নানা আয়োজনে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন

আগের সংবাদ

লো স্কোরিংয়ের রোমাঞ্চকর ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয়

পরের সংবাদ

সাফল্যে উজ্জ্বল দক্ষিণ কোরীয় ড্রামা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দশ বছর আগে ‘স্কুইড গেম’-এর ভাবনা মাথায় এসেছিল পরিচালক হং দুং ইয়কের। নগদ অর্থের জন্য ল্যাপটপ বিক্রি করায় মাঝপথে চিত্রনাট্য লেখা বন্ধও রাখতে হয়েছিল। পরে স্থানীয় স্টুডিওর কাছে সে গল্প পেশ করা হলে, প্রযোজক ও অভিনেতারা খুব একটা আগ্রহ পাননি। অবাস্তবতা এবং নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্লটে তারা রাজি হননি। দুবছর আগে নেটফ্লিক্স আগ্রহ দেখায় ইয়কের দক্ষিণ কোরীয় ডিসটোপিয়ান ড্রামায়। আমেরিকান স্ট্রিমিং জায়ান্টের লক্ষ্য ছিল, আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের অরিজিনাল সিরিজ একটি দৃষ্টান্ত তৈরি করুক। নেটফ্লিক্সের ল²ীর ভাঁড়ার ভরিয়ে দিয়ে একের পর এক রেকর্ড করে চলেছে দক্ষিণ কোরীয় সিরিজ ‘স্কুইড গেম’। আমেরিকাসহ নব্বইটি দেশে ইতোমধ্যে নেটফ্লিক্সে? সর্বাধিক ঘণ্টা ধরে দেখা এবং সর্বাধিক সাবস্ক্রাইবারের নিরিখে নজির গড়েছে সিরিজটি। গত বছর ‘প্যারাসাইট’ ছবির সুবাদে প্রথম বার ইংরেজি ভাষা বহির্ভূত সেরা ছবির অস্কার ছিনিয়ে নিয়েছিলেন পরিচালক বং জুন হো। সমালোচকদের মতে, ‘স্কুইড গেম’ দিয়ে ওটিটি সাম্রাজ্যেও নিজেদের আসন পোক্ত করল দক্ষিণ কোরিয়া। বিষয়গত দিক থেকে ‘প্যারাসাইট’ এবং ‘স্কুইড গেম’-এর মিল রয়েছে। তবে এই সাদৃশ্য নেহাত কাকতালীয় নয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে যে পাহাড়সমান অর্থনৈতিক বৈষম্য, সেই জ্বলন্ত বাস্তব বারবার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে পরিচালকদের। পাশাপাশি পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকেও নিশানা করেছে সিরিজটি। তবে এই সোশ্যাল স্যাটায়ারের কেন্দ্রে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার শিশুদের কয়েকটি খেলা। ঋণে জর্জরিত বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বিরাট অঙ্কের অর্থ-পুরস্কার জেতার লোভে অংশ নেয় একটি রহস্যজনক খেলায়, যেখানে প্রতি পদে মৃত্যুর হাতছানি। খেলাগুলোর কয়েকটি বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের দেশেই ছোটবেলায় খেলা হয়। তাই এই শো যতটা দক্ষিণ কোরীয়, ততটাই বিশ্বজনীন। ‘স্কুইড গেম’-এর সাফল্যের পিছনে রাজনৈতিক সমীকরণও স্পষ্ট। ২০১৫ সাল থেকে দক্ষিণ কোরীয় ড্রামা ও টেলিভিশন শোয়ের জন্য বিশাল অঙ্কের বাজেট বরাদ্দ করেছে নেটফ্লিক্স। দক্ষিণ কোরীয় পপ ব্যান্ড বিটিএসের নজরকাড়া আবেদন রয়েছে ভারতসহ একাধিক দেশের স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে। ‘প্যারাসাইট’, ‘মিনারি’-এর মতো ছবি বিশ্বমঞ্চে সম্মানিত। তাই দক্ষিণ কোরীয় কনটেন্টের উপরে বাজি ধরা আমেরিকার কাছে এখন অনেকটাই গুরুত্ব রাখে। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও উঠে আসছে এই শোয়ের প্যারোডি। ভারতীয় মিমের বাজারও এখন স্কুইড জ্বরে আক্রান্ত। আবার এই সুযোগে দক্ষিণ কোরিয়ার পুঁজিবাদকে কটাক্ষ করে ‘স্কুইড গেম’-এর সাফল্যকে খাটো করে দেখাতে চাইছে উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো। প্রসঙ্গত, শোয়ের একটি চরিত্রের শিকড় উত্তর কোরিয়া কি না, তা নিয়ে শো জুড়ে চলেছে জল্পনা। সিরিজের নজরকাড়া সাফল্যের সঙ্গে বিতর্কও হচ্ছে। বিশেষত, সিরিজটির ভায়োলেন্স অপরিণত মনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। শোয়ে দেখানো খেলা যাতে ছোটরা অনুসরণ না করে, তার জন্য সিডনি, কাতারসহ অনেক দেশে অভিভাবকদের সতর্ক করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। শোয়ের ভারতীয় যোগও রয়েছে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত দক্ষিণ কোরীয় অভিনেতা অনুপম ত্রিপাঠী সিরিড়ের একটি স্তম্ভ চরিত্র। সব মিলিয়ে, সার্ভাইভালো ড্রামা জঁরে দক্ষিণ কোরিয়া এখন অগ্রণী ভূমিকায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়