের হয়ে গোল করেন রোনালদো, এডিনসন কাভানি ও মার্কাস র‌্যাশফোর্ড। মজার বিষয় হলো ম্যাচ শেষে দলটির পর্তুগিজ তারকা রোনালদো বলেন, সমালোচনা সবসময়ই থাকবে। এসব আমাকে ভাবায় না। ১৮ বছর ফুটবল খেলার পর এখন সমালোচনাকে স্বাভাবিকভাবেই দেখি।
এছাড়া ঘরের মাঠে আরেকটি হতাশার দিন কাটল বার্সেলোনার। গতকাল কাতালান ক্লাবটি ১-১ গোলে ড্র করেছে তুলনামূলক দুর্বল আলাভেসের বিপক্ষে। ম্যাচের ৪৯ মিনিটে বার্সাকে এগিয়ে দিয়েছিলেন মেমফিস ডিপাই। কিন্তু তিন মিনিট পর তা শোধ করে দেন লুইস রাইওজা। পরে আর গোল না হওয়ায় অমীমাংসিত থেকে যায় ম্যাচ। ফলে এগিয়ে থেকেও পয়েন্ট খোয়াল বার্সা। অন্তর্বর্তীকালীন কোচ বারজুয়ানের অধীনে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ফের হতাশাই জন্ম দিয়েছে দলটি। এ ড্রয়ের পর ১১ ম্যাচে ৪ জয়, ৪ ড্র ও ৩ পরাজয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৯ নম্বরে অবস্থান করছে বার্সেলোনা। সমান ম্যাচে ৭ জয় ও ৩ ড্রয়ে ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রিয়াল মাদ্রিদ।
এদিকে লা লিগার ম্যাচে গতকাল প্রথমার্ধের শেষ দিকে হঠাৎ আগুয়েরা ইশারা দিয়ে জানান, মাঠ ছাড়তে চান। বুকে হাত দিয়ে মাঠে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাকে। পরে মেডিকেল স্টাফরা তখন ছুটে যান। এরপর আগুয়েরা নিজেই উঠে দাঁড়িয়ে ধীরে ধীরে মাঠ ছেড়ে যান হাসপাতালে। সেখানে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। এ বিষয়ে বার্সার ভারপ্রাপ্ত কোচ বারজুয়ান ম্যাচের পর বলেন, আমাকে বলা হয়েছে, ওর একটু মাথা ঘোরাচ্ছিল। ওকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এর বাইরে আর কিছু এখন বলতে পারব না।
এদিকে পুরনো ঠিকানায় নতুন শুরুটা দারুণ হলেও গোল খরায় ভুগছিলেন রোনালদো। অবশেষে প্রিমিয়ার লিগে চার ম্যাচ পর গোলপোস্টের দেখা পেলেন পর্তুগিজ তারকা। তবে ম্যাচে প্রথমার্ধে বলের নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে ছিল টটেনহ্যাম আর আক্রমণে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে ম্যানচেস্টার। ম্যাচের ৫২ শতাংশ বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে গোলের জন্য নেয়া ৭ শটের কোনোটিই লক্ষ্যে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। তবে ৮ শটের দুটি লক্ষ্যে রেখে একটি গোল তুলে নেয় ইউনাইটেড। ২৮ মিনিটে কর্নারে এরিক ডায়ারের হেডের পর দূরের পোস্টে থাকা ক্রিস্তিয়ান রোমেরো ঊরু দিয়ে ঠেলে জালে বল পাঠান। তবে টটেনহ্যামের এ আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার আগে থেকেই ছিলেন অফসাইড পজিশনে। ৩৩ মিনিটে রোনালদোর পাস ধরে ফ্রেদের শট ফিরিয়ে টটেনহ্যামের ত্রাতা হুগো লরিস। এটিই ছিল প্রতিপক্ষের গোলমুখে ইউনাইটেডের প্রথম আক্রমণ।
৬ মিনিট পর রোনালদোর দারুণ গোলেই এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। ব্রুনো ফের্নান্দেসের ক্রসে দুরূহ কোণ থেকে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের ভলি ঝাঁপিয়ে পড়া লরিসকে ফাঁকি দিয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ায়। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বুলেট গতির শটে জালে বল পাঠান রোনালদো।
কিন্তু এ তারকা ফরোয়ার্ডের উদযাপনের রেশ কেটে যায় অফসাইডের পতাকা ওঠায়। ৬৪ মিনিটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইউনাইটেড। ফের্নান্দেসের থেকে পাওয়া বল রোনালদো থ্রæ পাস বাড়ান কাভানির উদ্দেশে। গোলরক্ষককে কাটিয়ে জালে বল পাঠিয়ে দেন উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড। ৭১ মিনিটে রোনালদোকে তুলে মার্কাস র‌্যাশফোর্ড ও ১০ মিনিট পর কাভানির বদলি হিসেবে জেসে লিনগার্ডকে নামান ইউনাইটেড কোচ। প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগের ?দুই তারকার অনুপস্থিতি কাজে লাগাতে পারেনি টটেনহ্যাম। কারণ ৮৬ মিনিটে আরেকটি গোল হজম করে দলটি। মাঝমাঠে নিজেদের মধ্যে বল দেয়ানেয়া করে আচমকা থ্রæ পাস বাড়ান নেমানিয়া মাতিচ। এক ছুটে বল ধরে কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন একটু আগেই বদলি নামা র‌্যাশফোর্ড। তাতে গত মাসের মাঝামাঝি চেলসির কাছে হারের পর নিজেদের মাঠে আরেকটি হার নিশ্চিত হয়ে যায় টটেনহ্যামের।
ছন্দহারা দলটি এবারের লিগে হোম-অ্যাওয়ে মিলিয়ে এই নিয়ে পাঁচ ম্যাচে হারল।
এছাড়া এই মৌসুমে বার্সেলোনার বেহাল দশা চলছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের পর লা লিগাতেও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। তবে ক্যাম্প ন্যুতে বার্সা বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে। ম্যাচে তারা প্রতিপক্ষকে চাপে রেখেছে অধিকাংশ সময়জুড়ে। কিন্তু একটির বেশি গোল পায়নি কাতালানরা। মেমফিস-গ্যাভিরা মিলে চেষ্টা করেও প্রথমার্ধে ডেডলক ভাঙতে পারেননি। ম্যাচ শুরুর ১৮ মিনিটে ডিপাইয়ের কর্নার থেকে গার্সিয়ার হেড গোলকিপার সিভেরা ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন। একটু পর আগুয়েরোর শট দূরের পোস্ট দিয়ে যায়। ৩৮ মিনিটে বার্সেলোনার দুর্ভাগ্য। আগুয়েরো চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। কুতিনহো বদলি হিসেবে খেলেন। ৭ মিনিট পর মেমফিস ডিপাইয়ের জোরালো শট বক্সের বাইরে থেকে গোলকিপার কোনোমতে প্রতিহত করে দলকে ম্যাচে রাখেন। তবে বিরতির পর আর পোস্ট অক্ষত রাখতে পারেননি সিভেরা। ৪৯ মিনিটে জর্দি আলবার পাসে মেমফিস ডিপাই বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের জোরালো দৃষ্টিনন্দন শটে জাল কাঁপান। তাছাড়া বার্সেলোনার লিড বেশিক্ষণ থাকেনি। ৫২ মিনিটে স্কোরলাইন ১-১ হয়। হোসেলুর পাসে রিয়োহা বক্সে ঢুকে গোলকিপারকে কাটিয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে ম্যাচে সমতা ফেরান। এরপর বার্সেলোনা ফের চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু কিছুতেই প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভেদ করা সম্ভব হয়নি।

৫৩ মিনিটে কুতিনহোর বাঁ পায়ের শট গোলকিপার বাঁ হাত দিয়ে রুখে দিয়ে গোল হতে দেননি। ৬ মিনিট পর মেমফিসের ১০ গজ দূর থেকে নেয়া শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। পরের মিনিটে মেমফিসের শট গোলকিপারের শরীরে লেগে প্রতিহত হলে আরো হতাশ হতে হয় সমর্থকদের। একের পর এক আক্রমণ হেনেও জয়সূচক গোলের দেখা পাওয়া হয়নি বার্সেলোনার। ১ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়