সম্প্রীতির জমিনে শকুনের চোখ

আগের সংবাদ

ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান এখন ‘মেটা’

পরের সংবাদ

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি : সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে বানোয়াট গল্প রটাচ্ছে কিছু গণমাধ্যম

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : গেল দুর্গাপূজায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার চলছে বলে দাবি করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সেই ঘটনাকে খানিকটা লঘু করে দেখাতে তিনি দাবি করেন সাম্প্রতিক হিংসায় মৃত্যু হয়েছে মাত্র দুজন হিন্দুর। তাছাড়া যে চার জনের মৃত্যু হয়েছে তারা মুসলিম, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা গেছেন। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা সম্পর্কে কিছু অতি উৎসাহী গণমাধ্যম বানোয়াট গল্প রটাচ্ছে। এসব হামলার ঘটনার সময় কোনো হিন্দু নারী ধর্ষণের শিকার হননি বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সংখ্যালঘুদের হামলার ব্যাপারে জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন যখন বিবৃতি দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে, সে রকম এক প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিবৃতি দিলেন। গত বৃহস্পতিবার এই বিবৃতিতে তিনি বলেন, ওই সহিংসতার ঘটনায় নিহত ছয়জনের মধ্যে চারজন মুসলমান এবং তারা হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দেয়ার চেষ্টা করার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
সহিংসতায় যে দুজন হিন্দু মারা যান, তাদের মধ্যে একজনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে এবং অন্যজন পানিতে ডুবে মারা গেছেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার ভাষায়, কিছু অতি উৎসাহী গণমাধ্যম ও ব্যক্তিবর্গ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মৃত্যু এবং ধর্ষণের নানা গল্প ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, কাউকে ধর্ষণ করা হয়নি এবং একটি মন্দিরেও অগ্নিসংযোগ বা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। তবে কিছু দেবদেবীর মূর্তি বা প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। এর পেছনে জড়িত অপরাধীদের ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এখন তারা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। এই বিবৃতির বিষয়ে কথা বলতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এ নিয়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর খবর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যথাযথ তথ্য নিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানিয়েছেন।
সহিংসতায় যেসব বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে সেগুলো পুনর্নিমাণের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে। মূলত ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতি প্রতিশ্রæতিবদ্ধ সরকারকে বিব্রত করার জন্য এমনটা করা হচ্ছে বলে তিনি ওই বিবৃতিতে অভিযোগ করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের প্রতিটি স্থানে এমনকি মানুষের ঘরে ঘরে পূজামণ্ডপের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, সরকার প্রতিটি পূজামণ্ডপকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। কিন্তু সপ্তাহে ২৪ ঘণ্টা এই বিপুলসংখ্যক মণ্ডপ পর্যবেক্ষণে রাখার মতো যথেষ্টসংখ্যক পুলিশ নেই। এই ধরনের সহিংস ঘটনা এড়াতে তাই পূজামণ্ডপ আয়োজকদের উচিত তাদের মণ্ডপগুলো নজরে রাখা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে এক ব্যক্তি পবিত্র কুরআনের একটি কপি মন্দিরে দেবতার মূর্তির পায়ের কাছে রেখে চলে যায়। সে সময় মন্দিরের ভেতরে কোনো উপাসক বা আয়োজকদের কেউ ছিলেন না। পরে অন্য আরেক ব্যক্তি মন্দিরে দেবতার পায়ে কুরআনের ওই ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে ফেসবুকে আপলোড করে দেয়। এ ঘটনাকে ঘিরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং ভাঙচুর-লুটপাটের মতো ঘটনা ঘটে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়