‘ভীষণ এক্সাইটেড ও নার্ভাস’

আগের সংবাদ

নির্বাচন ঘিরে বারবার নির্যাতন : ইস্যু যাই হোক হামলার লক্ষ্যবস্তু ‘সংখ্যালঘু’, স্বার্থ উদ্ধারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘ধর্ম’

পরের সংবাদ

বনে শান্তির সুবাতাস : দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের ৩ বছর পূর্তি কাল

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দস্যুমুক্ত সুন্দরবনে বর্তমানে শান্তির সুবাতাস বইছে। অপহরণ-হত্যার ঘটনা যেখানে প্রায়ই শোনা যেত তেমন পরিস্থিতি এখন আর সেভাবে নেই। জেলেদের কষ্টার্জিত উপার্জনের ভাগও এখন কাউকে দিতে হচ্ছে না। বন্যপ্রাণী, মাওয়ালি, বাওয়ালি ও বনজীবী ছাড়াও পর্যটক নির্বিঘেœ সুন্দরবনে ভ্রমণ করতে পারছেন। অর্থনৈতিক গতিশীলতায় ব্যাপক প্রাণের সঞ্চার হয়েছে বনে। আর এসব সম্ভব হয়েছে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করার প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী পরিকল্পনা থেকে। ৪২৬টি অস্ত্র ও বিপুল গোলাবারুদসহ এখন পর্যন্ত সুন্দবনের ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৪ জন সদস্য র‌্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সুন্দরবন সম্পূর্ণরূপে জলদস্যু মুক্ত হয়েছে। এ ধারা বজায় রাখতে র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সুন্দরবন দস্যুমুক্ত দিবসের তিনবছর পূর্তি হবে কাল সোমবার। ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ খ্যাত পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ এ বনাঞ্চলটিকে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর দস্যুমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় থেকেই এ দিনটি দস্যুমুক্ত সুন্দরবন দিবস হিসেবে পালন করে আসছে র‌্যাব। এ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন গতকাল বলেন, ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তৎকালীন র‌্যাব ডিজিকে প্রধান সমন্বয়কারী করে টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে গোড়াপত্তন ঘটে জলদস্যু মুক্তকরণ প্রক্রিয়ার। সে বছর থেকেই র‌্যাবে বিভিন্ন ইউনিটের জোরালো অভিযানে কোনঠাসা হয়ে পড়ে তারা। এক পর্যায়ে ফেরারি জীবনের অবসান ঘটিয়ে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেয় জলদস্যুরা। প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে জলদস্যুমুক্ত ঘোষণার পর থেকেই র‌্যাব এ সাফল্য ধরে রেখেছে। তিনি আরো বলেন, আত্মসমর্পণকারীরা যেন স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে বা পুনরায় বিপথে পা না বাড়ায় সেজন্য সরকারের পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগিতা করাসহ নজরদারি কার্যক্রম চলমান রেখেছি আমরা। অর্জন সহজ হলেও তা ধরে রাখা অনেক কঠিন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুন্দরবনের দুর্গম এলাকা দুবলারচরে ও মুন্সীগঞ্জে র‌্যাবের দুটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। আমাদের আধিপত্য সেখানে বজায় রয়েছে। সেসব স্থানে নিয়মিত সব ধরনের টহল চালু রয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী হেলিকপ্টারেও আমরা টহল দিচ্ছি। র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। এই অর্জন খুব সহজ ছিল না। সুন্দরবনকে জলদস্যু মুক্ত করতে গিয়ে আমাদের একজন সদস্যকে আমরা হারিয়েছি। এ ছাড়াও অনেক সদস্য গুরুতর আহত হয়েছে তিনি আরো বলেন, এসব কার্যক্রমের বাইরেও আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের সাহায্য-সহযোগিতা করে আসছি যাতে তারা আমাদের সঙ্গে থাকেন। সরকার প্রত্যেককে ১ লাখ টাকার অনুদান সহায়তা দিয়েছে। র‌্যাবের পক্ষ থেকেও আর্থিক অনুদানসহ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এই সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুদের কার কি প্রয়োজন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১ নভেম্বর আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের ১০২টি ঘর, জিনিসপত্রসহ ৯০টি মুদি দোকান, ১২টি জাল মাছ ধরার নৌকা, ৮টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ২২৮টি গবাদিপশু তাদের সহায়তার জন্য দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটাই শেষ নয় আচরণ-চালচলন ভালো থাকলে আরো সহায়তা দেয়া হবে। আর যারা শান্তির পথে থাকবে না তাদের ওপর থেকে আমরা হাত উঠিয়ে নেব। সুন্দরবনের জলদস্যুরা আত্মসমর্পণ করেছে তবে কিছু কিছু জায়গায় এখনো জলদস্যু রয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব ডিজি বলেন, একটি বাগানে যদি অনেক আম গাছ থাকে আর দুটো ডাব গাছ থাকে তাহলে অবশ্যই আমরা তাকে আমবাগানই বলব ডাব নয়। ছোটখাটো কিছু থাকতে পারে তবে এর মানে সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত হয়নি এমনটি নয়। তারা হয়ত বনের ভিতর পালিয়ে আছে কিন্তু কোনো হামলা বা কোনো কার্য সম্পাদন করার সাহস তাদের নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সেখানে আমাদের বার্তা রয়েছে যারাই সুন্দরবনে পুনরায় দস্যুতা কার্যক্রম শুরু করবে ও এর পেছনে কলকাঠি নাড়বে তার বিরুদ্ধে যে ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার দরকার ঠিক সে ব্যবস্থাই নেয়া হবে। বন বিভাগ থেকে শুনেছি সুন্দরবনের হরিণের পাশাপাশি বর্তমানে বাঘের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়