কাগজ প্রতিবেদক : মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর বিচার শিগগিরই প্রকাশ্য আদালতে শুরুর দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। অন্যদিকে, মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ বেশকিছু অপরাধের সম্পৃক্ততা পেয়েছে সংস্থাটি। গতকাল সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থাটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার প্রধান এম সানাউল হক এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) শাহজাহান কবীরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তদন্ত সংস্থার ৭৯তম প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার ৪ আসামির মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য ৩ আসামি পলাতক আছে। তাদের বিরুদ্ধে ১১১ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদন এবং ৪টি ভলিউমে ১৭৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামি হলেন- মো. আলী আকবর। তবে পলাতক তিনজনের নাম প্রকাশ করা হয়নি। আসামি চারজনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে তদন্ত শুরু হয়ে চলতি বছরের ২৪ অক্টোবর শেষ হয়। তাদের বিরুদ্ধে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগের মোট দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে, ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ জামায়াতের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হলেও বিচার শুরু না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তদন্ত সংস্থার প্রধান সানাউল হক বলেন, সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আবেদন করব, আমরা যে পরিশ্রম করে রিপোর্টটি দিয়েছি, সেটা যথাযথ নিরীক্ষা করে অবিলম্বে বিচার শুরুর যেন পদক্ষেপ নেয়া হয়। প্রসিকিউশনকে বারবার তাগিদ দিয়েও তদন্ত প্রতিবেদনটি ট্রাইব্যুনালে উত্থাপন করা যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, অর্গানাইজেশনের শাস্তি কী হবে, এটার বিধান স্পষ্টভাবে না থাকাতে প্রসিকিউশন রিপোর্টটি চার্জ গঠনের জন্য ট্রাইব্যুনালে উত্থাপন করেননি বলে আমাদের জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, জামায়াতের বিচারটি মানবতাবিরোধী অপরাধের বা আমাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুরু করা উচিত। সংগঠনের যখন বিচার হয়, এই সংগঠনের সে সময়ে যে সমস্ত অঙ্গসংগঠন বা যে সমস্ত ব্যক্তিবর্গ জড়িত ছিলেন, তাদের সবারই বিচার হয়। তাদের সবার উপরই এই অপরাধের দায় চলে আসে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক হামলা সমূলে উৎপাটন করতে জামায়াতের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার শুরু হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।