সম্প্রীতির জমিনে শকুনের চোখ

আগের সংবাদ

ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান এখন ‘মেটা’

পরের সংবাদ

কচ্ছপ গতিতে চলছে উদ্ধার অভিযান : প্রত্যয় আসছে না পাটুরিয়ায় গতকালও পৌঁছেনি রুস্তম

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুরেশ চন্দ্র রায়, শিবালয় (মানিকগঞ্জ) থেকে : পাটুরিয়ায় ফেরিডুবির ঘটনায় উদ্ধারকাজে অংশ নেয়ার জন্য জাহাজ প্রত্যয়ের পরিবর্তে শিমুলিয়া থেকে রুস্তম আসার কথা থাকলেও গতকাল রাত পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পৌঁছেনি রুস্তম। অনেকটা কচ্ছপ গতিতেই চলছে উদ্ধার অভিযান। ডুবে যাওয়া ফেরি থেকে সর্বশেষ ১২টি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান উদ্ধার হলেও ফেরি উদ্ধারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। কবে নাগাদ ফেরিটি উদ্ধার অভিযান শুরু হতে পারে সে বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদিক গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ফেরিডুবির ঘটনায় উদ্ধারকাজে অংশ নেয়ার জন্য উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের পরিবর্তে শিমুলিয়া থেকে রুস্তম নামের একটি জাহাজ আসবে। হামজা এবং রুস্তমের মাধ্যমে উদ্ধার অভিযান চলবে। সন্ধ্যা নাগাদ রুস্তম ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর কথা রয়েছে বলেও তিনি জানান। তবে গতকাল রাত পর্যন্ত ঘটনাস্থল পৌঁছেনি রুস্তম। এদিকে জানা গেছে, গত বুধবার ট্রিপ নিয়ে দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া গিয়ে ভাসমান কারখানা মধুমতিতে শাহ আমানতের মেরামত করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। সকালে দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়ে মাঝ নদী পার হওয়ার পর ফেরিতে পানি উঠতে শুরু করে। পরে ফেরিটি পাটুরিয়া ঘাটে দ্রুত নোঙর করা হয়। কিন্তু বয়সের ভারে জং ধরা আমানত শাহ পদ্মার এক পাশে কাত হয়ে ডুবে যায়। ফেরিডুবির ঘটনায় তিন দিন অতিবাহিত হলেও এখনো সেটি পানির নিচেই রয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে দুটি ট্রাক ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল। একমাত্র উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা দিয়ে চলছে উদ্ধার অভিযান। শুরু থেকে ডুবে যাওয়া ফেরির উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয় উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। এর সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তমের।
ডুবে যাওয়া ফেরিটিতে এখনো দুটি পণ্যবাহী ট্রাক এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল রয়েছে। এগুলোর উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত হলে ফেরি উদ্ধারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ফেরি উদ্ধারের জন্য বেসরকারি কোনো উদ্ধারকারী জাহাজের সহযোগিতা নেয়া হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান।
উল্লেখ্য, পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যাওয়া রো রো ফেরি শাহ আমানত ৩ যুগেরও বেশি সময় ধরে চলছিল। এর ছিল না কোনো ফিটনেস। বারবার ডকইয়ার্ডে নিয়ে মেরামত করা হতো আমানত শাহকে। সম্প্রতি তার তলদেশ ফুটোও হয়ে গিয়েছিল। এর পরও লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা এই ফেরি দিয়েই পদ্মায় যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা অব্যাহত ছিল।
অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অধ্যাদেশ অনুযায়ী, একটি নৌযানের নিবন্ধনের মেয়াদ ৩০ বছর হয়। বিশেষ জরিপের (ফিটনেস) মাধ্যমে এরপর দুবার পাঁচ বছর করে নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়ানো যায়। তবে ৪০ বছরের বেশি সময় পরে কোনোভাবেই কোনো নৌযান চলাচল করতে পারে না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) নৌযানের তালিকা অনুযায়ী, ফেরি আমানত শাহ ১৯৮০ সালে তৈরি। ৩৩৫ জন যাত্রী ও ২৫টি যানবাহন বহন করতে পারে এটি। ৮০৬.৬০ টন ওজনের এই ফেরিটি সর্বোচ্চ ১০.২৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়